Dhaka শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৯ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশকে ১১০ দেশের সুপারিশ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : ১২:৩১:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৩
  • ১৯৫ জন দেখেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থার পর্যালোচনায় বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নয়নে ১১০টি দেশ তাদের চূড়ান্ত সুপারিশ তুলে ধরেছে। জেনেভায় ইউনিভার্সাল পিরিয়ডিক রিভিউ (ইউপিআর) সভায় ৩০১টি সুপারিশ প্রতিবেদন আকারে উপস্থাপন করা হয়।

বুধবার (১৫ নভেম্বর) রাতে জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের ‘ইউনিভার্সাল পিরিয়ডিক রিভিউ (ইউপিআর)’ বা সর্বজনীন পুনর্বীক্ষণ পদ্ধতির ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে বাংলাদেশের ইউপিআর প্রতিবেদনের খসড়া গৃহীত হয়েছে।

খসড়ায় অনেক দেশ থেকে একই বিষয়ে একই ধরনের সুপারিশ আসায় সংখ্যাটি এত বড় দেখা যাচ্ছে, প্রকৃত সুপারিশের সংখ্যা কিছুটা কম হবে।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এ পর্যালোচনাসভায় বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিলেও সুপারিশমালা অনুমোদনের সভায় তিনি উপস্থিত ছিলেন না। জেনেভায় জাতিসংঘ মিশনে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মোহাম্মদ সুফিউর রহমান আইনমন্ত্রীর পরিবর্তে সভায় বক্তব্য দেন।

বিভিন্ন বিষয়ে সুপারিশ প্রদান করা দেশগুলোকে ধন্যবাদ জানিয়ে সুফিউর রহমান বলেন, বাংলাদেশ এসব সুপারিশ পর্যালোচনা করে তার সিদ্ধান্ত আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় মানবাধিকার পরিষদের ৫৫তম অধিবেশনের আগেই জানিয়ে দেবে।

এসব সুপারিশের মধ্যে রয়েছে— বহুল আলোচিত গুমবিষয়ক সনদ ও নির্যাতনবিরোধী সনদের অতিরিক্ত চুক্তি অনুমোদন, গুমের ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও স্বচ্ছ তদন্ত, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সদস্যদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগের স্বাধীন তদন্ত এবং দোষীদের বিচার ও সাজার ব্যবস্থা করা।

সুপারিশের মধ্যে আরও রয়েছে মৃত্যুদণ্ডের বিধান বিলোপ ও সব ফাঁসির দণ্ড কমিয়ে কারাদণ্ড দেওয়া, সাইবার নিরাপত্তা আইনের সংশোধন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, সভা ও সংগঠনের অধিকার নিশ্চিতের ব্যবস্থা করা, অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা, মানবাধিকার রক্ষী, নাগরিক সমাজ বা এনজিও সদস্যদের হয়রানি ও ভীতি প্রদর্শন বন্ধ করা, নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধ, নাবালিকাদের বিয়ে বন্ধে আইন সংশোধন।

এ ছাড়া ক্ষুদ্র জাতিসত্তা ও বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী, ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকার নিশ্চিত করা, বৈষম্যবিরোধী আইন প্রণয়ন, ন্যূনতম জাতীয় মজুরি ঘোষণা, শ্রমিকদের আইএলও স্বীকৃত সব অধিকার নিশ্চিত করা ইত্যাদিও রয়েছে সুপারিশে।

সোমবার বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর পর্যালোচনায় সরকারের পক্ষ থেকে তৃতীয় ইউপিআরে উঠে আসা ১৭৬টি সুপারিশ বাস্তবায়নে অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরেন আইনমন্ত্রী। এর পর জাতিসংঘের সদস্য ১৯৩ দেশের মধ্যে ১১০ দেশ তাদের মূল্যায়ন ও সুপারিশ তুলে ধরে। ওই সুপারিশগুলোর সংকলন প্রতিবেদন তৈরি করার দায়িত্ব পড়ে পাকিস্তান, কিউবা ও রোমানিয়ার ওপর। বুধবার জেনেভায় জাতিসংঘ দপ্তরে রোমানিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি রাজভান রুসু প্রতিবেদনটি অধিবেশনে পেশ করেন। খসড়া প্রতিবেদন নিয়ে কোনো রাষ্ট্র আপত্তি না করায় তা গৃহীত হয়।

বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির পর্যালোচনায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, জার্মানিসহ ইউরোপের দেশগুলোর পক্ষ থেকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, নির্বাচন, শ্রম অধিকার, ভিন্নমত দমন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের জবাবদিহি না থাকার বিষয়গুলোতে বেশি জোর দিতে দেখা গেছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশকে ১১০ দেশের সুপারিশ

প্রকাশের সময় : ১২:৩১:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থার পর্যালোচনায় বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নয়নে ১১০টি দেশ তাদের চূড়ান্ত সুপারিশ তুলে ধরেছে। জেনেভায় ইউনিভার্সাল পিরিয়ডিক রিভিউ (ইউপিআর) সভায় ৩০১টি সুপারিশ প্রতিবেদন আকারে উপস্থাপন করা হয়।

বুধবার (১৫ নভেম্বর) রাতে জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের ‘ইউনিভার্সাল পিরিয়ডিক রিভিউ (ইউপিআর)’ বা সর্বজনীন পুনর্বীক্ষণ পদ্ধতির ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে বাংলাদেশের ইউপিআর প্রতিবেদনের খসড়া গৃহীত হয়েছে।

খসড়ায় অনেক দেশ থেকে একই বিষয়ে একই ধরনের সুপারিশ আসায় সংখ্যাটি এত বড় দেখা যাচ্ছে, প্রকৃত সুপারিশের সংখ্যা কিছুটা কম হবে।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এ পর্যালোচনাসভায় বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিলেও সুপারিশমালা অনুমোদনের সভায় তিনি উপস্থিত ছিলেন না। জেনেভায় জাতিসংঘ মিশনে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মোহাম্মদ সুফিউর রহমান আইনমন্ত্রীর পরিবর্তে সভায় বক্তব্য দেন।

বিভিন্ন বিষয়ে সুপারিশ প্রদান করা দেশগুলোকে ধন্যবাদ জানিয়ে সুফিউর রহমান বলেন, বাংলাদেশ এসব সুপারিশ পর্যালোচনা করে তার সিদ্ধান্ত আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় মানবাধিকার পরিষদের ৫৫তম অধিবেশনের আগেই জানিয়ে দেবে।

এসব সুপারিশের মধ্যে রয়েছে— বহুল আলোচিত গুমবিষয়ক সনদ ও নির্যাতনবিরোধী সনদের অতিরিক্ত চুক্তি অনুমোদন, গুমের ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও স্বচ্ছ তদন্ত, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সদস্যদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগের স্বাধীন তদন্ত এবং দোষীদের বিচার ও সাজার ব্যবস্থা করা।

সুপারিশের মধ্যে আরও রয়েছে মৃত্যুদণ্ডের বিধান বিলোপ ও সব ফাঁসির দণ্ড কমিয়ে কারাদণ্ড দেওয়া, সাইবার নিরাপত্তা আইনের সংশোধন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, সভা ও সংগঠনের অধিকার নিশ্চিতের ব্যবস্থা করা, অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা, মানবাধিকার রক্ষী, নাগরিক সমাজ বা এনজিও সদস্যদের হয়রানি ও ভীতি প্রদর্শন বন্ধ করা, নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধ, নাবালিকাদের বিয়ে বন্ধে আইন সংশোধন।

এ ছাড়া ক্ষুদ্র জাতিসত্তা ও বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী, ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকার নিশ্চিত করা, বৈষম্যবিরোধী আইন প্রণয়ন, ন্যূনতম জাতীয় মজুরি ঘোষণা, শ্রমিকদের আইএলও স্বীকৃত সব অধিকার নিশ্চিত করা ইত্যাদিও রয়েছে সুপারিশে।

সোমবার বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর পর্যালোচনায় সরকারের পক্ষ থেকে তৃতীয় ইউপিআরে উঠে আসা ১৭৬টি সুপারিশ বাস্তবায়নে অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরেন আইনমন্ত্রী। এর পর জাতিসংঘের সদস্য ১৯৩ দেশের মধ্যে ১১০ দেশ তাদের মূল্যায়ন ও সুপারিশ তুলে ধরে। ওই সুপারিশগুলোর সংকলন প্রতিবেদন তৈরি করার দায়িত্ব পড়ে পাকিস্তান, কিউবা ও রোমানিয়ার ওপর। বুধবার জেনেভায় জাতিসংঘ দপ্তরে রোমানিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি রাজভান রুসু প্রতিবেদনটি অধিবেশনে পেশ করেন। খসড়া প্রতিবেদন নিয়ে কোনো রাষ্ট্র আপত্তি না করায় তা গৃহীত হয়।

বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির পর্যালোচনায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, জার্মানিসহ ইউরোপের দেশগুলোর পক্ষ থেকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, নির্বাচন, শ্রম অধিকার, ভিন্নমত দমন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের জবাবদিহি না থাকার বিষয়গুলোতে বেশি জোর দিতে দেখা গেছে।