স্পোর্টস ডেস্ক :
আন্তর্জাতিক পেশাদার বক্সিংয়ে পরিচিত একটি নাম জর্জ ফোরম্যান। মাত্র ১৯ বছর বয়সে মেক্সিকো অলিম্পিকে স্বর্ণ জিতে নিজের আবির্ভাবের জানান দিয়েছেন তিনি। এরপর গড়েছেন অসংখ্য কীর্তি এবং জায়গা পেয়েছিলেন আন্তর্জাতিক বক্সিংয়ের হল অব ফেমে। তবে এবার না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন এই কিংবদন্তি।
শনিবার (২২ মার্চ) অফিসিয়াল ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে জর্জ ফোরম্যানের পরিবার। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর।
ফোরম্যানের পরিবার জানিয়েছে, আমাদের হৃদয় আজ বিক্ষিপ্ত। গভীর শোকের সঙ্গে, আমরা আমাদের প্রিয় জর্জ এডওয়ার্ড ফোরম্যান সিনিয়রের প্রয়াণের খবর জানাচ্ছি। তিনি ২০২৫ সালের ২১ মার্চ, তার প্রিয়জনদের উপস্থিতিতে শান্তিপূর্ণভাবে পৃথিবী ছেড়েছেন।
তিনি ছিলেন একজন নিবেদিত যাজক, এক দয়ালু স্বামী, একজন প্রিয় বাবা, এবং এক গর্বিত দাদা ও প্রপিতামহ। তার জীবন ছিল অটুট বিশ্বাস, বিনয় এবং উদ্দেশ্যে পূর্ণ।
১৯৬৮ সালের মেক্সিকো সিটি অলিম্পিকে স্বর্ণপদক জয়ের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজের যাত্রা শুরু করেন ফোরম্যান। এরপর পেশাদার ক্যারিয়ারে তিনি ৭৬টি লড়াইয়ের মধ্যে ৬৮টি নকআউট সহ ৭৩টি জিতেছিলেন। ১৯৭৩ সালে কিংস্টনে জো ফ্রেজিয়ারকে ছয়বার মাটিতে ফেলে পরাজিত করে তিনি প্রথমবারের মতো বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন হন।
কিন্তু ১৯৭৪ সালে কিংবদন্তি মোহাম্মদ আলীর বিপক্ষে ‘রাম্বল ইন দ্য জাঙ্গল’ লড়াইয়ে হার তার ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। আলীর বিখ্যাত ‘রোপ-আ-ডোপ’ কৌশলে আটকে ফোরম্যান অষ্টম রাউন্ডে নকআউট হন। এই পরাজয়ের পর ১৯৭৭ সালে তিনি বক্সিং ছেড়ে ধর্মপ্রচারক হয়ে ওঠেন এবং হিউস্টনে একটি গির্জা প্রতিষ্ঠা করেন।
১০ বছর পর, ১৯৮৭ সালে, অর্থ সংগ্রহের জন্য তিনি আবার রিংয়ে ফেরেন এবং এক অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তন করেন। ১৯৯৪ সালে, ৪৫ বছর বয়সে মাইকেল মুরারকে নকআউট করে তিনি ইতিহাসের সবচেয়ে বয়স্ক হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন হন।
রিংয়ের বাইরে ফোরম্যান তার ‘জর্জ ফোরম্যান গ্রিল’ ব্র্যান্ড দিয়ে ব্যবসায় বিপ্লব ঘটান। তার গ্রিলের জনপ্রিয়তা এতটাই বৃদ্ধি পায় যে এটি তার বক্সিং আয়ের চেয়েও বেশি লাভ এনে দেয়।