মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :
মুন্সীগঞ্জের টংগিবাড়ীতে অটোরিকশা চালক মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন শেখকে হত্যার মামলায় দুই আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা দণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক খালেদা ইয়াসমিন উর্মি আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় দেন।
মামলার অপর দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাস দেন আদালত।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- টংগিবাড়ী উপজেলার সোনারং গ্রামের সাঈদ শেখের ছেলে ইলিয়াস হোসেন ও তার বড় চাচার শ্যালক লৌইজং উপজেলার পয়সা গ্রামের মীর হোসেনের ছেলে রকিবুল ইসলাম।
মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, ২০২০ সালের ২৪ মে শাহাবুদ্দিন প্রতিদিনের মতো সকালে অটোরিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। যথারীতি সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে আসার কথা থাকলেও বাড়ি না ফেরায় অনেক খোঁজাখুঁজি করেন পরিবারের লোকজন। খোঁজ না পেয়ে তার বাবা আবুল শেখ ২৫ মে টংগিবাড়ী থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। পরবর্তীতে ২৭ মে তার কাছে খবর আসে একই উপজেলার আড়িয়ল ইউনিয়নের কুড়মিরা গ্রামের একটি জঙ্গলে একটি মরদেহ পড়ে আছে।
পরে তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে চারজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তাররা হলেন- টংগিবাড়ী উপজেলার সোনারং গ্রামের সাঈদ শেখের ছেলে ইলিয়াস হোসেন, লৌইজং উপজেলার পয়সা গ্রামের মীর হোসেনের ছেলে রকিবুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ জেলার আলীগঞ্জ এলাকার মতিন শেখের ছেলে কবির হোসেন ও মুন্সীগঞ্জ সদরের মুক্তারপুর এলাকার ইব্রাহিম মাদবরের ছেলে রাকিব মাদবর। এদের মধ্যে কবির হোসেন ও রাকিব মাদবরকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌশলী অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম পল্টু। এ ব্যাপারে মামলার বাদী নিহতের বাবা সাহাবুদ্দিন শেখ বলেন, আমি রিক্সা চালিয়ে সংসার চালাই। আমার ৪ ছেলেমেয়ের মধ্যে সাহাবুদ্দিন তৃতীয় ছেলে ছিলো। এই ছেলেটাই আমাকে আয় রোজগার করে দিতো। আমার সেই ছেলেটারে ওরা মেরে ফেললো। আদালত যে রায় দিয়েছে আমি তাতে খুশি। রায় দ্রুত দেখে যেতে চাই।
নিহতের মা শাহানাজ বেগম বলেন, আমার ছেলেটাকে ওরা মেরে ফেললো। কি দোষ করেছিল আমার ছেলেটা। আমার ছেলেটাকে ওরা খুব কষ্ট দিয়ে মারছে। আমি ওদের ফাঁসি দ্রুত দেখে যেতে চাই।
এ ব্যাপারে রাষ্টপক্ষের অতিরিক্ত কৌশলী সিরাজুল ইসলাম পল্টু বলেন, এই মামলায় মোট ১৮ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত ২ জনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন। রায়ে আমরা রাষ্ট্রপক্ষ থেকে সন্তুষ্টি প্রকাশ করছি।