Dhaka মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মাদারীপুরে ছাত্রলীগের দুইপক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ আহত ৮

মাদারীপুর জেলা প্রতিনিধি : 

মাদারীপুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে এক পথচারী গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন অন্তত ৮ জন। প্রকাশ্যে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষ ও বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় পুরো শহরজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক।

রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টার দিকে শহরের ইটেরপুল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধ সোহাগ তালুকদার (৩০) শহরের হরিকুমারিয়া এলাকার দেলোয়ার তালুকদারের ছেলে। তিনি পেশায় ইজিবাইকের চালক। আহত পুলিশ সদস্য রাজিবকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দুপুরে মাদারীপুর আদালত প্রাঙ্গণে পূর্বের মামলার কাজে যান ছাত্রলীগ নেতা সজীব সরদার ও সুমন কাজী গ্রুপের লোকজন। দু’পক্ষ আদালত প্রাঙ্গণে মুখোমুখি হওয়ায় তাদের মধ্যে প্রথমে তর্কতর্কি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে শহরের ইটেরপুল এলাকায় দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। ঘণ্টাব্যাপী চলে সংঘর্ষ।

এ সময় বেশ কয়েকটি হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে যাত্রী ও পথচারীদের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। খবর পেয়ে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে পথচারী ইজিবাইক চালক সোহাগ তালুকদার গুলিবিদ্ধসহ আহত হয় অন্তত ৮ জন। আহতদের উদ্ধার করে ভর্তি করা হয়েছে জেলা সদর হাসপাতালে। তাদের মধ্যে রাজীব নামে এক পুলিশ সদস্যও রয়েছে।

আহত সোহাগ তালুকদারের স্ত্রী মাকসুদা বেগম বলেন, আমার ছেলেকে স্কুল থেকে আনতে স্বামী বাসা থেকে বের হয়। এ সময় সংঘর্ষের মধ্যে সে পড়ে যায়। পরে পুলিশের গুলিতে সে আহত হয়। যারা প্রকাশ্যে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়, তাদের কিছুই বলে না, অথচ পুলিশ পথচারীদের ওপর এমন গুলি করে। এ ঘটনার বিচার হওয়া উচিৎ।

প্রত্যক্ষদর্শী এক দোকানদার জানান, দু’পক্ষ বোমা ফাটিয়ে ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে জড়ায়। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে ভয়ে দোকান বন্ধ করে রাখা হয়। তাদের হাতে বড় বড় অস্ত্র ছিল, কাছাকাছি থেকেও পুলিশ অসহায় ছিল।

মাদারীপুরের ২৫০ শয্যা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. রিয়াদ মাহমুদ বলেন, আহত হয়ে কয়েকজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে এক পুলিশ সদস্য ও এক ইজিবাইক চালকও রয়েছেন। ইজিবাইক চালকের মাথায় গুলি রয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএইচএম সালাউদ্দিন জানান, আধিপত্যের জেরেই এই সংঘর্ষের ঘটনা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে থানা পুলিশের পাশাপাশি জেলা পুলিশও ফাঁকা গুলি ছোড়ে। সংঘর্ষে ৭-৮ জন আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে এক পুলিশ সদস্য রয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবেলায় মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।

প্রসঙ্গত, অভিযুক্ত সজীব সরদার মাদারীপুর জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। আর সুমন কাজী সহ-সভাপতি। সজীব মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শাজাহান খানের অনুসারী। অপরদিকে সুমন ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য বাহাউদ্দিন নাছিমের সমর্থক।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মাদারীপুরে ছাত্রলীগের দুইপক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ আহত ৮

প্রকাশের সময় : ১০:০৬:৫০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

মাদারীপুর জেলা প্রতিনিধি : 

মাদারীপুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে এক পথচারী গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন অন্তত ৮ জন। প্রকাশ্যে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষ ও বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় পুরো শহরজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক।

রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টার দিকে শহরের ইটেরপুল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধ সোহাগ তালুকদার (৩০) শহরের হরিকুমারিয়া এলাকার দেলোয়ার তালুকদারের ছেলে। তিনি পেশায় ইজিবাইকের চালক। আহত পুলিশ সদস্য রাজিবকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দুপুরে মাদারীপুর আদালত প্রাঙ্গণে পূর্বের মামলার কাজে যান ছাত্রলীগ নেতা সজীব সরদার ও সুমন কাজী গ্রুপের লোকজন। দু’পক্ষ আদালত প্রাঙ্গণে মুখোমুখি হওয়ায় তাদের মধ্যে প্রথমে তর্কতর্কি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে শহরের ইটেরপুল এলাকায় দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। ঘণ্টাব্যাপী চলে সংঘর্ষ।

এ সময় বেশ কয়েকটি হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে যাত্রী ও পথচারীদের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। খবর পেয়ে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে পথচারী ইজিবাইক চালক সোহাগ তালুকদার গুলিবিদ্ধসহ আহত হয় অন্তত ৮ জন। আহতদের উদ্ধার করে ভর্তি করা হয়েছে জেলা সদর হাসপাতালে। তাদের মধ্যে রাজীব নামে এক পুলিশ সদস্যও রয়েছে।

আহত সোহাগ তালুকদারের স্ত্রী মাকসুদা বেগম বলেন, আমার ছেলেকে স্কুল থেকে আনতে স্বামী বাসা থেকে বের হয়। এ সময় সংঘর্ষের মধ্যে সে পড়ে যায়। পরে পুলিশের গুলিতে সে আহত হয়। যারা প্রকাশ্যে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়, তাদের কিছুই বলে না, অথচ পুলিশ পথচারীদের ওপর এমন গুলি করে। এ ঘটনার বিচার হওয়া উচিৎ।

প্রত্যক্ষদর্শী এক দোকানদার জানান, দু’পক্ষ বোমা ফাটিয়ে ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে জড়ায়। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে ভয়ে দোকান বন্ধ করে রাখা হয়। তাদের হাতে বড় বড় অস্ত্র ছিল, কাছাকাছি থেকেও পুলিশ অসহায় ছিল।

মাদারীপুরের ২৫০ শয্যা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. রিয়াদ মাহমুদ বলেন, আহত হয়ে কয়েকজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে এক পুলিশ সদস্য ও এক ইজিবাইক চালকও রয়েছেন। ইজিবাইক চালকের মাথায় গুলি রয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএইচএম সালাউদ্দিন জানান, আধিপত্যের জেরেই এই সংঘর্ষের ঘটনা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে থানা পুলিশের পাশাপাশি জেলা পুলিশও ফাঁকা গুলি ছোড়ে। সংঘর্ষে ৭-৮ জন আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে এক পুলিশ সদস্য রয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবেলায় মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।

প্রসঙ্গত, অভিযুক্ত সজীব সরদার মাদারীপুর জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। আর সুমন কাজী সহ-সভাপতি। সজীব মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শাজাহান খানের অনুসারী। অপরদিকে সুমন ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য বাহাউদ্দিন নাছিমের সমর্থক।