নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সামনে লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ (৩৯) নামের এক ব্যবসায়ীকে এলোপাতাড়িভাবে আঘাত করে ও কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় অস্ত্রসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এদের একজনের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি বিদেশি পিস্তল।
বুধবার (৯ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টার দিকে মিটফোর্ড হাসপাতালের ৩ নম্বর গেটসংলগ্ন পাকা রাস্তায় সোহাগকে একদল দুর্বৃত্ত প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করে। হত্যার পর নিথর দেহটি টেনেহিঁচড়ে কম্পাউন্ডের বাইরের সড়কে এনে শত শত মানুষের সামনেই চলে হামলাকারীদের উন্মাদনা।
ঘটনার সময় অদূরেই হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা চলছিল এবং নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল আনসার ক্যাম্পের সদস্যরা। তবে আতঙ্কে কেউই এগিয়ে আসেননি। পরে সোহাগকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা জানান, তিনি আগেই মারা গেছেন।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘটনাস্থলের একটি সিসিটিভি ফুটেজ ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে দেখা যায়, মিডফোর্ডের ৩ নম্বর ফটকের ভেতর থেকে প্রায় বস্ত্রহীন ও রক্তাক্ত এক যুবককে টেনেহিঁচড়ে বের করে আনছেন দুই যুবক। কালো প্যান্ট পরা খালি গায়ের এক তরুণ তাঁর গালে চড় মারছে। কালো গেঞ্জি পরা আরেকজন এসে ওই ব্যক্তির বুকের ওপর লাফাচ্ছে। কিছুক্ষণ পর আরেকজন এসে একই কাজ করছে। আরেকজন এসে তাঁর মাথায় লাথি মারে। এক পর্যায়ে বড় পাথর দিয়ে বারবার তাঁর মাথায় আঘাত করা হয়।
শুক্রবার (১১ জুলাই) ঢাকামেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মুখপাত্র মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ঘটনার বিস্তারিত জানান।
তিনি বলেন, খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানা-পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং মরদেহের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।
নিহতের বড় বোন বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার পর তদন্তে নেমে পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এজাহারভুক্ত দুই আসামি মাহমুদুল হাসান মহিন (৪১) ও তারেক রহমান রবিনকে (২২) গ্রেপ্তার করে। রবিনের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে হত্যাকাণ্ডের পেছনে ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব ও পুরনো শত্রুতার ইঙ্গিত মিলেছে। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আরও দুজনকে র্যাব গ্রেপ্তার করেছে। সব মিলিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।