মানিকগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :
চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত স্কোয়াড্রন লিডার আসিম জাওয়াকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়েছে।
শুক্রবার (১০ মে) বিকেল ৩টার দিকে মানিকগঞ্জ জেলা শহরের সেওতা কবরস্থানে নানা মরহুম মোহাম্মদ রউফ খানের কবরেই তাকে দাফন করা হয়।
এর আগে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে নিহত পাইলট আসিম জাওয়াদের মরদেহ বহনকারী বিমানবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার মানিকগঞ্জের শহীদ মিরাজ-তপন স্টেডিয়ামে অবতরণ করে। এর কিছুক্ষণ পর হেলিকপ্টার থেকে তার কফিনবন্দি মরদেহ কাঁধে করে নামিয়ে আনেন বিমানবাহিনী সদস্যরা। পরে নিহত আসিমকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। ছেলের কফিনবন্দি মরদেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পরেন মা নিলুফা খানমসহ স্বজনরা।
পরে দুপুর ২টার দিকে শহীদ মিরাজ-তপন স্টেডিয়ামে জুমার নামাজের পর পাইলট আসিম জাওয়াদের তৃতীয় জানাজা সম্পন্ন হয়। এর পর লাশবাহী গাড়িতে করে মরদেহ সেওতা কবরস্থানে নেওয়া হয়। সেখানে আনুষ্ঠানিকতা শেষে নানা মরহুম মোহাম্মদ রউফ খানের কবরে দাফন করা হয় এই পাইলটকে।
এদিকে পাইলট আসিম জাওয়াদের মরদেহ শেষবারের মতো এক নজর দেখতে সকাল থেকেই স্টেডিয়ামে ভিড় করতে থাকেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষসহ তার স্বজনরা। আসিমের মরদেহ বহনকারী বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার করে তার বাবা আমানউল্লাহ, স্ত্রী অন্তরা আক্তার ও দুই সন্তানসহ স্বজনরা সেখানে নামেন। এ সময় এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।
আসিম জাওয়াদের মামা সুরুজ খান জানান, মৃত্যু সংবাদ শোনার পর থেকে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এনেছে। শেষ বারের মতো একনজর দেখতে স্টেডিয়ামে বহু মানুষ ভিড় করে। সবাই তাকে ভালোবাসে। অনেক মেধাবী ছিলেন তিনি। বাবা-মা তাকে ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার বানাতো চাইলেও স্বপ্ন ছিল পাইলট হওয়ার। হয়েছিলেনও তাই কিন্তু অকালে প্রাণ ঝড়ে গেলো।
স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদ ১৯৯২ সালের ২০ মার্চ মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়ার গোপালপুর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
তার বাবার নাম ডা. মো. আমান উল্লাহ এবং মায়ের নাম নীলুফা আক্তার খানম। আসিম জাওয়াদ ২০০৭ সালে সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল থেকে এসএসসি, ২০০৯ সালে সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ২০১২ সালে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস থেকে বিএসসি (এ্যারো) সম্পন্ন করেন।
নিহত আসিম জাওয়াদের গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার দরগ্রাম ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের ডা. মোহাম্মদ আমানউল্লার ছেলে। তার মায়ের নাম নিলুফা খানম। নিহত পাইলট আসিম মৃত্যুকালে স্ত্রী, ছয় বছর বয়সী কন্যা আইজা ও এক পুত্র সন্তান রেখে গেছেন।