নিজস্ব প্রতিবেদক :
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ ও ধর্মের কার্ড খেলে আর রাজনীতি চলবে না। আগামীর রাজনীতি হবে সংস্কারের। আগামী নির্বাচনে শক্ত লড়াই হবে। কোনও দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজদের ঠাঁই হবে না। এনসিপির তরুণদের হাত ধরে ব্যালট বিপ্লব হবে।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) বিকালে রাজধানীর শাহবাগে আবু সাইদ কনভেনশন সেন্টারে এনসিপির যুব উইং জাতীয় যুবশক্তির জাতীয় প্রতিনিধি সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ধর্মের নামে চেতনার ব্যবসা করছে জামায়াতে ইসলামী। তারা অতীতে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করেছিল। আর এখন তাদের পাকনা গজিয়েছ। জনগণকে বিভ্রান্ত করতে চায় তারা। তাদের এ ধরনের ভণ্ডামি বন্ধ করতে হবে।
পাটওয়ারী অভিযোগ করেন, জামায়াত নেতারা খুব মিষ্টি মিষ্টি কথা বলেন। তবে এর আড়ালে কী আছে সেটা তো আল্লাহ জানে। রাজনীতি করতে চাইলে সোজা পথে হাঁটতে হবে।
জাতীয় সরকার গঠন করতে পারলে চ্যাম্পিয়ন দুর্নীতিবাজের পাল্লায় পড়তে হতো না উল্লেখ করে এই নেতা বলেন, ‘জামায়াত মুখে মুখে বিপ্লবের কথা বলে, অন্তরে তাদের অন্য কিছু। বিএনপির ব্যর্থতা হাসিনার রেজিম তৈরি হতে সহযোগিতা করেছিল। এখন নতুন একটি দল মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিক্রি করতে শুরু করেছে। অথচ তাদের মুখে মুক্তিযুদ্ধের মূল ভিত্তি সাম্যের কথা শুনি না।’
এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘আরেকটি দল ধর্মের নামে রাজনীতি করতে চাইছে। ডাকসুর নেতা নির্বাচিত হয়ে জামায়াতের পক্ষে ভোট চেয়ে বেড়াচ্ছে। আমরা যদি ক্ষমতায় আসি চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড যারা করেছে, তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে।’
জামায়াত মুখে মুখে বিপ্লবী বলে, অন্তরে আওয়ামী লীগ ধারণ করে উল্লেখ করে পাটওয়ারী বলেন, ‘ডাকসু নির্বাচনের পর তাদের মুখোশ খুলে গেছে। ২০০১-০৬ এর শাসনামলের ব্যর্থতার জন্য বিএনপি দায়ী।’
নাসীরুদ্দীন বলেন, ‘একদল লন্ডন থেকে ভয় দেখায়। অনলাইনে ভয় দেখিয়ে যুবশক্তিকে দমানো যাবে না। আরেকদল ইসলামের নামে রাজনীতি করছে। ধর্ম ব্যবসা করে জনগণকে বিভ্রান্ত করার পাঁয়তারা করছে জামায়াত। জামায়াতের ভণ্ডামি বন্ধ করতে হবে।’
নাসীরুদ্দীন বলেন, সময় আছে, সুযোগ আছে একটি সাম্য, মানবিক মর্যাদা এবং ন্যায় বিচারের রাষ্ট্রের স্বপ্নে দিকে আগ্রহী হন। কিন্তু আমাদের কথা তাদের কানে যায়নি। মনে রাখতে হবে ৩০০ আসনে গডফাদার দিয়ে শেখ হাসিনা নিস্তার পায়নি।’
তিনি বলেন, ৫ আগস্ট পরবর্তী ক্যান্টনমেন্ট বৈঠকে দুর্নীতির মাস্টারমাইন্ডের মাথায় আওয়ামী বুদ্ধিপনা মাথায় চড়ে বসে। তখন বিএনপি ও জামায়াত ক্যান্টনমেন্টে ছিল। জামায়াতের অন্তরে আওয়ামী প্রেম জেগে ওঠে। তাই তারা বিপ্লবী সরকার গঠন করতে দেয়নি। অথচ একটি বিপ্লবী সরকার গঠন করতে পারলে বর্তমানে দেশের এ পরিস্থিতি হতো না।
তিনি অভিযোগ করেন, তিনি অভিযোগ করেন, লন্ডন থেকে এনসিপিকে নানা ভয় দেখানো হয়েছে। আমরা তো বাস্তবেই কাউকে ভয় পাই না, তারা আবার অনলাইনে ভয় দেখায়।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ব্যবসা করেছিল। এখন একটি দল নতুন করে চেতনার ব্যবসা হাজির করছে আমাদের সামনে। বাংলাদেশে চেতনার রাজনীতি আর চলবে না।
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের আমলে ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত তাদের ব্যর্থতার কারণেই এক এগারোর একটি সরকার বাংলাদেশে এসেছিল। সেই সরকারের মধ্য দিয়ে বিগত ১৫ বছর বাংলাদেশে এমন কোনও তরুণ ছিল না, যাদের ওপর জেল-জুলুম নির্যাতন নেমে আসেনি। গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনার এই দীর্ঘ শাসনের জন্যও বিএনপি অনেকাংশে দায়ী। কারণ তখন প্রতিটি সেক্টরেই দুর্নীতি ছিল। বিএনপির মতো জামায়াতও এর সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। আর এখন নতুন করে প্ল্যাটফর্ম লাগিয়েছেন তুমি ইসলাম নিয়ে অর্ধেক, আর আমি অর্ধেক। আগে হলো এক প্লেটে বসে খেতো, এখন প্লেট ভাগ হয়েছে, কিন্তু এক পাতিলের তরকারি।
তিনি জানান, আগামী দুই একদিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করবে এনসিপি।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী আরও বলেন, আমরা ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করতে চাই না। জুলাইয়ের সৈনিকরা শাপলকলি নিয়ে দাপিয়ে বেড়াবে। এই নির্বাচনে শাপলাকলি ফোটাতে হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় যুবশক্তির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তারিকুল ইসলাম।
নিজস্ব প্রতিবেদক 
























