কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি :
সেন্টমার্টিন দ্বীপের দক্ষিণ পশ্চিমের মৌলভীর শিল নামের বঙ্গোপসাগরের মোহনায় বাংলাদেশি মাছ ধরার ট্রলারকে লক্ষ্য করে মিয়ানমার থেকে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ওসমান নামে এক জেলে নিহত হয়েছেন এবং গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন আরও তিনজন।
বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) বঙ্গোপসাগরে সেন্টমার্টিন দ্বীপের কাছে এ ঘটনা ঘটে।
এসময় ৬০ মাঝি-মাল্লাসহ ৪ ট্রলার অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। তবে তাদেরকে ছেড়ে দিয়েছে বলে জানিয়েছে ট্রলার মালিকেরা।
নিহত জেলে টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপের কোনারপাড়া এলাকার বাচ্চু মিয়ার ছেলে। তিনি শাহপরীর দ্বীপের বাজারপাড়া এলাকার সাইফুল কোম্পানির মালিকানাধীন ট্রলারের জেলে।
অপহরণ করা চারটি ট্রলারের মালিকরা হলেন- শাহপরীর দ্বীপের মিস্ত্রীপাড়ার মুসলিম মিয়ার ছেলে মতিউর রহমান, মৃত আলী হোছনের ছেলে আবদুল্লাহ, তার ভাই আতাউল্লাহ এবং উত্তরপাড়ার ছৈয়দ মাঝির ছেলে মো. আছেম। ট্রলারগুলোয় ৬০ জন মাঝিমাল্লা রয়েছেন।
ট্রলার মালিকরা জানিয়েছেন, বুধবার দুপুরে সেন্টমার্টিন দ্বীপের দক্ষিণ পশ্চিমের মৌলভীর শিল নামের মোহনায় এই ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত জেলে মো. ওসমান শাহপরীর দ্বীপের কোনারপাড়া এলাকার বাচু মিয়ার ছেলে। তিনি শাহপরীর দ্বীপের বাজারপাড়া এলাকার সাইফুল কোম্পানির মালিকানাধীন ট্রলারের জেলে। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত ৩ জেলেও ওই ট্রলারের। তবে তাদের নাম ঠিকানা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ট্রলার মালিক সাইফুল বলেন, আমার মালিকানাধীন ফিশিং ট্রলারে হঠাৎ করে মিয়ানমারের নৌ বাহিনীর সদস্যরা গুলিবর্ষণ করে। এসময় ৪ জন গুলিবিদ্ধ হয়। তার মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়। পরে পাশে থাকা ৫টি ট্রলারসহ মাঝি-মাল্লাদের ধরে মিয়ানমারে নিয়ে যায়। সেখানে ৬০ জন ছিল। পরে ২ ঘণ্টা পর মিয়ানমারের নৌ বাহিনী ছেড়ে দেন। ট্রলার নিহত ও গুলিবিদ্ধের নিয়ে টেকনাফ উপকূলের দিকে রওনা দিয়েছে।
ট্রলার মালিক মতিউর রহমান জানান, ধরে নিয়ে যাওয়া ট্রলার ও মাঝি মাল্লাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। নিহতকে নিয়ে ট্রলারটি ঘাটে পৌঁছলে বিস্তারিত জানা যাবে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আদনান চৌধুরী বলেন, মিয়ানমারের নৌ বাহিনীরা ধরে নিয়ে যাওয়া মাঝি-মাল্লাদের ছেড়ে দিয়েছে। তারা টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপের উদ্দেশ্যে রওনা করেছে। তারা কূলে এলে বিস্তারিত জানতে পারব।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোস্টগার্ডের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন বিজিবির টেকনাফস্থ ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ।
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কোস্টগার্ডের শাহপরীর দ্বীপের দায়িত্বরত এক কর্মকর্তা বলেন, ‘গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন মারা গেছেন। তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। ট্রলারটি ঘাটে আসার অপেক্ষায় আছি। ঘাটে আসার পর বিস্তারিত জানা যাবে।’
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী জানিয়েছেন, বিষয়টি নানাভাবে শোনা যাচ্ছে। এ ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চলছে।
কোস্টগার্ডের শাহপরীর দ্বীপের দায়িত্বরত এক কর্মকর্তা (নাম প্রকাশ না করে) বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন মারা গেছেন। তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। ট্রলারটি ঘাটে আসার অপেক্ষায় আছি। ঘাটে আসার পর জানা যাবে। একই সঙ্গে অপর চারটি ট্রলারও ছেড়ে দিয়েছে বলেও শোনা যাচ্ছে। বিস্তারিত পরে জানা যাবে।