Dhaka শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মিটফোর্ডের ঘটনায় কোনো কোনো রাজনৈতিক ফায়দা লুটের চেষ্টা করছেন, কোনো লাভ হবে না : রিজভী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ভাঙারি পণ্যের ব্যবসায়ী লাল চাঁদ সোহাগকে (৩৯) নৃশংসভাবে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে কোনো কোনো রাজনৈতিক দল ফায়দা লুটার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিএনপির ইতিবাচক দিকগুলো উপেক্ষা করে ফায়দা লুটের চেষ্টা করছেন, তাতে কোনো লাভ হবে না।

শনিবার (১২ জুলাই) মহানগর উত্তরের ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে এসব কথা বলেন তিনি।

রিজভী বলেন, মিডফোর্ড হাসপাতালের সামনে একটি হৃদয় বিদারক ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় সত্য যে বিষয়টি তা উদঘাটনের দায়িত্ব হচ্ছে প্রশাসনের বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। এ ঘটনায় বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের যাদের নাম পাওয়া গেছে তাদেরকে রাতেই আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপি একটি বৃহৎ পরিবার, কোনো ছিদ্র পথে দু-একজন দুষ্কৃতকারী ঢুকে পড়ে সেটি সবসময় খোঁজ রাখা যায় না।

দুষ্কৃতকারীদের কোনোভাবে যদি চিহ্নিত করা যায়, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কার্পণ্য করেন না বলে উল্লেখ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব। তিনি বলেন, গত পরশু রাতে পাবনার সুজানগরে বিএনপির দু-গ্রুপের মধ্যকার সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ওই রাতেই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ‘মিডফোর্ডে যে হৃদয় বিদারক ঘটনা ঘটেছে এর সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই। অথচ কোনো কোনো রাজনৈতিক দল দেখছি ওই ঘটনাকে রাজনৈতিক কালার দেওয়ার রংচং দেওয়ার চেষ্টা করছে। এখানে দল কোথায় জড়িত? দলের নামধারী কেউ হতে পারে। এটাতো দলের পথ পদবি নিয়ে সংঘর্ষ হয়নি। দলের মতাদর্শ নিয়ে ঝগড়া হয়নি, ঝগড়া হচ্ছে তাদের ব্যবসা নিয়ে, এগুলো তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। আপনারা শুনেছেন ভাঙারি ব্যবসা নিয়ে ঘটনা। এ ঘটনার সঙ্গে দল কোথায় জড়িত?

রিজভী বলেন, যে নিহত হয়েছেন আর যারা ঘাতক তাদের মধ্যে ঝগড়া চলছে। এটি যুগ যুগ ধরে তারা করে আসছে। এখন পট পরির্বতন হয়েছে ওয়ার্ড পর্যায়ের কেউ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হতে পারে, যা মহানগর বা কেন্দ্রীয় নেতারা জানেন না, রোড লেভেল তো সবকিছু বোঝাও যায় না। কোনো ধরনের অপর্কম সংঘাত বা মানুষ হত্যায় যারা জড়িত তাদের ছাড় নেই। মাটির গভীরে যায় সেখানে থেকে ধরে এনে এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে।

এই বিএনপি নেতা বলেন, বলেন, দু-একটি রাজনৈতিক দল মিছিল করেন, বিএনপির ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করেন, আমরা যদি শেখ হাসিনার মতো নিশ্চুপ থাকতাম, অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিতাম, তাদের বহিষ্কার না করতাম তাহলে এক কথা ছিল, কিন্তু দল অবিলম্বে বিচার ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।

‘তাহলে আপনারা মিছিল করছেন কেন’ -প্রশ্ন রেখে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘মানে একটা রাজনৈতিক ফায়দা লটুার জন্য। আমরা আপনাদের অতীত অপকর্ম ভুলে যাইনি। আমরা ভুলে যাইনি সে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্রগ্রাম বিশ্বিবিদ্যালয়ের ছাত্রদের কীভাবে পায়ের রগ কেটেছে, কীভাবে বাসের ভেতর থেকে ছাত্রদল নেতাকে ধরে বিনোদপুর গ্রামে হত্যা করা হয়েছে, আপনাদের নৃশংতা, আপনাদের ভয়াবতা মানুষ ভুলে যায়নি। এখনো আপনাদের দেখলে পড়ে সে উপাধিগুলো মানুষ দেয়। আর আপনারা এখন মিছিল করেন। বিএনপির ইতিকাচক দিকগুলো উপেক্ষা করে ফায়দা লুটের চেষ্টা করছেন, তাতে কোনো লাভ হবে না।’

এই বিএনপি নেতা বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বারবার আহ্বান করা হচ্ছে, তারা (বহিষ্কৃতরা) সন্ত্রাস করেছে, তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে গ্রেফতার করুন। আপনারা (প্রশাসন) যদি নিশ্চুপ থাকেন তাহলে তো সমাজে আরও বেশি বিশৃঙ্খলা-নৈরাজ্য তৈরি হবে, আরও বেশি সন্ত্রাস তৈরি হবে। সন্ত্রাসীর কোনো রাজনৈতিক পরিচয় নেই। তারা নিজের ধান্দা ও সুবিধার জন্য এর বাড়ি দখল করে, ওর জমি দখল করে, ওর গোয়ালঘর থেকে গরু নিয়ে যায়, তার পুকুর থেকে মাছ ধরে নিয়ে যায়। এটাই সন্ত্রাসবাদীদের কাজ।

তিনি বলেন, কোনো ধরনের অপকর্ম, সংঘাত, রক্ত ঝরানো, মানুষ হত্যার সঙ্গে যারা জড়িত, বিএনপিতে তাদের কোনো ঠাঁই নেই। যেখানে কোনো ধরনের ঘটনা ঘটেছে সেখানে তো এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং হচ্ছে প্রতিদিন। মানুষ যেন শান্তিতে থাকে সেই নিশ্চয়তা দেওয়ার দল বিএনপি।

অপরাধী কেউ যেন দলের মধ্যে ঢুকে মাথাচাড়া দিতে না পারে- নেতাকর্মীদের প্রতি এমন নির্দেশ দিয়ে রিজভী বলেন, আমি প্রশাসনকে ফোন করে বলেছি, অপরাধী যত প্রতাপশালী হোক তার বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে তাকে গ্রেফতার করুন। বিএনপি তার পক্ষে কথা বলবে না। কিন্তু আপনারা সেটা করছেন না কেন? এখানে ঢাকার পুলিশ কমিশনার কী করেন? নাকি আপনারা চাচ্ছেন, এ ধরনের ঘটনা বাড়তে থাকুক। আর দায়গুলো চাপানো হবে বিএনপির ঘাড়ে।

এ সময় আরও ছিলেন- ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক, সদস্যসচিব মোস্তফা জামান, কেন্দ্রীয় নেতা মাহমুর রহমান সুমন, মহানগর বিএনপি নেতা এসএম জাহাঙ্গীর, কফিলউদ্দিন প্রমুখ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ক্ষমতার লোভ দেখিয়ে অভ্যুত্থানের শক্তিকে কেনা যাবে না : নাহিদ ইসলাম

মিটফোর্ডের ঘটনায় কোনো কোনো রাজনৈতিক ফায়দা লুটের চেষ্টা করছেন, কোনো লাভ হবে না : রিজভী

প্রকাশের সময় : ০৪:১৯:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ভাঙারি পণ্যের ব্যবসায়ী লাল চাঁদ সোহাগকে (৩৯) নৃশংসভাবে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে কোনো কোনো রাজনৈতিক দল ফায়দা লুটার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিএনপির ইতিবাচক দিকগুলো উপেক্ষা করে ফায়দা লুটের চেষ্টা করছেন, তাতে কোনো লাভ হবে না।

শনিবার (১২ জুলাই) মহানগর উত্তরের ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে এসব কথা বলেন তিনি।

রিজভী বলেন, মিডফোর্ড হাসপাতালের সামনে একটি হৃদয় বিদারক ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় সত্য যে বিষয়টি তা উদঘাটনের দায়িত্ব হচ্ছে প্রশাসনের বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। এ ঘটনায় বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের যাদের নাম পাওয়া গেছে তাদেরকে রাতেই আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপি একটি বৃহৎ পরিবার, কোনো ছিদ্র পথে দু-একজন দুষ্কৃতকারী ঢুকে পড়ে সেটি সবসময় খোঁজ রাখা যায় না।

দুষ্কৃতকারীদের কোনোভাবে যদি চিহ্নিত করা যায়, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কার্পণ্য করেন না বলে উল্লেখ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব। তিনি বলেন, গত পরশু রাতে পাবনার সুজানগরে বিএনপির দু-গ্রুপের মধ্যকার সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ওই রাতেই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ‘মিডফোর্ডে যে হৃদয় বিদারক ঘটনা ঘটেছে এর সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই। অথচ কোনো কোনো রাজনৈতিক দল দেখছি ওই ঘটনাকে রাজনৈতিক কালার দেওয়ার রংচং দেওয়ার চেষ্টা করছে। এখানে দল কোথায় জড়িত? দলের নামধারী কেউ হতে পারে। এটাতো দলের পথ পদবি নিয়ে সংঘর্ষ হয়নি। দলের মতাদর্শ নিয়ে ঝগড়া হয়নি, ঝগড়া হচ্ছে তাদের ব্যবসা নিয়ে, এগুলো তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। আপনারা শুনেছেন ভাঙারি ব্যবসা নিয়ে ঘটনা। এ ঘটনার সঙ্গে দল কোথায় জড়িত?

রিজভী বলেন, যে নিহত হয়েছেন আর যারা ঘাতক তাদের মধ্যে ঝগড়া চলছে। এটি যুগ যুগ ধরে তারা করে আসছে। এখন পট পরির্বতন হয়েছে ওয়ার্ড পর্যায়ের কেউ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হতে পারে, যা মহানগর বা কেন্দ্রীয় নেতারা জানেন না, রোড লেভেল তো সবকিছু বোঝাও যায় না। কোনো ধরনের অপর্কম সংঘাত বা মানুষ হত্যায় যারা জড়িত তাদের ছাড় নেই। মাটির গভীরে যায় সেখানে থেকে ধরে এনে এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে।

এই বিএনপি নেতা বলেন, বলেন, দু-একটি রাজনৈতিক দল মিছিল করেন, বিএনপির ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করেন, আমরা যদি শেখ হাসিনার মতো নিশ্চুপ থাকতাম, অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিতাম, তাদের বহিষ্কার না করতাম তাহলে এক কথা ছিল, কিন্তু দল অবিলম্বে বিচার ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।

‘তাহলে আপনারা মিছিল করছেন কেন’ -প্রশ্ন রেখে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘মানে একটা রাজনৈতিক ফায়দা লটুার জন্য। আমরা আপনাদের অতীত অপকর্ম ভুলে যাইনি। আমরা ভুলে যাইনি সে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্রগ্রাম বিশ্বিবিদ্যালয়ের ছাত্রদের কীভাবে পায়ের রগ কেটেছে, কীভাবে বাসের ভেতর থেকে ছাত্রদল নেতাকে ধরে বিনোদপুর গ্রামে হত্যা করা হয়েছে, আপনাদের নৃশংতা, আপনাদের ভয়াবতা মানুষ ভুলে যায়নি। এখনো আপনাদের দেখলে পড়ে সে উপাধিগুলো মানুষ দেয়। আর আপনারা এখন মিছিল করেন। বিএনপির ইতিকাচক দিকগুলো উপেক্ষা করে ফায়দা লুটের চেষ্টা করছেন, তাতে কোনো লাভ হবে না।’

এই বিএনপি নেতা বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বারবার আহ্বান করা হচ্ছে, তারা (বহিষ্কৃতরা) সন্ত্রাস করেছে, তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে গ্রেফতার করুন। আপনারা (প্রশাসন) যদি নিশ্চুপ থাকেন তাহলে তো সমাজে আরও বেশি বিশৃঙ্খলা-নৈরাজ্য তৈরি হবে, আরও বেশি সন্ত্রাস তৈরি হবে। সন্ত্রাসীর কোনো রাজনৈতিক পরিচয় নেই। তারা নিজের ধান্দা ও সুবিধার জন্য এর বাড়ি দখল করে, ওর জমি দখল করে, ওর গোয়ালঘর থেকে গরু নিয়ে যায়, তার পুকুর থেকে মাছ ধরে নিয়ে যায়। এটাই সন্ত্রাসবাদীদের কাজ।

তিনি বলেন, কোনো ধরনের অপকর্ম, সংঘাত, রক্ত ঝরানো, মানুষ হত্যার সঙ্গে যারা জড়িত, বিএনপিতে তাদের কোনো ঠাঁই নেই। যেখানে কোনো ধরনের ঘটনা ঘটেছে সেখানে তো এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং হচ্ছে প্রতিদিন। মানুষ যেন শান্তিতে থাকে সেই নিশ্চয়তা দেওয়ার দল বিএনপি।

অপরাধী কেউ যেন দলের মধ্যে ঢুকে মাথাচাড়া দিতে না পারে- নেতাকর্মীদের প্রতি এমন নির্দেশ দিয়ে রিজভী বলেন, আমি প্রশাসনকে ফোন করে বলেছি, অপরাধী যত প্রতাপশালী হোক তার বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে তাকে গ্রেফতার করুন। বিএনপি তার পক্ষে কথা বলবে না। কিন্তু আপনারা সেটা করছেন না কেন? এখানে ঢাকার পুলিশ কমিশনার কী করেন? নাকি আপনারা চাচ্ছেন, এ ধরনের ঘটনা বাড়তে থাকুক। আর দায়গুলো চাপানো হবে বিএনপির ঘাড়ে।

এ সময় আরও ছিলেন- ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক, সদস্যসচিব মোস্তফা জামান, কেন্দ্রীয় নেতা মাহমুর রহমান সুমন, মহানগর বিএনপি নেতা এসএম জাহাঙ্গীর, কফিলউদ্দিন প্রমুখ।