নিজস্ব প্রতিবেদক :
দেশের সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) মাঠ পর্যায়ের তথ্যের ভিত্তিতে বদলি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ।
শনিবার (২ ডিসেম্বর) প্রশাসনিক বদলিসহ নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে একথা জানান তিনি।
তিনি বলেন, মাঠ পর্যায়ের তথ্যের ভিত্তিতেই তাদের বদলির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বদলির কারণে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে না।
ওসি ও ইউএনওদের বদলি সরকার চেয়েছে নাকি আপনারা চেয়েছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা নির্বাচন কমিশন চেয়েছে। আমাদের কমিশনাররা গত এক সপ্তাহ ধরে দেশের বিভিন্ন জেলায় এবং অঞ্চল পর্যায়ে সফর করেছেন, তাদের যে ফাইন্ডিংস, তার ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন বসে গত ৩০ নভেম্বর এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কমিশন অনুভব করেছে, এ বদলি দরকার। সব তথ্য তো ওপেনলি বলা হয় না। নির্বাচন কমিশনাররা মাঠ পর্যায় থেকে যেসব তথ্য পেয়েছেন, বিভিন্ন প্রার্থী কিংবা বিভিন্ন কোয়াটার থেকে যে তথ্য এসেছে, তার ভিত্তিতেই এ সিদ্ধান্ত।
কোনো এক নির্বাচন কমিশনার বলেছিলেন, বড় আকারে রদ বদল করা হলে পুলিশ-প্রশাসনে একটা বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হতে পারে, এর দায়ভার ইসি কেন নেবে? আর একটা কথা বলেছিলেন, ১০০ কোটি টাকা ব্যয় হবে, এ প্রশ্নে তিনি বলেন, ১০০ কোটি টাকা কেন ব্যয় হবে, তাহলে ওই কমিশনারের কাছে জানতে চাইতে হবে। কমিশনে কী সিদ্ধান্ত হয়েছে, আমি সেটা বলতে পারব না।
ডিসি-এসপিদের বদলির কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত এমন কোনো সিদ্ধান্ত আমার জানা নেই। পরবর্তীতে যদি কোনো সিদ্ধান্ত হয়, তখন বলতে পারব। যদি নির্বাচন কমিশন বসে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, সেক্ষেত্রে এটা হতে পারে। এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়।
রদবদলের ক্ষেত্রে কোনো বিশৃঙ্খলা তৈরির সুযোগ আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি মনে করি নেই। একজন কর্মচারী যে উপজেলা বা জেলায় দায়িত্ব পালন করুক না কেন, তিনি সুষ্ঠুভাবেই দায়িত্ব পালন করবেন।
ইসির অতিরিক্ত সচিব বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ সকল প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছে।
নির্বাচনে কতটি দল এবং কতজন প্রার্থী অংশ নিচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের কাছে যে তথ্য আছে সেটি অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত দুই হাজার ৭১৩ জন প্রার্থী আছেন, আর ২৯টি দল আছে। আগে ৩০টি দিয়েছিল। তবে তার মধ্যে জেডিপি বলে একটি আছে, সেটি কোনো দল না, সেটি স্বতন্ত্র হবে। তাই সব মিলিয়ে নিবন্ধিত দলের মধ্যে ২৯টি দল আমাদের কাছে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছে।
তিনি বলেন, অবাধ-সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে মাঠ পর্যায়ের তথ্যের ভিত্তিতে ইউএনও এবং ওসিদের রদবদলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। প্রয়োজনে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারদেরও বদলি করা হতে পারে।
অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, আমাদের নির্বাচন কমিশনাররা গত এক সপ্তাহে বিভিন্ন জেলা এবং অঞ্চলপর্যায়ে সফর করেছেন। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গত ৩০ নভেম্বর বসে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ সময় রদবদলে প্রশাসনে বিশৃঙ্খলার কোনো ঝুঁকি নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রয়োজন মনে করলে কমিশন সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিতে পারে। কিন্তু এই মুহূর্তে এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আমার জানা নেই। প্রশাসন এখন পর্যন্ত ভালোই দেখছি, কোনো অসুবিধা নেই।
পাঁচটি আসনে আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেননি এবং একটি স্থানে দুইবার জমার দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে, এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, আমাদের কাছে যে তথ্য আছে, আওয়ামী লীগ থেকে ৩০৪ জন মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন।
যে পাঁচটি আসনে আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেননি, সেখানে কী হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে ইসির অতিরিক্ত সচিব বলেন, সেটা বাছাইয়ের সময় দেখা যাবে।