Dhaka বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মাদারীপুরে দুটি গ্রামীণ সড়কের ৮ কিলোমিটার মরণ ফাঁদ

মাদারীপুর জেলা প্রতিনিধি  :

মাদারীপুরে দুটি গ্রামীণ সড়কের সাড়ে ৮ কিলোমিটারের পুরোটাই এখন মরণ ফাঁদ। বৃষ্টিতে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় চরম দুর্ভোগে শিক্ষার্থী ও পথচারী। দীর্ঘদিন ধরে এই অবস্থা চলায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। এ ব্যাপারে এলজিইডির কর্মকর্তার বক্তব্য না পাওয়া গেলেও চলতি অর্থবছরে সড়ক দুটি সংস্কারে কথা জানায় উপজেলা প্রশাসন।

মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাসিরউদ্দিন টুকু মোল্লার বাড়ি থেকে সরদারকান্দি পর্যন্ত সড়কের দুরুত্ব ৪ কিলোমিটার। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করে। অথচ ইটভাটার কাজে প্রতিনিয়ত ব্যবহৃত মাহিন্দ্র ও ট্রাক-পিকআপের কারণে পুরো সড়কজুড়ে তৈরি হয়েছে খানাখন্দ। কোথাও উঁচু, কোথও নিচু। কোথাও আবার ইট সরে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। বৃষ্টির পানি জমে থাকায় বেড়েছে ভোগান্তি। বন্ধ হয়ে গেছে যানবাহন চলাচল। পাঁয়ে হেঁটে চলাচল করাও এখন অস্বস্তিকর হয়ে পড়েছে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও পড়েন চরম বিড়ম্বনায়।

এদিকে, পখিরা বাজার থেকে শুরু হয়ে আজিজুল মহাজনের বাড়ি পর্যন্ত সাড়ে ৪ কিলোমিটার সড়কের বেহাল দশা। বৃষ্টির পানিতে পুরো সড়ক এখন হাঁটু কাঁদায় ভরা। জীবিকার তাগিয়ে চলাচল করছে তিন চাকার যানবাহন। তাও পুরো রাস্তা ঠেলে নিতে হয়। মাঝে মাঝে কাঁদায় আটকে যায় গাড়ি। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় রোগী নিয়ে হাসপাতালে আসতে ভোগান্তি বেড়েছে কয়েকগুণ। এলাকাবাসীর অভিযোগ, একাধিকবার পাকা সড়ক নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানালেও নেওয়া কোনো হয়নি ব্যবস্থা। ফলে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।

পখিরা গ্রামের বাসিন্দা রোমান আহম্মেদ বলেন, যেখানে পাকা সড়ক আছে, সেখানে পুণরায় সড়কে কাজ হচ্ছে। আমাদের এলাকায় এতো ঝুঁকিপূর্ণ সড়ক, তারপরও কোনো ব্যবস্থা নেই। আমরা দ্রুত এই সড়কটি পাকা চাই। তাহলে এলাকার মানুষ অনেক উপকৃত হবেন।

ভ্যানচালক জালাল মৃধা বলেন, একসঙ্গে দুই থেকে তিনজন মানুষ লাগে ভ্যান ঢেলে আনতে। এলাকার মানুষ কৃষিকাজও করতে পারছে না ঠিক মতো। কৃষিপণ্য আনা নেওয়ায় চরম ভোগান্তি হচ্ছে। আমরা এর থেকে পরিত্রাণ চাই।

জাজিরা গ্রামের বাসিন্দা আবুল বাশার বলেন, আমার শহরের খুব কাছাকাছি থেকেও পাকা সড়ক না থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়ছি। এলাকার সবাই কষ্টে আছে। কবে এখানে উন্নতমানের সড়ক হবে, সেই অপেক্ষায় আছে এলাকাবাসী।

একই গ্রামের ৬০ বছর বয়সী সাবিদা বেগম বলেন, পুরো রাস্তাই ঝুঁকিপূর্ণ। চলার মতো কোনো ব্যবস্থা নেই। কোনো রোগী নিয়ে যাওয়া যায় না। কোনো যানবাহন এখানে যেতে চায় না। আগে ট্রলারে যাতায়াত করতাম, এখন সেটিও বন্ধও হয়ে গেছে। আমরা এখন ভোগান্তির শেষ সীমানাই পৌঁছে গেছি।

২০১৯-২০ অর্থ বছরে পখিরার সড়কটি খোঁয়াজপুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ইটের সোলিং-এর রাস্তা নির্মানের কথা থাকলেও অদৃশ্য কারণে অসমাপ্ত রাখা হয়। আর পাঁচখোলার সড়কটি কবে সংস্থার হয়েছে তার কোনোই তথ্য নেই কারই কাছে। এদিকে, সদর উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মনোয়ার হোসেন রাজধানী ঢাকায় চিকিৎসাধীন থাকায় তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

অবশ্য, চলতি অর্থবছরেই সড়ক দুটি সংস্কারের আশ্বাস দেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াদিয়া শাবাব।

তিনি বলেন, সদর উপজেলার বেশকিছু গ্রামীণ সড়ক ঝুঁকিপূর্ণ। সরেজমিন পরির্দশন করে গুরুত্ব বিবেচনা করে সড়কগুলো মেরামত বা সংস্কার করা হবে। প্রয়োজনে নতুন করে নির্মাণও করা হবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

চলতি বর্ষা যশোরের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়ক চলাচলের অযোগ্য, দুর্ভোগে পথচারীরা

মাদারীপুরে দুটি গ্রামীণ সড়কের ৮ কিলোমিটার মরণ ফাঁদ

প্রকাশের সময় : ১১:৩৩:০৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫

মাদারীপুর জেলা প্রতিনিধি  :

মাদারীপুরে দুটি গ্রামীণ সড়কের সাড়ে ৮ কিলোমিটারের পুরোটাই এখন মরণ ফাঁদ। বৃষ্টিতে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় চরম দুর্ভোগে শিক্ষার্থী ও পথচারী। দীর্ঘদিন ধরে এই অবস্থা চলায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। এ ব্যাপারে এলজিইডির কর্মকর্তার বক্তব্য না পাওয়া গেলেও চলতি অর্থবছরে সড়ক দুটি সংস্কারে কথা জানায় উপজেলা প্রশাসন।

মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাসিরউদ্দিন টুকু মোল্লার বাড়ি থেকে সরদারকান্দি পর্যন্ত সড়কের দুরুত্ব ৪ কিলোমিটার। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করে। অথচ ইটভাটার কাজে প্রতিনিয়ত ব্যবহৃত মাহিন্দ্র ও ট্রাক-পিকআপের কারণে পুরো সড়কজুড়ে তৈরি হয়েছে খানাখন্দ। কোথাও উঁচু, কোথও নিচু। কোথাও আবার ইট সরে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। বৃষ্টির পানি জমে থাকায় বেড়েছে ভোগান্তি। বন্ধ হয়ে গেছে যানবাহন চলাচল। পাঁয়ে হেঁটে চলাচল করাও এখন অস্বস্তিকর হয়ে পড়েছে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও পড়েন চরম বিড়ম্বনায়।

এদিকে, পখিরা বাজার থেকে শুরু হয়ে আজিজুল মহাজনের বাড়ি পর্যন্ত সাড়ে ৪ কিলোমিটার সড়কের বেহাল দশা। বৃষ্টির পানিতে পুরো সড়ক এখন হাঁটু কাঁদায় ভরা। জীবিকার তাগিয়ে চলাচল করছে তিন চাকার যানবাহন। তাও পুরো রাস্তা ঠেলে নিতে হয়। মাঝে মাঝে কাঁদায় আটকে যায় গাড়ি। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় রোগী নিয়ে হাসপাতালে আসতে ভোগান্তি বেড়েছে কয়েকগুণ। এলাকাবাসীর অভিযোগ, একাধিকবার পাকা সড়ক নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানালেও নেওয়া কোনো হয়নি ব্যবস্থা। ফলে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।

পখিরা গ্রামের বাসিন্দা রোমান আহম্মেদ বলেন, যেখানে পাকা সড়ক আছে, সেখানে পুণরায় সড়কে কাজ হচ্ছে। আমাদের এলাকায় এতো ঝুঁকিপূর্ণ সড়ক, তারপরও কোনো ব্যবস্থা নেই। আমরা দ্রুত এই সড়কটি পাকা চাই। তাহলে এলাকার মানুষ অনেক উপকৃত হবেন।

ভ্যানচালক জালাল মৃধা বলেন, একসঙ্গে দুই থেকে তিনজন মানুষ লাগে ভ্যান ঢেলে আনতে। এলাকার মানুষ কৃষিকাজও করতে পারছে না ঠিক মতো। কৃষিপণ্য আনা নেওয়ায় চরম ভোগান্তি হচ্ছে। আমরা এর থেকে পরিত্রাণ চাই।

জাজিরা গ্রামের বাসিন্দা আবুল বাশার বলেন, আমার শহরের খুব কাছাকাছি থেকেও পাকা সড়ক না থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়ছি। এলাকার সবাই কষ্টে আছে। কবে এখানে উন্নতমানের সড়ক হবে, সেই অপেক্ষায় আছে এলাকাবাসী।

একই গ্রামের ৬০ বছর বয়সী সাবিদা বেগম বলেন, পুরো রাস্তাই ঝুঁকিপূর্ণ। চলার মতো কোনো ব্যবস্থা নেই। কোনো রোগী নিয়ে যাওয়া যায় না। কোনো যানবাহন এখানে যেতে চায় না। আগে ট্রলারে যাতায়াত করতাম, এখন সেটিও বন্ধও হয়ে গেছে। আমরা এখন ভোগান্তির শেষ সীমানাই পৌঁছে গেছি।

২০১৯-২০ অর্থ বছরে পখিরার সড়কটি খোঁয়াজপুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ইটের সোলিং-এর রাস্তা নির্মানের কথা থাকলেও অদৃশ্য কারণে অসমাপ্ত রাখা হয়। আর পাঁচখোলার সড়কটি কবে সংস্থার হয়েছে তার কোনোই তথ্য নেই কারই কাছে। এদিকে, সদর উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মনোয়ার হোসেন রাজধানী ঢাকায় চিকিৎসাধীন থাকায় তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

অবশ্য, চলতি অর্থবছরেই সড়ক দুটি সংস্কারের আশ্বাস দেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াদিয়া শাবাব।

তিনি বলেন, সদর উপজেলার বেশকিছু গ্রামীণ সড়ক ঝুঁকিপূর্ণ। সরেজমিন পরির্দশন করে গুরুত্ব বিবেচনা করে সড়কগুলো মেরামত বা সংস্কার করা হবে। প্রয়োজনে নতুন করে নির্মাণও করা হবে।