Dhaka বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫, ৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মামলা থেকে আসামিদের দায়মুক্তির চেষ্টাকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকসহ আলোচিত তিন আসামিকে হত্যা মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার চেষ্টাকারী পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের প্রধান উপাসনালয় রাজধানীর কাকরাইল সেন্ট মেরী ক্যাথিড্রাল গির্জা পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই কথা বলেন।

জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হত্যার দুটি মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং সাবেক আলোচিত সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানকে অব্যাহতি দিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করেছিলেন পুলিশের একজন তদন্ত কর্মকর্তা। তবে বিষয়টি কর্তৃপক্ষ জানতে পেরে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

বুধবার একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, যিনি এই কাজটি করেছেন তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। যদিও তিনি এখন ছুটিতে আছেন। তবে ছুটি বেশিদিন কাটাতে পারবে না আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, এই ধরনের কাজে কোনো সময় প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। আর এভাবে চার্জশিট জমা দেওয়ার নিয়ম নেই। তদন্তকারী কর্মকর্তা সেই নিয়ম মানেনি।

এ সময় উপদেষ্টা চাঁদপুরের মেঘনায় বহুল আলোচিত সার বোঝাই কার্গো জাহাজে সাত খুনের ঘটনার দ্রুত সুরাহা হবে বলে জানান। ওই ঘটনায় যারা খুন হয়েছেন তাদের সবার মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, হত্যাকাণ্ডের মোটিভ এখনো জানা যায়নি। তবে আটককৃত ব্যক্তি জবানবন্দি দিয়েছেন। খুব দ্রুত এই মামলার সুরাহা হবে বলে আমি আশাবাদী।

উল্লেখ্য, জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হত্যার দুটি মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসানকে অব্যাহতি দিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করেছিলেন পুলিশের একজন তদন্ত কর্মকর্তা। তবে আদালতে ওঠার আগেই বিষয়টি ধরা পড়ে যায়। এ ঘটনায় আবার তদন্ত করা হচ্ছে।

ঘটনাটি জানার পরই মামলা দুটির তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) রমনার পরিদর্শক মো. জাহাঙ্গীর আরিফকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

নথিপত্র ও পুলিশ সূত্র বলছে, তদন্ত কর্মকর্তা তার ডিবির পরিচয় গোপন করে থানা–পুলিশের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদনটি আদালতে জমার চেষ্টা করেছিলেন।

তিনি এক্ষেত্রে নিয়ম অনুযায়ী ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুমতি নেননি। বিষয়টি জানাজানির পর তিনি অসুস্থতার কথা বলে ছুটিতে চলে গেছেন।

আনিসুল হক ও সালমানকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল সবুজ মিয়া ও মো. শাহজাহান মিয়া হত্যা মামলায়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ১৬ জুলাই ঢাকার নিউমার্কেট এলাকায় সবুজকে মারধর করে ও শাহজাহানকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ঘটনার পরের দিন নিউমার্কেট থানায় মামলা হয়। সবুজের চাচাতো ভাই মো. নুরনবী ও শাহজাহানের মা আয়শা বেগম মামলার বাদী হন।

মামলা দুটির তদন্ত করছিলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) রমনার পরিদর্শক মো. জাহাঙ্গীর আরিফ। তিনি গত ২৩ অক্টোবর দুই মামলায় আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার চেষ্টা করেন।

নথিতে দেখা যায়, চূড়ান্ত প্রতিবেদনে নিজেকে তিনি নিউমার্কেট থানার পরিদর্শক পরিচয় দিয়েছেন। যদিও তিনি কর্মরত ডিবিতে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

অপতথ্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামতে ভোটারদের প্রতি আহ্বান সিইসির

মামলা থেকে আসামিদের দায়মুক্তির চেষ্টাকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

প্রকাশের সময় : ০৯:৩২:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকসহ আলোচিত তিন আসামিকে হত্যা মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার চেষ্টাকারী পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের প্রধান উপাসনালয় রাজধানীর কাকরাইল সেন্ট মেরী ক্যাথিড্রাল গির্জা পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই কথা বলেন।

জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হত্যার দুটি মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং সাবেক আলোচিত সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানকে অব্যাহতি দিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করেছিলেন পুলিশের একজন তদন্ত কর্মকর্তা। তবে বিষয়টি কর্তৃপক্ষ জানতে পেরে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

বুধবার একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, যিনি এই কাজটি করেছেন তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। যদিও তিনি এখন ছুটিতে আছেন। তবে ছুটি বেশিদিন কাটাতে পারবে না আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, এই ধরনের কাজে কোনো সময় প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। আর এভাবে চার্জশিট জমা দেওয়ার নিয়ম নেই। তদন্তকারী কর্মকর্তা সেই নিয়ম মানেনি।

এ সময় উপদেষ্টা চাঁদপুরের মেঘনায় বহুল আলোচিত সার বোঝাই কার্গো জাহাজে সাত খুনের ঘটনার দ্রুত সুরাহা হবে বলে জানান। ওই ঘটনায় যারা খুন হয়েছেন তাদের সবার মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, হত্যাকাণ্ডের মোটিভ এখনো জানা যায়নি। তবে আটককৃত ব্যক্তি জবানবন্দি দিয়েছেন। খুব দ্রুত এই মামলার সুরাহা হবে বলে আমি আশাবাদী।

উল্লেখ্য, জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হত্যার দুটি মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসানকে অব্যাহতি দিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করেছিলেন পুলিশের একজন তদন্ত কর্মকর্তা। তবে আদালতে ওঠার আগেই বিষয়টি ধরা পড়ে যায়। এ ঘটনায় আবার তদন্ত করা হচ্ছে।

ঘটনাটি জানার পরই মামলা দুটির তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) রমনার পরিদর্শক মো. জাহাঙ্গীর আরিফকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

নথিপত্র ও পুলিশ সূত্র বলছে, তদন্ত কর্মকর্তা তার ডিবির পরিচয় গোপন করে থানা–পুলিশের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদনটি আদালতে জমার চেষ্টা করেছিলেন।

তিনি এক্ষেত্রে নিয়ম অনুযায়ী ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুমতি নেননি। বিষয়টি জানাজানির পর তিনি অসুস্থতার কথা বলে ছুটিতে চলে গেছেন।

আনিসুল হক ও সালমানকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল সবুজ মিয়া ও মো. শাহজাহান মিয়া হত্যা মামলায়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ১৬ জুলাই ঢাকার নিউমার্কেট এলাকায় সবুজকে মারধর করে ও শাহজাহানকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ঘটনার পরের দিন নিউমার্কেট থানায় মামলা হয়। সবুজের চাচাতো ভাই মো. নুরনবী ও শাহজাহানের মা আয়শা বেগম মামলার বাদী হন।

মামলা দুটির তদন্ত করছিলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) রমনার পরিদর্শক মো. জাহাঙ্গীর আরিফ। তিনি গত ২৩ অক্টোবর দুই মামলায় আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার চেষ্টা করেন।

নথিতে দেখা যায়, চূড়ান্ত প্রতিবেদনে নিজেকে তিনি নিউমার্কেট থানার পরিদর্শক পরিচয় দিয়েছেন। যদিও তিনি কর্মরত ডিবিতে।