নিজস্ব প্রতিবেদক :
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পণ্যের শুল্ক কমানোর বিষয়ে বাংলাদেশ আশাবাদী বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন। বাংলাদেশের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ করে কোন ধরণের চুক্তি করা হচ্ছে না। শুল্ক কমানোর আলোচনায় লবিস্ট নিয়োগ করবে না সরকার। এ বিষয়ে দেশটির বাণিজ্যমন্ত্রীকে চিঠি দেয়া হয়েছে। আমন্ত্রণ পেলেই যুক্তরাষ্ট্রে যাবে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরের সামনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুল্ক আরোপের বিষয় পরবর্তী আলোচনা করতে এখনও আমন্ত্রণ পায়নি বাংলাদেশ। দুদিন আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে শিডিউল চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে ইউএসটিআরকে। আগামীকাল একটি অনলাইন মিটিং এর সময় দিয়েছে দেশটি। আশা করছি পহেলা আগস্টের আগেই যুক্তরাষ্ট্র সরকার আলোচনার জন্য সময় দেবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আমরা গত পরশুদিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রীকে করণীয় সম্পর্কে চিঠি দিয়েছি। এখন আমরা সেই চিঠির জবাবের ও আমন্ত্রণের অপেক্ষায় আছি। জবাব ও আমন্ত্রণ পেলে আমাদের যে টিম আছে আমরা সবাই সেখানে যাবো।
সময়তো কম ১ আগস্ট তো সামনে, এরমধ্যেই জবাব আসতে হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা আমাদের জন্য যেরকম প্রয়োজন তেমন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য প্রয়োজন। এ বিষয়ে আমাদের কর্মকাণ্ডের কোনো স্থবিরতা নেই। আমাদের কর্মকাণ্ড যথেষ্ট গতিশীলতা নিয়ে আগাচ্ছে। আমরা আমাদের অবস্থানগুলো সঠিকভাবে তুলে ধরেছি। সক্ষমতার ভীত্তিতে আমাদের যা করণীয় সেটা তুলে ধরেছি। এখন আমরা জবাবের অপেক্ষায় আছি জবাবে পেলেই চলে যাবো।
প্রত্যাশা কি জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, আমাদের প্রত্যাশার কথা আমি আগেও বলেছি। আমরা প্রত্যাশা করছি ভালো কোনো কিছু। ভালো কোনো কিছু করার ক্ষেত্রে যা করণীয় আমরা সেটাই করছি। আমাদের কাছে মনে হয়েছে উনাদের কাছে ভালো কোনো কিছু আমরা পাবো৷
ব্যবসায়ীদের পক্ষে থেকে লবিস্ট নিয়োগের একটা আলোচনা আছে সে বিষয়ে কোনো কিছু হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটা ব্যবসায়ীদের এখতিয়ার। সরকারের পক্ষ থেকে নিজস্বভাবে কোনো লবিস্ট নিয়োগ করেনি। একটা জিনিস বুঝতে হবে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইমাজেন্সির জন্য এ কাজটি করেছে। এখানে যে কাঠামোর ওপরে ঘটনাটা ঘটছে সে কাঠামোতে লবিস্টদের করার কোনো কিছু আছে কিনা আমি জানি না। কারণ আমাদের বিভিন্ন বিষয় পরিবর্তন আনতে হবে। এই পরিবর্তনগুলো বাংলাদেশ ছাড়া অন্য কেউ বুঝতে পারবে না।
তিনি বলেন, এ পরিবর্তনে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের অনেক ধরনের আইনি প্রক্রিয়া আছে। সেই আইনি প্রক্রিয়াগুলো একজন লবিস্টের পক্ষে বোঝা সম্ভব না বলে আমার ধারণা। আমরা আন্তঃমন্ত্রণালয় প্রায় সরকারের সকল মন্ত্রণালয় একসঙ্গে কাজ করছি। গত ১৫ দিন দিন রাত কাজ হয়েছে। সব মিলিয়ে আমরা আমাদের অবস্থান তুলে ধরেছি, আমন্ত্রণ পেলে চলে যাবো।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি খবর প্রচারিত হচ্ছে বাংলাদেশের স্বার্থ ক্ষুন্ন করে যুক্তরাষ্ট্রকে সুবিধা দেওয়ার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, আমার এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য নেই। আপনার মতো আমিও একজন বাংলাদেশি। বাংলাদেশের স্বার্থ ক্ষুন্ন করে কেন কাজ করবো। সম্পূর্ণ অবান্তর প্রশ্ন, আমরা যে চেষ্টা করছি তাতে তো তাহলে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের মিটিংয়ের প্রয়োজন হয় না। কোনো একটা নিদিষ্ট কিছু মেনে নিয়ে কাজ করে ফেললে হয়ে যায়। স্বার্থ ক্ষুন্ন করার প্রশ্ন আসলে পরিশ্রমের দরকার কেন।
আপনি কি আশা করছেন আগস্টের আগেই আমন্ত্রণ পেয়ে যাবেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা আজ কালকের মধ্যে অনলাইনে একটা সিডিউল চাচ্ছি। সুতরাং অনলাইন মিটিং করার পর বুঝা যাবে। মোট কথা গতিশীলতা নিয়ে আগাচ্ছে বলেই তারা আমাদের অনলাইনে একটা মিটিংয়ের সিডিউল দিয়েছে চিঠির প্রেক্ষিতে। এই অনলাইন মিটিংয়ের উপর ভিত্তি করে আমরা আমাদের পরবর্তি কর্মকাণ্ড নির্ধারণ করবো। অনলাইন মিটিংটা সম্ভবত শুক্রবার (২৫ জুলাই) হবে।
আগস্টের আগে তারা কোনো জবাব না দিলে পরবর্তিতে কি করবেন জানতে চাইলে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আমরা আশা করছি সিডিউল পাবো।
শুল্ক ইস্যুতে ১ আগস্টের পরবর্তী সময়েও কি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা হবে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, অবশ্যই হবে, ইনশাল্লাহ্ হবে।