নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, ‘গণতন্ত্রের পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যাতে মুখ দেখাদেখি বন্ধ না হয়। সেই লক্ষ্যে জাতীয় স্বার্থে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকা প্রয়োজন প্রয়োজন এবং প্রয়োজন। কারণ আমি বিশ্বাস করি, ধর্ম-দর্শন-মত যার যার, রাষ্ট্র আমাদের সবার।
বুধবার (৬ আগস্ট) বিকেলে ‘আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ও ছাত্র-জনতার বিজয়ের বর্ষপূর্তি’ উপলক্ষে বিএনপি আয়োজিত বিজয় র্যালিপূর্ব সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন।
তারেক রহমান বলেন, রাজনৈতিক দলের সদস্যদের বলতে চাই- বিভিন্ন ইস্যুতে মতভেদ থাকবে। এসব মতভেদ দূর করতে আমাদের আলোচনা চলবে। জাতীয় কোনো ইস্যুতে, গণতন্ত্রের প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যেন মুখ দেখাদেখি বন্ধ না হয়, সেই লক্ষ্যে জাতীয় স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকা প্রয়োজন। কারণ, আমি বিশ্বাস করি ধর্ম, দর্শন, মত যার যার, রাষ্ট্র আমাদের সবার।
এসময় দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করতে সবার সহযোগিতা ও সমর্থন চান তিনি।
তারেক রহমান বলেন, ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত, জনগণের কাছে দায়বদ্ধ ও জবাবদিহিমূলক একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গতকাল জাতীয় নির্বাচনের একটি সময়সীমা ঘোষণা করেছে। জনগণের অভিপ্রায় বাস্তবায়নের প্রয়াসেই পাঠ করা হয়েছে জুলাই ঘোষণাপত্র। এইসব উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই।
তারেক বলেন, মানুষের গণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার যাত্রাপথে আমরা এখন ইতিহাসের এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের জন্য দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণকে দীর্ঘ দেড় দশকেরও বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বিএনপির নেতৃত্বে গণতন্ত্রের অভিযাত্রায় বিজয়ের শুরুতে আমি স্বাধীনতাপ্রিয় ও গণতন্ত্রপ্রিয় দেশবাসীর উদ্দেশে আহ্বান জানিয়ে বলতে চাই—তিনি যে দলেরই সদস্য হোন না কেন, আমাদের সবার মনে রাখা জরুরি: ফ্যাসিবাদী শাসনামলে কেউই নিরাপদ ছিল না। আমার সন্তান যেমন নিরাপদ ছিল না, আপনারাও নন। আমাদের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। পুরো বাংলাদেশকে বর্বর বন্দিশালা বানানো হয়েছিল। গণতন্ত্র এবং আইনের শাসন না থাকায় এমন হয়েছিল।
গণতন্ত্র ও দেশের জনগণের সামনে ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার এক অপার সম্ভাবনা এবং সুযোগ এসেছে উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, চব্বিশের আন্দোলনের কারণে আসা সুযোগকে কাজে লাগিয়ে রাজনৈতিক শক্তি প্রতিষ্ঠা করা গেলে; জনগণের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষমতা নিশ্চিত করতে পারলে, ভবিষ্যতে আর কেউ ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠার সুযোগ পাবে না। দেশকে তাবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করতে পারবে না। আর কোনো রক্তাক্ত চব্বিশ আমাদের দেখতে হবে না।
৫ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’কে স্বাগত জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত, জনগণের কাছে দায়বদ্ধ ও জবাবদিহিমূলক একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকার ৫ আগস্ট জাতীয় নির্বাচনের একটি সময়সীমা ঘোষণা করেছে। জনগণের অভিপ্রায় বাস্তবায়নের প্রয়াসেই পাঠ করা হয়েছে জুলাই ঘোষণাপত্র। এই উদ্যোগকে বিএনপি স্বাগত জানিয়েছে।
তিনি বলেন, জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করা গেলে ফ্যাসিবাদ ফিরবে না। দেশে আইনের শাসন ও গণতন্ত্র না থাকলে কেউ নিরাপদ নয়। বিভিন্ন মতভেদ থাকবে, তবে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যেন মুখ দেখাদেখি বন্ধ না হয়। জাতীয় স্বার্থে সব দলের ঐক্যবদ্ধ থাকা জরুরি।
মানুষের গণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার যাত্রাপথে এখন সবাই ইতিহাসের এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের জন্য দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণকে দীর্ঘ দেড় দশকেরও বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে।
বিএনপির নেতৃত্বে গণতন্ত্রের অভিযাত্রায় বিজয়ের শুরুতে তিনি স্বাধীনতাপ্রিয় ও গণতন্ত্রপ্রিয় দেশবাসীর উদ্দেশে আহ্বান জানিয়ে বলেন, যে কেউ যে দলেরই সদস্য হোন না কেন, আমাদের সবার মনে রাখা জরুরি, ফ্যাসিবাদী শাসনামলে কেউই নিরাপদ ছিল না। আমার সন্তান যেমন নিরাপদ ছিল না, আপনারাও নন। আমাদের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল।
বিজয় মিছিল আয়োজন নিয়ে তারেক রহমান বলেন, পতিত ও পলাতক ফ্যাসিস্টের আমলে অন্ধকারের রাজত্ব কায়েম হয়েছিল। আজকের বিজয় মিছিল অন্ধকার থেকে বেরিয়ে আলোর পথে যাত্রা।
মহানগরের পাশাপাশি কর্মসূচিতে ঢাকার আশপাশের জেলা থেকেও নেতাকর্মীরা যোগ দিয়েছেন। এতে বিএনপি ছাড়াও যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদলসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও মিছিল নিয়ে যোগ দেন। বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীর কারণে আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
বিজয় র্যালিটি নয়াপল্টন থেকে শুরু হয়ে বিজয়নগর, পুরানা পল্টন মোড়, জাতীয় প্রেসক্লাব, মৎস্য ভবন হয়ে শাহবাগ মোড়ে গিয়ে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
র্যালিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, সালাহউদ্দিন আহমদ ছাড়াও শীর্ষ নেতৃবৃন্দ, ঢাকা মহানগর উত্তর দক্ষিণসহ অঙ্গ সংগঠন শীর্ষ নেতারা অংশ নেন।