মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :
মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার কলমা ইউনিয়নের দাশপাড়া এলাকার একটি ২০ বছর পুরোনো সেতু হেলে পড়েছে। সেতুটির গোড়ার মাটি সরে যাওয়ায় এটি পশ্চিম দিকে কাত হয়ে গেছে। এর ফলে কলমা ইউনিয়নের চারটি গ্রামসহ পাশের পাঁচগাঁও ইউনিয়নের প্রায় ১০ হাজার মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।
জানা যায়, গত সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে সেতুটির গোড়ার মাটি সরতে শুরু করে। প্রায় এক মাস আগে মাটি ধসে গিয়ে সেতুটি সম্পূর্ণরূপে হেলে পড়ে। কলমা-পাঠানবাড়ী খালের ওপর নির্মিত এই সেতুটি দিয়ে বিধুয়াইল, পাঁচনখোলা, দাশপাড়া, পূর্ব কলমা এবং পাঁচগাঁও ইউনিয়নের শত শত মানুষ হাটবাজার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করতেন। সেতু হেলে পড়ার কারণে রিকশা, ভ্যান, ইজিবাইক, পিকআপসহ সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। সেতুটি হেলে পড়ার সময় এর পশ্চিম পাশে থাকা বিদ্যুতের খুঁটিও হেলে যায়। বিদ্যুৎ বিভাগ দ্রুত সেটি সরিয়ে নেয়।
২০০৬ সালে উপজেলা স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তরের অর্থায়নে ১৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ১০ ফুট প্রশস্ত ও ৮০ ফুট দীর্ঘ দাশপাড়া সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছিল। স্থানীয়দের অভিযোগ, ধীরে ধীরে মাটি সরে যাওয়া সত্ত্বেও সময়মতো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেওয়ায় সেতুটি হেলে পড়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, হেলে পড়া সেতু দিয়ে শ্রমিকেরাও ঝুঁকি নিয়ে নির্মাণসামগ্রী পার করছেন।
স্থানীয় আক্তার হোসেন বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে জিও ব্যাগ ফেলে সেতুটি রক্ষার চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু সফল হওয়া যায়নি। পরে ইউনিয়ন পরিষদের অর্থায়নে সেতুর পাশ দিয়ে একটি কাঠের সাঁকো নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে, যা দিয়ে শুধু হেঁটে পার হওয়া যায়। নতুন সেতু তৈরির জন্য এলজিইডির সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছে।
স্থানীয় বিলকিস বেগম ও রতন শেখ বলেন, সেতুটি হেলে পড়ায় তাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যাপক সমস্যা হচ্ছে।
কলমা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) প্যানেল চেয়ারম্যান হিরণ দোকানদার বলেন, এলাকাবাসীর দুর্ভোগ কমাতে পরিষদের অর্থায়নে অস্থায়ী সাঁকো তৈরি করা হয়েছে এবং নতুন সেতু তৈরির জন্য উপজেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন করা হয়েছে।
উপজেলা প্রকৌশলী মো. রেজাউল ইসলাম বলেন, সেতুটি যেভাবে হেলে পড়েছে, তা আর সংস্কার করা সম্ভব নয়। এটি ভেঙে নতুন সেতু নির্মাণ করতে হবে।
লৌহজং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নেছার উদ্দিন বলেন, হেলে পড়া সেতুটি মেরামত করা সম্ভব নয়। ওই স্থানে নতুন সেতু বানাতে হবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে হেলে পড়া সেতু অপসারণ করে নতুন সেতু নির্মাণের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। বর্ষা শেষে পানি নেমে গেলে সেতুটি অপসারণ করে নতুন সেতু তৈরি করা হবে।