Dhaka বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রিতে ৭ দেশের প্রতিনিধির শ্রদ্ধা

কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি : 

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নিহত বিশ্বের ১৩টি দেশের ৭৩৭ জন বীর যোদ্ধার নিহত সৈনিকদের স্মরণে কুমিল্লা সেনানিবাস সংলগ্ন ময়নামতি কমনওয়েলথ যুদ্ধসমাধিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সাত দেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার ও প্রতিনিধি।

শনিবার (১১ নভেম্বর) সকাল ১০ টার দিকে কূটনীতিকরা কুমিল্লার ময়নামতি ক্যান্টনমেন্টে অবস্থিত ওয়ার সিমেট্রি হলিক্রসের পাদদেশে প্রার্থনা ও ফুলেল শ্রদ্ধাঞ্জলির মধ্য দিয়ে সৈনিকদের স্মরণ করেন। পরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত সৈনিকদের স্মরণে কূটনীতিকরা স্মৃতিসৌধে দাঁড়িয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে নীরবতা পালন করেন। এ সময় বিউগলে করুণ সুর বেজে ওঠে।

এর আগে শনিবার সকালে কমনওয়েলথভুক্ত দেশের কূটনীতিক ও তাঁদের প্রতিনিধিরা ময়নামতির যুদ্ধ সমাধিস্থলে সমবেত হন। কুমিল্লার এই ওয়ার সিমেট্রিতে শ্রদ্ধা জানান যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, কানাডা, ভারত, পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত ও তাঁদের প্রতিনিধিসহ বাংলাদেশের সামরিক প্রতিনিধিরা।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস, কানাডার হাইকমিশনার এমএস লিল্লি নিকলস, জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনুরি, অস্ট্রেলিয়ার ডেপুটি হাইকমিশনার নারদিয়া সিম্পসন, পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ, ভারতের দূতাবাস প্রতিনিধি ব্রিগেডিয়ার এমএস সাবারওয়াল, ব্রিটিশ কাউন্সিলের প্রতিনিধি টম মিশিওশিয়া। এছাড়া ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের প্রতিনিধি, বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি, বাংলাদেশের সামরিক প্রতিনিধিসহ মোট ৬৮ জন সেখানে শ্রদ্ধা জানান। এ সময় বিউগলে বেজে উঠে করুণ সুর। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে অতিথিরা স্মৃতিফলক ঘুরে দেখেন।

এর আগে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। পরে হাইকমিশনার ও প্রতিনিধিরা ময়নামতির যুদ্ধ সমাধির হলিক্রস পাদদেশে শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে নিহত সৈনিকদের স্মরণ করেন। অনুষ্ঠান শেষে কমনওয়েলথভুক্ত দেশের প্রতিনিধিরা সমাধিস্থল পরিদর্শন এবং দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করেন। এর আগে শ্রদ্ধা নিবেদনের শুরুতে নিহতদের জন্য প্রার্থনা করা হয়।

এ সময় যুদ্ধে নিহত সৈনিকদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করেন কূটনীতিকরা বলেন, ‘এই দিনটি আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের জন্য যারা নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন আমরা তাদের স্মরণ করছি। আজকে আমরা স্মরণ করছি সেসকল নারী-পুরুষকে যারা বিশ্বযুদ্ধে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন।

আমরা সমাধিস্থলটি ঘুরে দেখেছি। এখানে কানাডিয়ানসহ ব্রিটিশ, বাঙালি, অস্ট্রেলিয়ান, ইন্ডিয়ান, আফ্রিকানসহ অনেক দেশের ব্যক্তির সমাধি রয়েছে। তারা নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন আমাদের প্রজন্মের জন্য, যাতে আমরা শান্তিতে সমৃদ্ধিশীল একটি পৃথিবীতে বাস করতে পারি। আমরা তাদের কখনো ভুলবো না।

এদিকে, বাংলাদেশের পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন কুমিল্লা সেনানিবাসের ৩৩ ইনফ্যান্টি ডিভিশনের প্রতিনিধিরা।

প্রসঙ্গত, কুমিল্লার ময়নামতি ওয়ার সিমেট্টিতে ১৯৪১ সাল থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত ৭৩৮ জন সেনাকে সমাহিত করা হয়। ১৯৬২ সালে ১ জনের দেহাবশেষসহ সমাধির মাটি তার স্বজনরা যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে গেলে এখানে বর্তমানে সমাধি রয়েছে ৭৩৭ জনের। কমনওয়েলথ গ্রেভ ইয়ার্ড কমিশন এই যুদ্ধ সমাধি ক্ষেত্র তৈরি ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করে আসছে। প্রতি বছরের নভেম্বর মাসের ১১ তারিখে কমনওয়েলথভুক্ত দেশের হাইকমিশনাররা তাদের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে তাদের স্মরণ করেন।

আবহাওয়া

বদলির চিঠি প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলায় ৮ কর কর্মকর্তা বরখাস্ত

ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রিতে ৭ দেশের প্রতিনিধির শ্রদ্ধা

প্রকাশের সময় : ০৪:২৭:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ নভেম্বর ২০২৩

কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি : 

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নিহত বিশ্বের ১৩টি দেশের ৭৩৭ জন বীর যোদ্ধার নিহত সৈনিকদের স্মরণে কুমিল্লা সেনানিবাস সংলগ্ন ময়নামতি কমনওয়েলথ যুদ্ধসমাধিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সাত দেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার ও প্রতিনিধি।

শনিবার (১১ নভেম্বর) সকাল ১০ টার দিকে কূটনীতিকরা কুমিল্লার ময়নামতি ক্যান্টনমেন্টে অবস্থিত ওয়ার সিমেট্রি হলিক্রসের পাদদেশে প্রার্থনা ও ফুলেল শ্রদ্ধাঞ্জলির মধ্য দিয়ে সৈনিকদের স্মরণ করেন। পরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত সৈনিকদের স্মরণে কূটনীতিকরা স্মৃতিসৌধে দাঁড়িয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে নীরবতা পালন করেন। এ সময় বিউগলে করুণ সুর বেজে ওঠে।

এর আগে শনিবার সকালে কমনওয়েলথভুক্ত দেশের কূটনীতিক ও তাঁদের প্রতিনিধিরা ময়নামতির যুদ্ধ সমাধিস্থলে সমবেত হন। কুমিল্লার এই ওয়ার সিমেট্রিতে শ্রদ্ধা জানান যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, কানাডা, ভারত, পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত ও তাঁদের প্রতিনিধিসহ বাংলাদেশের সামরিক প্রতিনিধিরা।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস, কানাডার হাইকমিশনার এমএস লিল্লি নিকলস, জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনুরি, অস্ট্রেলিয়ার ডেপুটি হাইকমিশনার নারদিয়া সিম্পসন, পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ, ভারতের দূতাবাস প্রতিনিধি ব্রিগেডিয়ার এমএস সাবারওয়াল, ব্রিটিশ কাউন্সিলের প্রতিনিধি টম মিশিওশিয়া। এছাড়া ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের প্রতিনিধি, বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি, বাংলাদেশের সামরিক প্রতিনিধিসহ মোট ৬৮ জন সেখানে শ্রদ্ধা জানান। এ সময় বিউগলে বেজে উঠে করুণ সুর। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে অতিথিরা স্মৃতিফলক ঘুরে দেখেন।

এর আগে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। পরে হাইকমিশনার ও প্রতিনিধিরা ময়নামতির যুদ্ধ সমাধির হলিক্রস পাদদেশে শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে নিহত সৈনিকদের স্মরণ করেন। অনুষ্ঠান শেষে কমনওয়েলথভুক্ত দেশের প্রতিনিধিরা সমাধিস্থল পরিদর্শন এবং দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করেন। এর আগে শ্রদ্ধা নিবেদনের শুরুতে নিহতদের জন্য প্রার্থনা করা হয়।

এ সময় যুদ্ধে নিহত সৈনিকদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করেন কূটনীতিকরা বলেন, ‘এই দিনটি আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের জন্য যারা নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন আমরা তাদের স্মরণ করছি। আজকে আমরা স্মরণ করছি সেসকল নারী-পুরুষকে যারা বিশ্বযুদ্ধে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন।

আমরা সমাধিস্থলটি ঘুরে দেখেছি। এখানে কানাডিয়ানসহ ব্রিটিশ, বাঙালি, অস্ট্রেলিয়ান, ইন্ডিয়ান, আফ্রিকানসহ অনেক দেশের ব্যক্তির সমাধি রয়েছে। তারা নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন আমাদের প্রজন্মের জন্য, যাতে আমরা শান্তিতে সমৃদ্ধিশীল একটি পৃথিবীতে বাস করতে পারি। আমরা তাদের কখনো ভুলবো না।

এদিকে, বাংলাদেশের পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন কুমিল্লা সেনানিবাসের ৩৩ ইনফ্যান্টি ডিভিশনের প্রতিনিধিরা।

প্রসঙ্গত, কুমিল্লার ময়নামতি ওয়ার সিমেট্টিতে ১৯৪১ সাল থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত ৭৩৮ জন সেনাকে সমাহিত করা হয়। ১৯৬২ সালে ১ জনের দেহাবশেষসহ সমাধির মাটি তার স্বজনরা যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে গেলে এখানে বর্তমানে সমাধি রয়েছে ৭৩৭ জনের। কমনওয়েলথ গ্রেভ ইয়ার্ড কমিশন এই যুদ্ধ সমাধি ক্ষেত্র তৈরি ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করে আসছে। প্রতি বছরের নভেম্বর মাসের ১১ তারিখে কমনওয়েলথভুক্ত দেশের হাইকমিশনাররা তাদের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে তাদের স্মরণ করেন।