নিজস্ব প্রতিবেদক :
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, বিএনপি মহাসচিব আজ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি জনসভা অথবা সংবাদ সম্মেলনে একের পর এক মিথ্যার রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করেছেন। আমার কাছে তো মনে হয় যে, এই মির্জা আলমগীর আর মির্জা আলমগীর নেই; মিথ্যা আলমগীর হয়ে গেছেন।
বুধবার (১৯ জুলাই) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ছাত্রলীগ আয়োজিত বিএনপি কর্তৃক সরকারি বাঙলা কলেজের শিক্ষার্থী ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওপর হামলার প্রতিবাদে ‘ছাত্রসমাজের প্রতিবাদ’ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
সাদ্দাম হোসেন বলেন, আজকে উন্নয়ন যখন আমাদের সুপ্রতিষ্ঠিত একটি বিষয়। শেখ হাসিনা আমাদের এগিয়ে নিয়ে গেছেন, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি করেছেন, আমাদের বাজেট বৃদ্ধি করেছেন, বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেছেন, জীবন বদলে দিয়েছেন; এগুলো তো পরিসংখ্যান দিয়ে প্রমাণিত। কিন্তু আপসোসের বিষয় বিএনপি তখন সন্ত্রাসীমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত।
লন্ডনে থাকা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে সাহস থাকলে বাংলাদেশে এসে রাজনীতি করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে কোনো গণতান্ত্রিক আন্দোলন কি সফল হয়েছে, যেই আন্দোলনের নেতা বিদেশে পালিয়ে গিয়ে বিলাসী জীবন যাপন করছেন আর কর্মীদের রাজপথে থাকার আহ্বান জানাচ্ছেন! আমরা বলি—দেখা না দিলে বন্ধু কথা কইয়ো না।
সাদ্দাম হোসেন বলেন, রাজনৈতিক নেতৃত্ব মানে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়া। নেতৃত্ব মানে ঝুঁকি নিতে হবে, কর্মীদের সঙ্গে থাকতে হবে। রাজপথে লড়াই সংগ্রাম করতে হবে। কিন্তু আজকে তিনি শুধু ভিডিও কনফারেন্সেই বড় বড় কথা বলছেন। সাহস থাকলে বাংলাদেশে এসে রাজনীতি করুন। দেশের আইন-আদালতের মুখোমুখি হোন। কিন্তু তার তো বাংলাদেশে আসার হিম্মত নেই। আপনি দেশে আসবেন না আর বাইরে থেকে ভিডিও কনফারেন্সে নেতা-কর্মীদের নির্দেশনা দেবেন—এই ধরনের কাপুরুষোচিত আচরণ মনে হয় না কেউ মেনে নেবে।
ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, তারেক রহমান একজন খুনি। বাংলাদেশের একটি রাজনৈতিক দলের প্রধান হিসেবে এমন একজনকে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে যিনি একজন প্রমাণিত সন্ত্রাসী। তিনি একজন প্রমাণিত খুনি। এটি রাজনৈতিক কোনো বক্তব্য নয়, প্রতিষ্ঠিত সত্য। এই খুনি বাইরের প্রেসক্রিপশন এই দেশে বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করছে।
সাদ্দাম বলেন, কেয়ারটেকার গভর্নমেন্টের (তত্ত্বাবধায়ক সরকার) নামে আবারও যারা কেয়ার পাকিস্তান গভর্নমেন্ট নিয়ে আসতে চায় তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের ছাত্রসমাজকে সোচ্চার থাকতে হবে। নির্বাচিত সরকারের অধীনেই নির্বাচন পরিচালিত হবে। এটি আমাদের আত্মমর্যাদার বিষয়।
গত মঙ্গলবার মিরপুরের সরকারি বাংলা কলেজসহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হামলার সঙ্গে যুক্তদের আইনের আওতায় আনতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বান জানান সাদ্দাম।
তিনি বলেন, আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বান জানাই, যারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনিরাপদ করে তুলছে, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালাচ্ছে; যারা এই হুকুমের আসামি তাদের গ্রেফতার করুন। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা, শিক্ষার্থীদের জীবনের নিশ্চয়তা এবং ক্যাম্পাসগুলোতে সুন্দর ও সুশৃঙ্খল শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করুন।ছাত্রলীগের পক্ষ থেকেও আমরা সোচ্চার রয়েছি।
সাদ্দাম আরও বলেন, ‘ছাত্রদের আমরা লেখাপড়া করার পরিবেশ এবং সুন্দর অ্যাকাডেমিক ক্যারিয়ারের নিশ্চয়তা দিচ্ছি। সন্ত্রাসীরা যদি আক্রমণ করতে আসে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা বুক পেতে দেবে যেন শিক্ষার্থীরা নির্বিঘ্নে ক্লাস করতে পারে।
বিএনপির উদ্দেশে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, আমরা স্পষ্টভাবে বলে দিতে চাই, আপনারা আজকে পায়ে পাড়া দিয়ে ঝগড়া বাধাতে চাচ্ছেন। আমরা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আপনাদের খেলা দেখছি আর মজা নিচ্ছি। আমরা দেখতে চাই কতদূর আপনারা খেলতে পারেন; তারপর বোঝাব, কত ধানে কত চাল। আপনাদের শুধু মনে করিয়ে দিতে চাই এই বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সামরিক স্বৈরশাসকের ফুর্তি থেকে জন্ম নেওয়া ছাত্র সংগঠন নয়। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ স্বৈরশাসকের দেয়ালকে ভেদ করে আসা ছাত্র সংগঠন।
বিক্ষোভ সমাবেশে সাদ্দাম হোসেনের সভাপতিত্বে ও ওয়ালি আসিফ ইনানের সঞ্চালনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন, সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বক্তব্য রাখেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ, ঢাকা কলেজ, বাঙলা কলেজসহ রাজধানীর বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।