Dhaka সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৪ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি নিয়ে সরকার কোনো চাপ অনুভব করে না : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, যারা (যুক্তরাষ্ট্রের) ভিসার জন্য আবেদন করে তাদের জন্য হয়তো ভিসানীতি দুঃসংবাদ, যদি দুষ্টু লোক হয়। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি নিয়ে সরকার কোনো চাপ অনুভব করে না।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে বুধবার (৪ অক্টোবর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি এসব বলেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের একটি বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ভিসানীতি নিয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভিসানীতি নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই, মাথাব্যথার কারণ নেই। কেননা এ নিয়ে আমরা কোনো চাপ অনুভব করি না।

তিনি বলেন, উনি (কাদের) বলেছেন, ওনার কাছে জিজ্ঞেস করেন। ভিসানীতি আমাদের জন্য গুরত্বপূর্ণ কিছু নয়। উনি (কাদের) ঠিকই বলেছেন। যারা ভিসার জন্য আবেদন করে তাদের জন্য হয়তো দুসংবাদ, যদি দুষ্টু লোক হয়। আমেরিকা তো সবাইকে ভিসা দেয় না। কয়েক হাজার লোক বছরে ভিসার জন্য আবেদন করে, এর মধ্যে কত লোককে ভিসা দেয়?

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভিসানীতি সব দেশে আছে। আমাদের দেশেও আছে। আমরা সবাইকে ভিসা দেই না। আমরা ব্যক্তি বিশেষ কিংবা কোনো দেশকে কম ভিসা দেই। আমি যেটা বুঝতে পারি যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতির মূল উদ্দেশ্য, যাতে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়। আমরাও সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। তারা আমাদের সঙ্গে একমত। তারা আমাদের হাতকে শক্ত করার জন্য ভিসানীতি চায়।

স্যাংশন দেওয়া নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রস্তুতি নিচ্ছে কিনা- প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, অবশ্যই আমরাও স্যাংশন দেব। প্রয়োজনে প্রস্তুতি নেব আমরা।

স্যাংশন কাদের ওপর দেওয়া হবে এবং কী বিষয়ে স্যাংশন দেওয়া হবে-প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, যারা আমাদের ওপর স্যাংশন দেবে তাদের ওপর স্যাংশন দিতে পারি। পারি না? নিশ্চয়ই পারি। প্রয়োজনে প্রস্তুতি নেব। তাড়াহুড়ো কিসের। বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্যাংশন হতে পারে। এগুলো সময়মতো জানবেন।

তিনি বলেন, আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। আমেরিকা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। যাতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়, সেজন্য তারা সহায়কের ভূমিকা পালন করবে। আমাদের সাহায্য করবে। আর যারা নির্বাচনে আসবে না আমেরিকা তাদের পক্ষে নাই। তারা বলেছে, তারা কোনো দলেই নাই। কিন্তু তারা বিশ্বাস করে, নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তনের একমাত্র… তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে এবং গণতান্ত্রিক সরকার চায়। আমরাও গণতান্ত্রিক সরকার চাই।

যুক্তরাষ্ট্র সফরে রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা আমাদের সঙ্গে একমত। তারাও বলছে, রোহিঙ্গাদের ফেরত যাওয়া উচিত। কিন্তু তারা মনে করে, মিয়ানমারে যদি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা না হয় তাহলে জীবনমানের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে না। এজন্য আগে ওখানে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হোক তারপর এদের পাঠান। তারা বলছে, এখন রোহিঙ্গাদের এদেশে রেখে কাজকর্ম দেন। তাদের দক্ষতার ট্রেনিং দেন। উন্নত দেশগুলোতে প্রত্যাবাসন বলতে কিছু নেই। ওখানে রিফিউজি গেলে রেখে দেওয়া হয়। তারা সেই চিন্তা-ভাবনায় থাকে। তারা মনে করে, বাংলাদেশ তাদের রেখে দিতে পারে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, বিদেশিরা মূলত বিক্রি করতে আসে। এজন্য চাপ সৃষ্টি করে যেন তার কাছ থেকে কেনে। আমেরিকা বিক্রি করতে চায়, ফ্রান্স বিক্রি করতে চায়, ব্রিটিশরা বিক্রি করতে চায়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিক্রি করতে চায়।

ভারতের গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রশ্নকারী সাংবাদিককে উদ্দেশে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিদেশিদের এত মুখাপেক্ষী হয়ে থাকেন কেন? আপনার মগজে বিদেশি বিদেশি কেন। নিজের ওপর আত্মবিশ্বাস তৈরি করতে পারেন না?

তিনি আরও বলেন, ওগুলো বাদ দেন। নিজের ওপর আত্মবিশ্বাস আনেন। শেখ হাসিনার আত্মবিশ্বাস আছে। আপনারা দেশের প্রতি, নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস বাড়ান।

ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ‘বাংলাদেশের গণতন্ত্র আইসিউতে আছে’। এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অবস্থান জানতে চাওয়া হয়। প্রশ্নকারী সাংবাদিককে তিনি বলেন, এরকম বহু লোক বহু প্রতিবেদন তৈরি করবে। আপনি নিজে প্রতিবেদন তৈরি করেন। অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকবেন না। আল্লার ওয়াস্তে এই বদ অভ্যাসটা বাদ দেন। অন্য কেউ কিছু বললে লাফাইয়া উঠবেন। এটা বাদ দিয়ে নিজে পরীক্ষা করে দেখেন কী অবস্থা। জনগণ যদি ভোট দেয়, ওটাই গ্রহণযোগ্য নির্বাচন।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে ড. মোমেন বলেন, বিদেশিরা মূলত বিক্রি করতে আসে। এজন্য চাপ সৃষ্টি করে যেন তার কাছ থেকে কেনে। আমেরিকা বিক্রি করতে চায়, ফ্রান্স বিক্রি করতে চায়, ব্রিটিশ বিক্রি করতে চায়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিক্রি করতে চায়।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতে নির্বাচন নিয়ে কথা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে নিশ্চয়ই। আমরা আমেরিকাকে বলেছি একমাত্র আওয়ামী লীগ এদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। এই দেশে শেখ হাসিনা মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছেন। আওয়ামী লীগ এ দেশে গণতন্ত্র জিনিসটা শিখিয়েছে। কিন্তু মাঝখানে সামরিক, বেসামরিক এবং টেকনোক্রেটিক- এ ধরনের কিছু সরকার ছিল, তখন আমাদের দেশে গণতন্ত্রটা ধ্বংস হয়ে যায়। তখন হ্যাঁ-না এর ভোট হয়। এক কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার হয়, তখন আজিজ কমিশন হয়। এসব করে গণতন্ত্রটাকে ধ্বংস করে দেয়। উল্টাপাল্টা নির্বাচন করে কোনো দল নির্বাচিত হয়, সেখানে কেউ ভোট দেয়নি। বাংলাদেশের জনগণ ও গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে তাই দেড় মাসের মাথায় সেই সরকার পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, আবার ২০০৯ সাল থেকে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে। ১৫ বছরে বাংলাদেশে কয়েক হাজার নির্বাচন হয়েছে। এর কয়েকটি ছাড়া অধিকাংশ ক্ষেত্রে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। গত কিছুদিন আগে পাঁচটি সিটিতে মেয়র নির্বাচন হয়। সেখানে অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সংঘাতবিহীন নির্বাচন হয়েছে। সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য এবং অবাধ নির্বাচন হয়েছে। আমরা সংঘাতহীন অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চাই।

বাইডেনের সঙ্গে শেখ হাসিনার কথোপকথনের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, আমেরিকার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতে শেখ হাসিনা বলেছেন- আমার বাবা-মা হারিয়েছি, তিন ভাই হারিয়েছি, ১০ বছরের শিশু আমার ভাইকে হারিয়েছি। আমার পরিবারের ১৭ জন লোক, আমি এবং আমার ছোট বোন ছাড়া এবং তিন সন্তান ছাড়া বাকি সবাইকে হারিয়েছি। তাদের হারানোর পর আমি ছয় বছর দেশে ফিরতে পারি নাই, আর আমার অধিকারও ছিল না। ২১ বছর আমি সংগ্রাম করেছি, তারপর আমি দেশে ফিরে ইনডেমনিটির মতো কুখ্যাত আইন বাতিল করি এবং দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করি। বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করি। উনি (হাসিনা) বললেন আমার ১৭০ মিলিয়ন জনগণ এখন আমার পরিবার। আমার পরিবার হচ্ছে ১৭ কোটি বাঙালি এবং তাদের মঙ্গলের জন্য তাদের দুই বেলা ভাত, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং উন্নত জীবনের জন্য আমার এত সংগ্রাম।

এসব কথা প্রধানমন্ত্রী দিল্লিতে বাইডেনের কাছে বলেছেন বলে উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কথার জবাবে বাইডেন বলেছেন, আমি জানি আপনার উন্নয়ন অত্যন্ত চমৎকার। তবে দিল্লিতে নির্বাচন নিয়ে কোনো আলাপ হয়নি।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন সড়কের বেহাল দশা, চলাচলে চরম ভোগান্তি

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি নিয়ে সরকার কোনো চাপ অনুভব করে না : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০৮:৩৬:২৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ অক্টোবর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, যারা (যুক্তরাষ্ট্রের) ভিসার জন্য আবেদন করে তাদের জন্য হয়তো ভিসানীতি দুঃসংবাদ, যদি দুষ্টু লোক হয়। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি নিয়ে সরকার কোনো চাপ অনুভব করে না।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে বুধবার (৪ অক্টোবর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি এসব বলেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের একটি বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ভিসানীতি নিয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভিসানীতি নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই, মাথাব্যথার কারণ নেই। কেননা এ নিয়ে আমরা কোনো চাপ অনুভব করি না।

তিনি বলেন, উনি (কাদের) বলেছেন, ওনার কাছে জিজ্ঞেস করেন। ভিসানীতি আমাদের জন্য গুরত্বপূর্ণ কিছু নয়। উনি (কাদের) ঠিকই বলেছেন। যারা ভিসার জন্য আবেদন করে তাদের জন্য হয়তো দুসংবাদ, যদি দুষ্টু লোক হয়। আমেরিকা তো সবাইকে ভিসা দেয় না। কয়েক হাজার লোক বছরে ভিসার জন্য আবেদন করে, এর মধ্যে কত লোককে ভিসা দেয়?

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভিসানীতি সব দেশে আছে। আমাদের দেশেও আছে। আমরা সবাইকে ভিসা দেই না। আমরা ব্যক্তি বিশেষ কিংবা কোনো দেশকে কম ভিসা দেই। আমি যেটা বুঝতে পারি যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতির মূল উদ্দেশ্য, যাতে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়। আমরাও সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। তারা আমাদের সঙ্গে একমত। তারা আমাদের হাতকে শক্ত করার জন্য ভিসানীতি চায়।

স্যাংশন দেওয়া নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রস্তুতি নিচ্ছে কিনা- প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, অবশ্যই আমরাও স্যাংশন দেব। প্রয়োজনে প্রস্তুতি নেব আমরা।

স্যাংশন কাদের ওপর দেওয়া হবে এবং কী বিষয়ে স্যাংশন দেওয়া হবে-প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, যারা আমাদের ওপর স্যাংশন দেবে তাদের ওপর স্যাংশন দিতে পারি। পারি না? নিশ্চয়ই পারি। প্রয়োজনে প্রস্তুতি নেব। তাড়াহুড়ো কিসের। বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্যাংশন হতে পারে। এগুলো সময়মতো জানবেন।

তিনি বলেন, আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। আমেরিকা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। যাতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়, সেজন্য তারা সহায়কের ভূমিকা পালন করবে। আমাদের সাহায্য করবে। আর যারা নির্বাচনে আসবে না আমেরিকা তাদের পক্ষে নাই। তারা বলেছে, তারা কোনো দলেই নাই। কিন্তু তারা বিশ্বাস করে, নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তনের একমাত্র… তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে এবং গণতান্ত্রিক সরকার চায়। আমরাও গণতান্ত্রিক সরকার চাই।

যুক্তরাষ্ট্র সফরে রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা আমাদের সঙ্গে একমত। তারাও বলছে, রোহিঙ্গাদের ফেরত যাওয়া উচিত। কিন্তু তারা মনে করে, মিয়ানমারে যদি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা না হয় তাহলে জীবনমানের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে না। এজন্য আগে ওখানে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হোক তারপর এদের পাঠান। তারা বলছে, এখন রোহিঙ্গাদের এদেশে রেখে কাজকর্ম দেন। তাদের দক্ষতার ট্রেনিং দেন। উন্নত দেশগুলোতে প্রত্যাবাসন বলতে কিছু নেই। ওখানে রিফিউজি গেলে রেখে দেওয়া হয়। তারা সেই চিন্তা-ভাবনায় থাকে। তারা মনে করে, বাংলাদেশ তাদের রেখে দিতে পারে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, বিদেশিরা মূলত বিক্রি করতে আসে। এজন্য চাপ সৃষ্টি করে যেন তার কাছ থেকে কেনে। আমেরিকা বিক্রি করতে চায়, ফ্রান্স বিক্রি করতে চায়, ব্রিটিশরা বিক্রি করতে চায়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিক্রি করতে চায়।

ভারতের গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রশ্নকারী সাংবাদিককে উদ্দেশে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিদেশিদের এত মুখাপেক্ষী হয়ে থাকেন কেন? আপনার মগজে বিদেশি বিদেশি কেন। নিজের ওপর আত্মবিশ্বাস তৈরি করতে পারেন না?

তিনি আরও বলেন, ওগুলো বাদ দেন। নিজের ওপর আত্মবিশ্বাস আনেন। শেখ হাসিনার আত্মবিশ্বাস আছে। আপনারা দেশের প্রতি, নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস বাড়ান।

ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ‘বাংলাদেশের গণতন্ত্র আইসিউতে আছে’। এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অবস্থান জানতে চাওয়া হয়। প্রশ্নকারী সাংবাদিককে তিনি বলেন, এরকম বহু লোক বহু প্রতিবেদন তৈরি করবে। আপনি নিজে প্রতিবেদন তৈরি করেন। অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকবেন না। আল্লার ওয়াস্তে এই বদ অভ্যাসটা বাদ দেন। অন্য কেউ কিছু বললে লাফাইয়া উঠবেন। এটা বাদ দিয়ে নিজে পরীক্ষা করে দেখেন কী অবস্থা। জনগণ যদি ভোট দেয়, ওটাই গ্রহণযোগ্য নির্বাচন।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে ড. মোমেন বলেন, বিদেশিরা মূলত বিক্রি করতে আসে। এজন্য চাপ সৃষ্টি করে যেন তার কাছ থেকে কেনে। আমেরিকা বিক্রি করতে চায়, ফ্রান্স বিক্রি করতে চায়, ব্রিটিশ বিক্রি করতে চায়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিক্রি করতে চায়।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতে নির্বাচন নিয়ে কথা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে নিশ্চয়ই। আমরা আমেরিকাকে বলেছি একমাত্র আওয়ামী লীগ এদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। এই দেশে শেখ হাসিনা মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছেন। আওয়ামী লীগ এ দেশে গণতন্ত্র জিনিসটা শিখিয়েছে। কিন্তু মাঝখানে সামরিক, বেসামরিক এবং টেকনোক্রেটিক- এ ধরনের কিছু সরকার ছিল, তখন আমাদের দেশে গণতন্ত্রটা ধ্বংস হয়ে যায়। তখন হ্যাঁ-না এর ভোট হয়। এক কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার হয়, তখন আজিজ কমিশন হয়। এসব করে গণতন্ত্রটাকে ধ্বংস করে দেয়। উল্টাপাল্টা নির্বাচন করে কোনো দল নির্বাচিত হয়, সেখানে কেউ ভোট দেয়নি। বাংলাদেশের জনগণ ও গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে তাই দেড় মাসের মাথায় সেই সরকার পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, আবার ২০০৯ সাল থেকে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে। ১৫ বছরে বাংলাদেশে কয়েক হাজার নির্বাচন হয়েছে। এর কয়েকটি ছাড়া অধিকাংশ ক্ষেত্রে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। গত কিছুদিন আগে পাঁচটি সিটিতে মেয়র নির্বাচন হয়। সেখানে অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সংঘাতবিহীন নির্বাচন হয়েছে। সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য এবং অবাধ নির্বাচন হয়েছে। আমরা সংঘাতহীন অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চাই।

বাইডেনের সঙ্গে শেখ হাসিনার কথোপকথনের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, আমেরিকার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতে শেখ হাসিনা বলেছেন- আমার বাবা-মা হারিয়েছি, তিন ভাই হারিয়েছি, ১০ বছরের শিশু আমার ভাইকে হারিয়েছি। আমার পরিবারের ১৭ জন লোক, আমি এবং আমার ছোট বোন ছাড়া এবং তিন সন্তান ছাড়া বাকি সবাইকে হারিয়েছি। তাদের হারানোর পর আমি ছয় বছর দেশে ফিরতে পারি নাই, আর আমার অধিকারও ছিল না। ২১ বছর আমি সংগ্রাম করেছি, তারপর আমি দেশে ফিরে ইনডেমনিটির মতো কুখ্যাত আইন বাতিল করি এবং দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করি। বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করি। উনি (হাসিনা) বললেন আমার ১৭০ মিলিয়ন জনগণ এখন আমার পরিবার। আমার পরিবার হচ্ছে ১৭ কোটি বাঙালি এবং তাদের মঙ্গলের জন্য তাদের দুই বেলা ভাত, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং উন্নত জীবনের জন্য আমার এত সংগ্রাম।

এসব কথা প্রধানমন্ত্রী দিল্লিতে বাইডেনের কাছে বলেছেন বলে উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কথার জবাবে বাইডেন বলেছেন, আমি জানি আপনার উন্নয়ন অত্যন্ত চমৎকার। তবে দিল্লিতে নির্বাচন নিয়ে কোনো আলাপ হয়নি।