নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঢাকার প্রবেশপথ যাত্রাবাড়ীর বদলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মাতুয়াইলে অবস্থান নিয়েছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। সেখান থেকে তাদের সরিয়ে দিতে গেলে সংঘর্ষ বাধে পুলিশের সঙ্গে। শনিবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ছে পুলিশ। বিএনপি নেতাকর্মীরাও ইট-পাটকেল ছুড়ছেন। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে সড়কে থাকা যাত্রীবাহী একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেন বিএনপি নেতাকর্মীরা।
শনিবার (২৯ জুলাই) বেলা ১২টা ৩৫ মিনিটে আগুন লাগার সংবাদ পায় ফায়ার সার্ভিস।
এর ফলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সড়কের দুপাশেই যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এর আগে সংঘর্ষ কিছুটা কমে এলে সোয়া ১২টা থেকে গাড়ি চলাচল শুরু হয় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে। তবে ফের সড়কে থেমে থেমে সংঘর্ষ শুরু হলে পিছু হটে পুলিশ। সড়ক দখলে নেন বিএনপি কর্মীরা। ফের যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার লিমা খানম বলেন, দুপুর ১২টা ৩৫ মিনিটে মাতুয়াইলে একটি যাত্রীবাহী বাসে অগ্নিসংযোগের খবর আমরা পেয়েছি। খবর পেয়ে আমাদের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে রওনা হয়েছে। কারা অগ্নিসংযোগ করেছে বা ঘটনায় কোনো হতাহত আছে কি না, এ তথ্য এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বেলা ১১টার পর পরই ঢাকার সব প্রবেশমুখে অবস্থান নিতে শুরু করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। প্রথমে তারা লাঠিসোঁটা হাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে জড়ো হতে থাকেন। কিছুক্ষণ পর সেখানে শুরু হয় সংঘর্ষ। একে একে রাজধানীর আব্দুল্লাপুর, উত্তরা, গাবতলী ও ধোলাইখালে সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, গাড়ি ভাঙচুর ও ককটেল বিস্ফোরণের খবর পাওয়া যায়। এরমধ্যে মাতুয়াইলের পরিস্থতি বেশি খারাপ। সেখানে দফায় দফায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন বিএনপির নেতাকর্মীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ার শেল নিক্ষেপ করেছে। একপর্যায়ে একটি বাসে আগুন লাগিয়ে দেয় বিএনপির নেতাকর্মীরা।
সকালে পুলিশি বাধার কারণে ভেন্যু পরিবর্তন করে বেলা ১১টার দিকে কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশে নেতাকর্মীরা মাতুয়াইল শিশু-মাতৃ স্বাস্থ্য ইনন্টিটিউটের সামনের সড়কে অবস্থান নেন। মাতুয়াইল মেডিকেলের সামনে সড়কে অবস্থান নেন যুবদলের নেতাকর্মীরা। ধোলাইপাড় থেকে মিছিল নিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা বাবুবাজাত ব্রিজের দিকে যেতে দেখা যায়।
এ ছাড়াও রাজধানীর গাবতলীসহ বিভিন্ন স্থানে সড়কে অবস্থান নেন নেতাকর্মীরা। আবদুল্লাহপুরে সড়কও অবরোধ করেন তারা। এ সময় ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। রাজধানীর উত্তরায়ও দফায় দফায় ককটেল বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে সকাল থেকে বিভিন্ন পয়েন্টে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতি দেখা গেছে। সেইসঙ্গে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে বাবুবাজার ব্রিজের দক্ষিণ প্রান্তে কদমতলী এলাকায় সতর্ক অবস্থান নিয়েছে কেরানীগঞ্জ, দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এ ছাড়াও রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।
কোনো কোনো জায়গায় অবস্থান নিতে চাইলে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাধা দেয় পুলিশ। কয়েক জায়গায় মাইক, চেয়ার জব্দ করে নেয়া হয়।