নিজস্ব প্রতিবেদক :
ধানের শীষ পেটের বিষ হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, এদেশের মানুষ আবারো নৌকা চায়। ধানের শীষ পেটের বিষ আর খেতে চায় না।
বুধবার (৫ জুলাই) সকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সঙ্গে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ শাখা ও সহযোগী সংগঠনগুলোর সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের যৌথসভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এই মুহূর্তেও বিএনপিসহ তাদের সমমনা দলগুলো গুজব নিয়ে ব্যস্ত। তারা ভোটারদের কাছে যাচ্ছে না। তারা যাচ্ছে বিদেশিদের কাছে। অনেক মালা গেঁথে আটলান্টিকের দিকে তাকিয়ে আছে। তারা ভাবছে বিদেশি প্রতিনিধি এসেই ভিসানীতি দেবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, অন্ধকারে ঢিল ছুড়ে লাভ নেই। বিরোধীরা বার বার অন্ধকারে ঢিল ছুড়েছে। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন যেভাবে সুষ্ঠু অবাধ নিরপেক্ষ হয়েছে, আগামী জাতীয় নির্বাচনও এ ধারাবাহিকতায় হবে।
তিনি বলেন, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে অনেকে প্রচার করেছে। মূলত নির্বাচনে ফরমালি অংশ না নিয়ে বিরোধী দলগুলো অপপ্রচার করছে। প্রতিটি নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে। জনগণ লাইনে দাঁড়িয়ে সুশৃংখলভাবে ভোট দিয়েছে। ভোট প্রদানে বড় ধরনের কোনো বিশৃঙ্খলা ঘটেনি। বিএনপি ও তাদের জোটের লোকেরা নির্বাচনে যোগ না দেওয়ার পরেও বড় দল হিসেবে আওয়ামী লীগ, ছোটখাটো আরো কিছু দল এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ৫০ শতাংশ ভোট টার্ন ওভার হয়েছে। এই অপপ্রচার একেবারে সত্য নয়। এটা নিতান্তই অপপ্রচার। এই অপপ্রচারের জবাবে আমি সত্য ঘটনা তুলে ধরছি।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থাকে একটি প্রতিষ্ঠান থেকে আধুনিকায়ন করার পাশাপাশি নির্বাচন ব্যবস্থাকে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা করেছেন শেখ হাসিনা। ইসি গঠনে সেটি প্রমাণ হয়েছে। এবার ইসি গঠনের জন্য পার্লামেন্টে ইন্ডিপেন্ডেন্ট আইন প্রণয়ন করা হয়েছে।
সিটি করপোরেশ নির্বাচনের মতোই দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে মন্তব্য করে সেতুমন্ত্রী বলেন, সিটি নির্বাচন যেমন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে, আগামী জাতীয় নির্বাচনও তেমন সুষ্ঠু হবে। এতে সরকার কোনো হস্তক্ষেপ করবে না। নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে যারা প্রশ্ন করেন, গুজব ছড়ান, ষড়যন্ত্র করেন তাদের শিক্ষা নেওয়া উচিত।
বিএনপির উদ্দেশে সেতুমন্ত্রী বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন আর তিন-চার মাস বাকি। বিএনপি বিদেশিদের ওপর তাকিয়ে রয়েছে যে কার ওপর তারা ভিসা নীতি প্রয়োগ করবে। পত্র-পত্রিকায় দেখতে পাচ্ছি বিদেশিদের প্রতিনিধিদল আসছে। বিএনপি ভাবছে প্রতিনিধি দল এসেই সরকারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেবে ও নতুন ভিসা নীতি দেবে। তারা (বিএনপি) দিবাস্বপ্ন দেখছে। তারা এখনো নালিশের মধ্যে নিমগ্ন। তাদের নালিশ জনগণের কাছে নয় বরং বিদেশিদের কাছে। বিএনপির কিছু বলার থাকলে আমাদের কাছে বলতে পারে, সেটি হবে বন্ধুসুলভ আচরণ। এখানে কোনো প্রভুত্বের কিছু নেই। বিএনপি প্রভুদের কাছে নালিশ করে, বন্ধুদের কাছে নালিশ করে না। সব পরামর্শ আমাদের গ্রহণ করতে হবে এমন কোনো কথা নেই।
আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের সংবিধানকে অনুসরণ করে জানিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা চিরজীবন সরকারে ছিলাম না, অথবা নাও থাকতে পারি। বিরোধী দলে গেলেও আমরা সংবিধান মেনে চলি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ফখরুল বলেছেন ভাঙা নৌকায় নাকি দেশের মানুষ চড়বে না। ধানের শীষ পেটের বিষ হয়েছে। উন্নয়নের জন্য মানুষ নৌকা চায়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, মঙ্গলবার (৪ জুলাই) সংসদে একটি আইন পাস হয়েছে। এটি অত্যন্ত যুক্তিসংগত ও ন্যায়সংগত। নির্বাচনে একটি কিংবা দুইটি কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা হলে, এই ১/২ কেন্দ্রে ভোট বন্ধ হতে পারে। কিন্তু গোটা নির্বাচন কেন বন্ধ করতে হবে। এটা অযৌক্তিক। এটা কোন গণতান্ত্রিক দেশে আছে? যারা এগুলো বলে আমি তাদের জিজ্ঞেস করতে চাই। এ আইনে সেই বিষয়টিই স্পষ্টভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। পৃথিবীর সব দেশের আইন এরকম… তাহলে আমাদের কেন ভিন্ন কিছু করতে হবে?
যৌথসভায় যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, মাহবুব-উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন, এসএম কামাল হোসেন, অ্যাড. আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাশ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন নাহার চাপা, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল আউয়াল শামীম ও উপ-দপ্তর বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. সায়েম খান উপস্থিত ছিলেন। এসময় সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।