Dhaka বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মাদককাণ্ড প্রসঙ্গে এক বছর পর মুখ খুললেন সাফা কবির

  • বিনোদন ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ০৩:১০:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ১৭৭ জন দেখেছেন

বিনোদন ডেস্ক : 

ছোটপর্দার অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী সাফা কবির। অসংখ্য নাটকে অভিনয় করে পেয়েছেন দর্শকের ভালোবাসা। দুর্দান্ত অভিনয় করলেও গত বছরের শেষ দিকে মাদককাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে কয়েকজন অভিনেত্রীর সঙ্গে তারও নাম উঠে আসে। বার্তা আদান-প্রদানের প্ল্যাটফর্ম হোয়াটসঅ্যাপের একটি বিশেষ গ্রুপের মাধ্যমে নিয়মিত মাদক সংগ্রহের অভিযোগ উঠেছিল তখন। এ নিয়ে তখন একদমই চুপ ছিলেন সাফা কবির।

এ অভিনেত্রী তখন বিষয়টি নিয়ে কথা বলা বন্ধ রাখা ছাড়াও সোশ্যাল মিডিয়া থেকেও আড়ালে চলে যান। তখন বিষয়টি নিয়ে অনেক চর্চা হয়। তবে এবার এ নিয়ে মুখ খুললেন সাফা কবির। জানিয়েছেন, তাকে জড়িয়ে মাদককাণ্ডের কথা দাবি করার পর ক্যারিয়ারে ব্যাপক প্রভাব পড়েছিল।

সম্প্রতি একটি পডকাস্ট শোয়ে অংশ নিয়েছিলেন সাফা কবির। সেখানে ক্যারিয়ার ও জীবনের বিভিন্ন প্রসঙ্গে কথা বলেন তিনি। তখন বলেন, সংবাদটি দেখার পর একদম শকড হয়েছিলাম। কী হচ্ছে, এমনটাই শুধু ভাবছিলাম। এটা কেমন নিউজ। তারপর কেউ আর কোনো আপডেট দিতে পারল না। এ খবর প্রকাশের পর আমার ক্ষতি হলো। তিন-চারটি মেয়েকে নিয়ে যে নিউজ হলো, একটিবার তাদের কথা চিন্তা করল না। তাদের জীবনের কী হবে?

এ অভিনেত্রীর ভাষ্যমতে―না জেনে কারও সম্পর্কে কোনো কিছু সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়া যেমন ঠিক নয়, তেমনি প্রমাণ ছাড়া কাউকে অপরাধী ধরে নেয়াও অন্যায়। সাফা কবির বলেন, আমরা হুজুগে অনেক কিছুই করে ফেলি। কিন্তু একবারও চিন্তা করি না, এ ধরনের কর্মকাণ্ড কী প্রভাব ফেলবে মানুষটির জীবনে। আমাদের একটি পরিবার আছে, ওয়ার্ক লাইফ আছে, কেউ কি এসব চিন্তা করে?

তিনি বলেন, মানুষ এমনিতেই মিডিয়াকে ভালো চোখে দেখে না। এ ধরনের খবরের জন্য মা-বাবাদের মধ্যে ধারণা সৃষ্টি হয়, তাদের সন্তানরা সুরক্ষিত না এখানে, তাদের কাজ করতে দেয়া যাবে না এখানে। আমার কাছে মনে হয়, কোনো কিছু করার আগে অন্তত দু’বার ভেবে নেয়া প্রয়োজন।

এ খবর ছড়ানোর পর ধারাবাহিকভাবে কাজ কমতে থাকে সাফা কবিরের। তখনকার দুর্বিষহ স্মৃতিচারণা করে তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার সংবাদটি প্রকাশ করা হয়। রোববার একটি ব্র্যান্ডের সঙ্গে চুক্তির কথা ছিল। কিন্তু এ ধরনের খবরের জন্য সেটি বাতিল হয়। তাদের অনেক বোঝানোর চেষ্টা করেছিলাম যে, এটি শুধু একটি নিউজ মাত্র। এর সঙ্গে কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই আমার। কিন্তু তাদের কাছে কীভাবে প্রমাণ করব আমি।

সাফা কবির বলেন, ‘আমার কাছে প্রমাণ করার কিছু নেই, বোঝানো ছাড়া। আমার সিনিয়র শিল্পীরা আমার সঙ্গে কাজ বাতিল করে দিচ্ছিল। বিতর্ক এড়াতে আমার সঙ্গে কেউ কাজ করতে চাইছিল না। আমিও বুঝতে পারছিলাম সোশ্যাল মিডিয়ায় এটা নিয়ে ঝড় চলছে।’ এমন কঠিন পরিস্থিতিতে অবশ্য ইন্ডাস্ট্রির কয়েকজন বন্ধুকে পাশে পেয়েছিলাম। ফলে সহজেই পরিস্থিতি সামলে নিতে পেরেছেন বলেও জানিয়েছেন এ অভিনেত্রী।

সেই কঠিন সময় পাশে পেয়েছিলেন শোবিজের কয়েকজন বন্ধুকে। সাফার কথায়, ‘সে সময় আমার শোবিজের বন্ধুরা পাশে দাঁড়িয়েছিল। তৌসিফ মাহবুব তখন বলেছিল, আমি সাফার সঙ্গে কাজ করব। এ ছাড়া জোভান অনেক সহযোগিতা করেছে, সিয়ামও সে সময় মানসিকভাবে পাশে ছিল। আমার এ বন্ধুরা অনেক সুন্দর। এখানে কাজ করে এত ভালো বন্ধু আমি পেয়েছি। অনেকেই বলেন মিডিয়ার মানুষেরা বন্ধু হয় না, আমি এর সঙ্গে কানেক্ট করতে পারি না।’

এর আগে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, মাদক ব্যবসার বিষয়ে মৌখিক স্বীকারোক্তির একপর্যায়ে দীপের মোবাইল ফোনের কললিস্ট ও হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটিং পরীক্ষা করা হয়। এতে জনপ্রিয় কয়েকজন অভিনেত্রীর মাদক সম্পৃক্ততার তথ্য মেলে। এমনকি তাদের পক্ষ থেকে দেওয়া মাদকের অর্ডারসংক্রান্ত কয়েকটি সুনির্দিষ্ট হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটিং রেকর্ডও পাওয়া যায়।

এ প্রসঙ্গে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নারকোটিক্সের সহকারী পরিচালক রাহুল সেন সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন, দীপকে গ্রেফতারের পর তার কাছ থেকে আমরা কয়েকজন প্রথম সারির অভিনেত্রী ও মডেলের মাদক সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছি। এ বিষয়ে এখনও তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এক কর্মকর্তা বলেছিলেন, দীপের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে সাফা, টয়া, তিশা এবং সুনিধি নায়েকের নামে সেভ করা কয়েকটি নম্বর থেকে নিয়মিত মাদকের অর্ডার দেয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়। পরে নম্বরগুলো যাচাইয়ের জন্য ফোন নম্বরের রেজিস্ট্রেশন রেকর্ড সংগ্রহ করা হয়। এতে দেখা যায়, সংশ্লিষ্ট নম্বরগুলো সাফা কবির এবং টয়ার নামেই রেজিস্ট্রেশনকৃত। তবে তানজিন তিশার নম্বরটির রেজিস্ট্রেশন রয়েছে তার মা উম্মে সালমার নামে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংযোগ সড়ক না থাকায় ব্রিজের সুফল পাচ্ছে না মানুষ, ভোগান্তিতে এলাকাবাসী

মাদককাণ্ড প্রসঙ্গে এক বছর পর মুখ খুললেন সাফা কবির

প্রকাশের সময় : ০৩:১০:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বিনোদন ডেস্ক : 

ছোটপর্দার অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী সাফা কবির। অসংখ্য নাটকে অভিনয় করে পেয়েছেন দর্শকের ভালোবাসা। দুর্দান্ত অভিনয় করলেও গত বছরের শেষ দিকে মাদককাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে কয়েকজন অভিনেত্রীর সঙ্গে তারও নাম উঠে আসে। বার্তা আদান-প্রদানের প্ল্যাটফর্ম হোয়াটসঅ্যাপের একটি বিশেষ গ্রুপের মাধ্যমে নিয়মিত মাদক সংগ্রহের অভিযোগ উঠেছিল তখন। এ নিয়ে তখন একদমই চুপ ছিলেন সাফা কবির।

এ অভিনেত্রী তখন বিষয়টি নিয়ে কথা বলা বন্ধ রাখা ছাড়াও সোশ্যাল মিডিয়া থেকেও আড়ালে চলে যান। তখন বিষয়টি নিয়ে অনেক চর্চা হয়। তবে এবার এ নিয়ে মুখ খুললেন সাফা কবির। জানিয়েছেন, তাকে জড়িয়ে মাদককাণ্ডের কথা দাবি করার পর ক্যারিয়ারে ব্যাপক প্রভাব পড়েছিল।

সম্প্রতি একটি পডকাস্ট শোয়ে অংশ নিয়েছিলেন সাফা কবির। সেখানে ক্যারিয়ার ও জীবনের বিভিন্ন প্রসঙ্গে কথা বলেন তিনি। তখন বলেন, সংবাদটি দেখার পর একদম শকড হয়েছিলাম। কী হচ্ছে, এমনটাই শুধু ভাবছিলাম। এটা কেমন নিউজ। তারপর কেউ আর কোনো আপডেট দিতে পারল না। এ খবর প্রকাশের পর আমার ক্ষতি হলো। তিন-চারটি মেয়েকে নিয়ে যে নিউজ হলো, একটিবার তাদের কথা চিন্তা করল না। তাদের জীবনের কী হবে?

এ অভিনেত্রীর ভাষ্যমতে―না জেনে কারও সম্পর্কে কোনো কিছু সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়া যেমন ঠিক নয়, তেমনি প্রমাণ ছাড়া কাউকে অপরাধী ধরে নেয়াও অন্যায়। সাফা কবির বলেন, আমরা হুজুগে অনেক কিছুই করে ফেলি। কিন্তু একবারও চিন্তা করি না, এ ধরনের কর্মকাণ্ড কী প্রভাব ফেলবে মানুষটির জীবনে। আমাদের একটি পরিবার আছে, ওয়ার্ক লাইফ আছে, কেউ কি এসব চিন্তা করে?

তিনি বলেন, মানুষ এমনিতেই মিডিয়াকে ভালো চোখে দেখে না। এ ধরনের খবরের জন্য মা-বাবাদের মধ্যে ধারণা সৃষ্টি হয়, তাদের সন্তানরা সুরক্ষিত না এখানে, তাদের কাজ করতে দেয়া যাবে না এখানে। আমার কাছে মনে হয়, কোনো কিছু করার আগে অন্তত দু’বার ভেবে নেয়া প্রয়োজন।

এ খবর ছড়ানোর পর ধারাবাহিকভাবে কাজ কমতে থাকে সাফা কবিরের। তখনকার দুর্বিষহ স্মৃতিচারণা করে তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার সংবাদটি প্রকাশ করা হয়। রোববার একটি ব্র্যান্ডের সঙ্গে চুক্তির কথা ছিল। কিন্তু এ ধরনের খবরের জন্য সেটি বাতিল হয়। তাদের অনেক বোঝানোর চেষ্টা করেছিলাম যে, এটি শুধু একটি নিউজ মাত্র। এর সঙ্গে কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই আমার। কিন্তু তাদের কাছে কীভাবে প্রমাণ করব আমি।

সাফা কবির বলেন, ‘আমার কাছে প্রমাণ করার কিছু নেই, বোঝানো ছাড়া। আমার সিনিয়র শিল্পীরা আমার সঙ্গে কাজ বাতিল করে দিচ্ছিল। বিতর্ক এড়াতে আমার সঙ্গে কেউ কাজ করতে চাইছিল না। আমিও বুঝতে পারছিলাম সোশ্যাল মিডিয়ায় এটা নিয়ে ঝড় চলছে।’ এমন কঠিন পরিস্থিতিতে অবশ্য ইন্ডাস্ট্রির কয়েকজন বন্ধুকে পাশে পেয়েছিলাম। ফলে সহজেই পরিস্থিতি সামলে নিতে পেরেছেন বলেও জানিয়েছেন এ অভিনেত্রী।

সেই কঠিন সময় পাশে পেয়েছিলেন শোবিজের কয়েকজন বন্ধুকে। সাফার কথায়, ‘সে সময় আমার শোবিজের বন্ধুরা পাশে দাঁড়িয়েছিল। তৌসিফ মাহবুব তখন বলেছিল, আমি সাফার সঙ্গে কাজ করব। এ ছাড়া জোভান অনেক সহযোগিতা করেছে, সিয়ামও সে সময় মানসিকভাবে পাশে ছিল। আমার এ বন্ধুরা অনেক সুন্দর। এখানে কাজ করে এত ভালো বন্ধু আমি পেয়েছি। অনেকেই বলেন মিডিয়ার মানুষেরা বন্ধু হয় না, আমি এর সঙ্গে কানেক্ট করতে পারি না।’

এর আগে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, মাদক ব্যবসার বিষয়ে মৌখিক স্বীকারোক্তির একপর্যায়ে দীপের মোবাইল ফোনের কললিস্ট ও হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটিং পরীক্ষা করা হয়। এতে জনপ্রিয় কয়েকজন অভিনেত্রীর মাদক সম্পৃক্ততার তথ্য মেলে। এমনকি তাদের পক্ষ থেকে দেওয়া মাদকের অর্ডারসংক্রান্ত কয়েকটি সুনির্দিষ্ট হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটিং রেকর্ডও পাওয়া যায়।

এ প্রসঙ্গে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নারকোটিক্সের সহকারী পরিচালক রাহুল সেন সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন, দীপকে গ্রেফতারের পর তার কাছ থেকে আমরা কয়েকজন প্রথম সারির অভিনেত্রী ও মডেলের মাদক সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছি। এ বিষয়ে এখনও তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এক কর্মকর্তা বলেছিলেন, দীপের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে সাফা, টয়া, তিশা এবং সুনিধি নায়েকের নামে সেভ করা কয়েকটি নম্বর থেকে নিয়মিত মাদকের অর্ডার দেয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়। পরে নম্বরগুলো যাচাইয়ের জন্য ফোন নম্বরের রেজিস্ট্রেশন রেকর্ড সংগ্রহ করা হয়। এতে দেখা যায়, সংশ্লিষ্ট নম্বরগুলো সাফা কবির এবং টয়ার নামেই রেজিস্ট্রেশনকৃত। তবে তানজিন তিশার নম্বরটির রেজিস্ট্রেশন রয়েছে তার মা উম্মে সালমার নামে।