নিজস্ব প্রতিবেদক :
মার্কিন নতুন প্রশাসনের সাথে আগের মতোই সম্পর্ক বিদ্যমান থাকবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, সম্পর্কের অবনতি নয়, বরং তা আরো বৃদ্ধি পাবে।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপির লিয়াজো কমিটির সাথে খেলাফত মজলিসের বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কে কোন প্রভাব পড়বে কি না জানতে চাইলে নজরুল ইসলাম খান বলেন, রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারণে ব্যক্তি খুব একটা প্রভাব ফেলে না। কিন্তু আমেরিকা এমন একটা রাষ্ট্র, যেখানে ব্যক্তির প্রভাব খুব বেশি, অঅর্থ্যাৎ অনেক প্রভাবশালী। তারপরেও মনে করি না আমেরিকার সঙ্গে বাংলাদেশের যে সম্পর্ক সেখানে খুব একটা প্রভাব ফেলবে। কারণ পরিবর্তন ত শুধু তাদের ওখানে হয়নি, আমাদের এখানেও হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি দুটিই গণতান্ত্রিক দেশ, দুটিই গণতান্ত্রিকভাবে সমর্থিত, অতএব এই দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক খুব একটা পরিবর্তন হবে বলে মনে হবে না।
তিনি বলেন, সংস্কার আমরাও চাই কিন্তু আমরা বলছি, সব সংস্কার কখনোই একসঙ্গে শেষ করা যায় না। যে সংস্কার আমরা এখন করবো আজ থেকে দুই বছর হয়তো আমরাই সেই সংস্কারে আরেকটা সংস্কার করতে চাইবো। সংস্কারগুলোকে ঝুলিয়ে না রেখে দ্রুত করে একটা নির্বাচন করতে হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, আমরা বলেছি, একটা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের হাতে তার ক্ষমতা ফিরিয়ে দেয়াটা হলো গত ১৬ বছর বিশেষ করে জুলাই-আগস্টের ছাত্র অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা। সেই আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য জাতীয় নির্বাচন অর্থাৎ জনগণের হাতে তার ক্ষমতাটা ফিরিয়ে দেয়াটা জরুরি। এর জন্য যে সংস্কারগুলো প্রয়োজন, গুরুত্বপূর্ণ সেই সংস্কারগুলো আমরাও চাচ্ছি।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, বাংলাদেশে যেসব দল রাজনীতি করে, তারা একে অন্যের সঙ্গে মতের বিনিময়ের মাধ্যমে কাজ করতে পারে। এ নিয়ে কারো কোনো দুশ্চিন্তা থাকার কারণ নেই।
তিনি বলেন, এক সময় হয়তো এক দল আরেক দলের বিরোধিতা করেছে, আবার আন্দোলনে গিয়ে তারা এক হয়েছে। আবার অন্যদিকে আজ যারা একমত, ভবিষ্যতে তারা একমত নাও থাকতে পারে, এটি নতুন কিছু নয়।
আন্দোলন করা অন্যান্য শরিক দলের সঙ্গে বিএনপি ঐকমত্যে আছে জানিয়ে তিনি বলেন, তারেক রহমান আগে তার বক্তব্যে স্পষ্ট করেছেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী যেসব শক্তি রাজপথে বিএনপির সঙ্গে আন্দোলন করেছে, বিএনপি যদি কখনো এ দেশের জনগণের সেবা করার সুযোগ পায়, তাহলে তাদের নিয়ে মানুষের সেবা করবে।
খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমেদ আব্দুল কাদের বলেন, বৈঠকে আমরা একমত হয়েছি যে, বিভিন্ন দলগুলোর মধ্যে সংলাপ হতে হবে। প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুত সময়ের মধ্যে ২০২৫ সালের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন করতে হবে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জন্য উদ্যোগ নিতে হবে। ইসলামী মূল্যবোধ ধরে রাখার জন্য সবাইকে ইতিবাচক হতে হবে।
খেলাফত মজলিসের সঙ্গে বিএনপির এই লিয়াজু কমিটির বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, খেলাফত মজলিসের আমির আবদুল বাছিত আজাদ সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
এর আগে সকালে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসন কার্যালয়ে লিয়াজোঁ কমিটির সঙ্গে খেলাফত মজলিসের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বিএনপির প্রতিনিধি দলে উপস্থিত ছিলেন লিয়াজোঁ কমিটি প্রধান এবং বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
অন্যদিকে, খেলাফত মজলিসের প্রতিনিধি দলে ছিলেন এর আমির মাওলানা আবদুল বাছিত আজাদ ও মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের।