নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :
মহাসমাবেশের নামে বিএনপি-জামায়াত মরণকামড় দিতে চায় উল্লেখ করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, ২৮ অক্টোবর বিএনপি-জামায়াত মহাসমাবেশের নামে মরণকামড় দিতে চাইবে। সেদিন তারা মহাসমাবেশের নামে ঢাকা অবরোধ করবে। নাম দিয়েছে মহাসমাবেশ কিন্তু এটা হলো তাদের অবরোধ। সেই কারণে আমরাও সেদিন মহাসমাবেশ করবো। সেই সমাবেশে আমরা চেষ্টা করবো তাদের চেয়ে বেশি লোকজন জমায়েত করতে।
বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের সার্কিট হাউজে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা আজম বলেন, ঢাকার সবচেয়ে পার্শ্ববর্তী জেলা নারায়ণগঞ্জ। আগামী ২৮ তারিখ আমাদের সমাবেশ হবে বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে। ফ্লাইওভার থেকে তিন মিনিটে যাওয়া যায়। শাপলা চত্বরও কাছাকাছি। নারায়ণগঞ্জ মহানগর ঢাকার সবচেয়ে কাছে। আমরা আশা করি নারায়ণগঞ্জ থেকে আমাদের সমাবেশে সবচেয়ে বড় সাপোর্ট যাবে। ওরা এখন দিন তারিখ ঠিক করে দিচ্ছে যে তারা শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করবে। তাহলে আমরা যারা আওয়ামী লীগ করি তারা কী এখানে বসে থাকবো। আমরা বলেছিলাম ৪ তারিখ সমাবেশ করবো। সেটা হবে। কিন্তু তার আগে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে তারা যে কর্মসূচি দিয়েছে ঢাকা অবরোধের সেদিন আমরাও ঢাকা দখলে রাখবো।
তিনি আরো বলেন, নারায়ণগঞ্জ সার্কিট হাউজে আমি সাতচল্লিশ মিনিটে এসেছি। আমার বাসা থেকে আজিমপুর যতক্ষণে যাই তার চেয়ে কম সময়ে আমি নারায়ণগঞ্জ এসেছি। এটা সম্ভব হয়েছে শেখ হাসিনার জন্য।
তিনি বলেন, একদিকে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অন্যদিকে প্রধান বিরোধী দলের কর্মসূচি। তারা নিজেরা কিন্তু রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যেতে চায় না। তাদের টার্গেট একটা অসাংবিধানিক সরকার ক্ষমতায় নিয়ে আসা। ঠিক বহু বছর আগে যেভাবে মীর জাফর নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে হত্যা করে ব্রিটিশদের সহযোগিতা করেছিল। আজকে বিএনপি-জামায়াত মীর জাফরের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। তারা বিদেশি শক্তির কাছে বাংলাদেশের ক্ষমতা তুলে দিতে চায়। নির্বাচন করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যেতে চায় না তারা। শুধু জাতির জনকের কন্যা শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করে একটা অসাংবিধানিক সরকার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আনতে চায়। তাদের এই দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র আমরা বারবার ব্যর্থ করে দিতে সক্ষম হয়েছি।
বিএনপি শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে তারা কতবার কত তারিখ নির্ধারণ করে দিয়েছে। সর্বশেষ ২৮ অক্টোবর তারা কর্মসূচি দিয়ে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চায়। শেখ হাসিনাকে কেন ক্ষমতাচ্যুত করতে চায়। কারণ তাদের যে মূল আদর্শ সেটা হচ্ছে স্বাধীনতাবিরোধী। বঙ্গবন্ধুর সময়ে যারা ষড়যন্ত্র করেছে তারা গোপনে করেছে, আর এখন যারা ষড়যন্ত্র করছে তারা প্রকাশ্যে ষড়যন্ত্র করছে।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, কাঁচপুরে যে জনসভাটি হল আমি সেখানে সোনারগাঁয়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি। সেখানে আমি দেখেছি, আওয়ামী লীগ করে গত পনেরো বছরে অনেকেই অর্থনৈতিক ভাবে সমৃদ্ধ হয়েছেন। আগে যে বাইসাইকেলে চড়ত সে এখন মোটরসাইকেল চালায়, যার মোটরসাইকেল ছিল সে প্রাইভেট কার চালায়। সবার বাড়িতেই বিল্ডিং।
তিনি বলেন, যারা অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হয়েছে আওয়ামী লীগ করে তাদের মনমানসিকতায়ও আমি পরিবর্তন দেখেছি। সমাবেশ সফল করতে অনেকেই বায়না ধরে। সেটা নেয়ার জন্য না দেয়ার জন্য। যে সমাবেশের এই কাজটা আমি করে দিতে চাই। এটা বাংলাদেশের অন্য কোন জেলায় দেখা যায় না। আপনারা নিজেদের উপার্জিত অর্থের একটি অংশ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে ব্যাবহার করবেন এটা আমি বিশ্বাস করি।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী এমপি, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই, সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহিদ মো. বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহাসহ অন্যান্যরা।