আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
ভারতের মহারাষ্ট্রের এক হাসপাতালে গত ৪৮ ঘণ্টায় ৩১ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ১৬ জনই নবজাতক।
মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এর আগে ২৪ ঘণ্টায় ২৪ রোগীর মৃত্যুর খবরে দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলোর শিরোনামে উঠে আসে এ খবর। আজকে সেই হাসপাতালে আরও ৭ রোগীর মৃত্যু হয়ে এ সংখ্যা ৩১ জনে দাঁড়িয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ৪৮ ঘণ্টায় রাজ্যের নানদেনে শঙ্করাও চ্যাবন সরকারি হাসপাতালে মারা যাওয়া ৩১ রোগীর মধ্যে ১৬ জনই নবজাতক বা শিশু। চিকিৎসায় অবহেলার কারণে রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে তা প্রত্যাখ্যান করেছেন হাসপাতালটির ডিন শ্যামরাও ওয়াকোদে। তিনি বলেছেন, এখানে ওষুধ বা চিকিৎসকের কোনো ঘাটতি নেই।
নান্দেদের শঙ্কররাও চ্যাভান সরকারি হাসপাতালের ডিন বলেন, ছয়টি ছেলে ও ছয়টি মেয়ে শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া ১২ জন প্রাপ্তবয়স্ক মারা গেছেন। প্রথম ২৪ জনের বেশিরভাগই সাপের কামড় ও বিভিন্ন অসুস্থতায় ভুগছিলেন।
তিনি বলেন, বিভিন্ন কর্মীদের স্থানান্তর করায় আমরা কিছুটা অসুবিধার সম্মুখীন হয়েছি। ৭০-৮০ কিলোমিটারের মধ্যে আমরা একমাত্র তৃতীয় স্তরের পরিচর্যা কেন্দ্র। তাই দূর-দূরান্ত থেকে এখানে রোগীরা আসেন। মাঝেমাঝে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। তখন বাজেট সংক্রান্ত সমস্যা সৃষ্টি হয়।
ডিন আরও বলেন, একটি ইনস্টিটিউট হাফকাইন আছে। আমাদের তাদের কাছ থেকে ওষুধ কেনার কথা ছিল কিন্তু সেটা হয়নি। তবে আমরা স্থানীয়ভাবে ওষুধ কিনে রোগীদের দিয়েছি।
তবে ডিনের ওষুধ ও তহবিল ঘাটতির দাবি অস্বীকার করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, হাসপাতালে অত্যাবশ্যকীয় ওষুধ পাওয়া যায়। হাসপাতালের তহবিলে ১২ কোটি (ভারতীয়) টাকা আছে। চলতি অর্থবছরের জন্য ৪ কোটি টাকা অনুমোদিত হয়েছে। রোগীদের প্রয়োজন অনুযায়ী চিকিৎসা করা হচ্ছে।
ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ২৪ জনের মৃত্যুর তথ্য উল্লেখ করে আরও জানানো হয়, মারা যাওয়া ১২ জন বয়স্ক রোগীর মধ্যে পাঁচজন পুরুষ ও সাতজন ছিলেন নারী। ১২ জন শিশুও মারা গেছে। প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে চারজন হৃদরোগে, একজন বিষক্রিয়ায়, একজন গ্যাস্ট্রিক রোগে, দুইজন কিডনির রোগে, একজন প্রসূতিজনিত জটিলতায় মারা গেছেন। তিনজন ছিলেন দুর্ঘটনায় ভুগছিলেন। শিশুদের মধ্যে টার্মিনাল পর্যায়ে চারজনকে বেসরকারি হাসপাতাল থেকে রেফার করা হয়েছিল।
এ মৃত্যুগুলোকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্দে সাংবাদিকদের বলেন, ‘হাসপাতালে কী হয়েছে সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হবে এবং পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
মহারাষ্ট্রের বিরোধী দল এ ঘটনার জন্য একনাথ শিন্দে প্রশাসনকে দায়ী করে বলছে, তিন দলীয় জোটকে (বিজেপি, একনাথ শিন্দের শিব সেনা ও এনসিপির অজিত পাওয়ারের দল) এ ঘটনার দায় নিতে হবে।
মহারাষ্ট্রের মেডিকেল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চের পরিচালক ডা. দিলীপ মহিসকার পিটিআইকে জানান, মৃত্যুর বিষয়ে তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।