Dhaka বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মান্না ঋণখেলাপি, অংশ নিতে পারবেন না নির্বাচনে

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ঋণ খেলাপির তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নার করা রিট আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। এর ফলে তিনি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী।

বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) বিচারপতি মো. বজলুর রহমান ও বিচারপতি মো. মনজুর আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে মাহমুদুর রহমান মান্নার পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম এবং ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শফিকুর রহমান।

শুনানি শেষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শফিকুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণ খেলাপির তালিকা থেকে নিজের নাম বাদ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে মাহমুদুর রহমান মান্না হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছিলেন। আদালত সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন। ফলে সংবিধান ও নির্বাচনসংক্রান্ত আইনের বিধান অনুযায়ী তিনি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের যোগ্যতা হারালেন।

তবে মান্নার আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, হাইকোর্টের এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করা হবে। আমরা মনে করি, আমাদের আবেদনের যথেষ্ট আইনগত ভিত্তি রয়েছে। তাই উচ্চ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে।

এর আগে গত ১০ ডিসেম্বর মাহমুদুর রহমান মান্নার নেতৃত্বাধীন প্রতিষ্ঠান আফাকু কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডের কাছে খেলাপি ঋণের বিপরীতে ৩৮ কোটি ৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা আদায়ে ‘কলব্যাক নোটিশ’ জারি করে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের বগুড়া বড়গোলা শাখা।

নোটিশে প্রতিষ্ঠানটিকে ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পূর্ণ বকেয়া পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টাকা পরিশোধ না করলে প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়।

শাখা প্রধান তৌহিদ রেজার স্বাক্ষরিত এই নোটিশটি আফাকু কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মাহমুদুর রহমান মান্না এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবিএম নাজমুল কাদির শাজাহান চৌধুরীর ঠিকানায় পাঠানো হয়।

ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, আফাকু কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডে মাহমুদুর রহমান মান্নার মালিকানা রয়েছে ৫০ শতাংশ। ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবিএম নাজমুল কাদির শাজাহান চৌধুরীর মালিকানা ২৫ শতাংশ এবং তার স্ত্রী ও প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক ইসমত আরা লাইজুর মালিকানা ২৫ শতাংশ।

ব্যাংকের নোটিশে উল্লেখ করা হয়, ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠানটিকে ২২ কোটি টাকা বিনিয়োগ অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। তবে দীর্ঘদিন ধরে নিয়মিতভাবে মুনাফা, চার্জ ও জরিমানা পরিশোধ না করায় বকেয়ার পরিমাণ ধীরে ধীরে বেড়ে বর্তমানে ৩৮ কোটি ৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকায় দাঁড়িয়েছে।

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের বগুড়া বড়গোলা শাখার প্রধান তৌহিদ রেজা বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানটি লাভজনক হওয়া সত্ত্বেও চুক্তি অনুযায়ী ঋণ পরিশোধে কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। মাহমুদুর রহমান মান্না ঋণখেলাপি হওয়ার পরও বকেয়া পরিশোধে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেননি। বাধ্য হয়েই আমরা কলব্যাক নোটিশ জারি করেছি।’

তিনি আরও জানান, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বকেয়া পরিশোধ না হলে ব্যাংক আইন অনুযায়ী পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মান্না ঋণখেলাপি, অংশ নিতে পারবেন না নির্বাচনে

প্রকাশের সময় : ০৫:৩৭:১৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ঋণ খেলাপির তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নার করা রিট আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। এর ফলে তিনি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী।

বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) বিচারপতি মো. বজলুর রহমান ও বিচারপতি মো. মনজুর আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে মাহমুদুর রহমান মান্নার পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম এবং ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শফিকুর রহমান।

শুনানি শেষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শফিকুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণ খেলাপির তালিকা থেকে নিজের নাম বাদ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে মাহমুদুর রহমান মান্না হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছিলেন। আদালত সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন। ফলে সংবিধান ও নির্বাচনসংক্রান্ত আইনের বিধান অনুযায়ী তিনি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের যোগ্যতা হারালেন।

তবে মান্নার আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, হাইকোর্টের এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করা হবে। আমরা মনে করি, আমাদের আবেদনের যথেষ্ট আইনগত ভিত্তি রয়েছে। তাই উচ্চ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে।

এর আগে গত ১০ ডিসেম্বর মাহমুদুর রহমান মান্নার নেতৃত্বাধীন প্রতিষ্ঠান আফাকু কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডের কাছে খেলাপি ঋণের বিপরীতে ৩৮ কোটি ৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা আদায়ে ‘কলব্যাক নোটিশ’ জারি করে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের বগুড়া বড়গোলা শাখা।

নোটিশে প্রতিষ্ঠানটিকে ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পূর্ণ বকেয়া পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টাকা পরিশোধ না করলে প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়।

শাখা প্রধান তৌহিদ রেজার স্বাক্ষরিত এই নোটিশটি আফাকু কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মাহমুদুর রহমান মান্না এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবিএম নাজমুল কাদির শাজাহান চৌধুরীর ঠিকানায় পাঠানো হয়।

ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, আফাকু কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডে মাহমুদুর রহমান মান্নার মালিকানা রয়েছে ৫০ শতাংশ। ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবিএম নাজমুল কাদির শাজাহান চৌধুরীর মালিকানা ২৫ শতাংশ এবং তার স্ত্রী ও প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক ইসমত আরা লাইজুর মালিকানা ২৫ শতাংশ।

ব্যাংকের নোটিশে উল্লেখ করা হয়, ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠানটিকে ২২ কোটি টাকা বিনিয়োগ অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। তবে দীর্ঘদিন ধরে নিয়মিতভাবে মুনাফা, চার্জ ও জরিমানা পরিশোধ না করায় বকেয়ার পরিমাণ ধীরে ধীরে বেড়ে বর্তমানে ৩৮ কোটি ৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকায় দাঁড়িয়েছে।

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের বগুড়া বড়গোলা শাখার প্রধান তৌহিদ রেজা বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানটি লাভজনক হওয়া সত্ত্বেও চুক্তি অনুযায়ী ঋণ পরিশোধে কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। মাহমুদুর রহমান মান্না ঋণখেলাপি হওয়ার পরও বকেয়া পরিশোধে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেননি। বাধ্য হয়েই আমরা কলব্যাক নোটিশ জারি করেছি।’

তিনি আরও জানান, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বকেয়া পরিশোধ না হলে ব্যাংক আইন অনুযায়ী পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।