Dhaka বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মিয়ানমারে ভয়াবহ বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৮৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

মিয়ানমারে টাইফুন ইয়াগি পরবর্তী বন্যায় মিয়ানমারে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৮৪ জনে দাঁড়িয়েছে। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন অন্তত ৮৯ জন।

শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দেশটির জান্তা সরকার এ তথ্য জানিয়েছে।

এ বছর এশিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী দুর্যোগ মনে করা হচ্ছে টাইফুন ইয়াগিকে। চলতি মাসের শুরুর দিকে ভিয়েতনাম, লাওস, চীন, ও ফিলিপাইনের পর মিয়ানমারে ধ্বংসযজ্ঞ চালায় এই টাইফুন। এর প্রভাবে টানা বৃষ্টিপাতে দেখা দেয় বন্যা ও ভূমিধস।

মিয়ানমারের রাজ্য প্রশাসনিক কাউন্সিলের তথ্য দল এক প্রতিবেদনে বলেছে, বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনায় গতকাল শনিবার পর্যন্ত নে পাই তাও ইউনিয়ন টেরিটরিতে ১৬৪ জন, মান্দালয় অঞ্চলে ১৩৪ জন, শান রাজ্যে ৭৮ জন, কায়িন রাজ্যে পাঁচজন, বাগো অঞ্চলে দুজন এবং আইয়ারওয়াদি অঞ্চলে একজনের প্রাণহানি হয়েছে।

বন্যা নয়টি অঞ্চল এবং রাজ্য জুড়ে কয়েক ডজন জনপদকে প্রভাবিত করেছে, দেশের প্রায় ১৬ শতাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ভয়াবহ এই বন্যায় ২ হাজার ১৪৯টি ভবন সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে, ৩ হাজার ৪৫৫টি ভবন আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ৫৪৬টি বিদ্যালয় নিমজ্জিত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও ৫৩৩টি রাস্তা ও সেতু, ২ হাজার ৪৮৯টি বিদ্যুতের খুঁটি এবং ৯৯টি যোগাযোগ টাওয়ার ধ্বংস হয়েছে।

বন্যায় ১ লাখ ৪৮ হাজার ৬৪৩ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ৭ লাখ ৩৫ হাজার ৪৬১ একর ধানক্ষেত ধ্বংস ও ১ লাখ ৪৪ হাজর ৯৯৮টি গবাদিপশুর মৃত্যু হয়েছে বলে প্রতিবেদনে যোগ করা হয়েছে।

সামরিক অভ্যুত্থানের কারণে আগে থেকে নানা সমস্যায় ধুঁকতে থাকা মিয়ানমারের দুর্দশা আরও বাড়িয়েছে বন্যা। টাইফুন ইয়াগি এবং বঙ্গোপসাগরে একটি গভীর নিম্নচাপের কারণে গত ৯ সেপ্টেম্বর থেকে উদ্ভূত বন্যাটি মিয়ানমারে গত ৫০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বিধ্বংসী বন্যা।

স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, উদ্ধারকারী সংস্থা এবং বাসিন্দারা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিষ্কার করতে, স্বাস্থ্যসেবা প্রদান এবং ক্ষতিগ্রস্তদের খাদ্য ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বিতরণের জন্য একসঙ্গে কাজ করছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা সংঘাতে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশটিতে লাখ লাখ মানুষ আগেই বাস্তুচ্যুত হয়েছিল। তার ওপর সাম্প্রতিক দুর্যোগে মিয়ানমারবাসীর দুর্দশা আরও বেড়েছে।

পরিস্থিতি মোকাবিলায় গত সপ্তাহে বিদেশি সহায়তার জন্য একটি বিরল আবেদন জারি করেছে দেশটির সামরিক জান্তা।

জাতিসংঘ বলেছে, টাইফুন ইয়াগির প্রেক্ষিতে মিয়ানমারে অন্তত ৮ লাখ ৮৭ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিয়ানমারে ভয়াবহ বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৮৪

প্রকাশের সময় : ০৯:৫৭:৪৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

মিয়ানমারে টাইফুন ইয়াগি পরবর্তী বন্যায় মিয়ানমারে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৮৪ জনে দাঁড়িয়েছে। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন অন্তত ৮৯ জন।

শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দেশটির জান্তা সরকার এ তথ্য জানিয়েছে।

এ বছর এশিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী দুর্যোগ মনে করা হচ্ছে টাইফুন ইয়াগিকে। চলতি মাসের শুরুর দিকে ভিয়েতনাম, লাওস, চীন, ও ফিলিপাইনের পর মিয়ানমারে ধ্বংসযজ্ঞ চালায় এই টাইফুন। এর প্রভাবে টানা বৃষ্টিপাতে দেখা দেয় বন্যা ও ভূমিধস।

মিয়ানমারের রাজ্য প্রশাসনিক কাউন্সিলের তথ্য দল এক প্রতিবেদনে বলেছে, বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনায় গতকাল শনিবার পর্যন্ত নে পাই তাও ইউনিয়ন টেরিটরিতে ১৬৪ জন, মান্দালয় অঞ্চলে ১৩৪ জন, শান রাজ্যে ৭৮ জন, কায়িন রাজ্যে পাঁচজন, বাগো অঞ্চলে দুজন এবং আইয়ারওয়াদি অঞ্চলে একজনের প্রাণহানি হয়েছে।

বন্যা নয়টি অঞ্চল এবং রাজ্য জুড়ে কয়েক ডজন জনপদকে প্রভাবিত করেছে, দেশের প্রায় ১৬ শতাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ভয়াবহ এই বন্যায় ২ হাজার ১৪৯টি ভবন সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে, ৩ হাজার ৪৫৫টি ভবন আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ৫৪৬টি বিদ্যালয় নিমজ্জিত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও ৫৩৩টি রাস্তা ও সেতু, ২ হাজার ৪৮৯টি বিদ্যুতের খুঁটি এবং ৯৯টি যোগাযোগ টাওয়ার ধ্বংস হয়েছে।

বন্যায় ১ লাখ ৪৮ হাজার ৬৪৩ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ৭ লাখ ৩৫ হাজার ৪৬১ একর ধানক্ষেত ধ্বংস ও ১ লাখ ৪৪ হাজর ৯৯৮টি গবাদিপশুর মৃত্যু হয়েছে বলে প্রতিবেদনে যোগ করা হয়েছে।

সামরিক অভ্যুত্থানের কারণে আগে থেকে নানা সমস্যায় ধুঁকতে থাকা মিয়ানমারের দুর্দশা আরও বাড়িয়েছে বন্যা। টাইফুন ইয়াগি এবং বঙ্গোপসাগরে একটি গভীর নিম্নচাপের কারণে গত ৯ সেপ্টেম্বর থেকে উদ্ভূত বন্যাটি মিয়ানমারে গত ৫০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বিধ্বংসী বন্যা।

স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, উদ্ধারকারী সংস্থা এবং বাসিন্দারা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিষ্কার করতে, স্বাস্থ্যসেবা প্রদান এবং ক্ষতিগ্রস্তদের খাদ্য ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বিতরণের জন্য একসঙ্গে কাজ করছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা সংঘাতে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশটিতে লাখ লাখ মানুষ আগেই বাস্তুচ্যুত হয়েছিল। তার ওপর সাম্প্রতিক দুর্যোগে মিয়ানমারবাসীর দুর্দশা আরও বেড়েছে।

পরিস্থিতি মোকাবিলায় গত সপ্তাহে বিদেশি সহায়তার জন্য একটি বিরল আবেদন জারি করেছে দেশটির সামরিক জান্তা।

জাতিসংঘ বলেছে, টাইফুন ইয়াগির প্রেক্ষিতে মিয়ানমারে অন্তত ৮ লাখ ৮৭ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।