নিজস্ব প্রতিবেদক :
উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের মধ্যে যারা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি, তাদের বিরুদ্ধে সময় মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, উপজেলা নির্বাচনে প্রথম পর্যায়ে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় পেরিয়ে গেছে। এদের মধ্যে অনেকেই বলেছেন যে, আমরা বিষয়টি আরও আগে অবহিত হলে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হতো। তারপরও কেউ কেউ প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন, কেউ কেউ করেননি। নির্বাচন কমিশনে সময়সীমা শেষ হয়ে গেলে কেউ ইচ্ছা করলে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে পারেন। এই বিষয়টা চূড়ান্ত হতে নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এখানে কেউ নির্দেশ অমান্য করলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে দলে। সময় মতো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, আমাদের দলে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশনের বিষয়টি আছে। দল যার যার কর্মকাণ্ড বিবেচনায় বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কৌশলে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশন নিয়ে থাকে। চূড়ান্ত পর্যায়ে যারা প্রত্যাহার করবে না এ ব্যাপারে দলের সিদ্ধান্ত সময়মতো নেওয়া হবে।
চূড়ান্ত পর্যায়েও কেউ প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে কিনা এমন প্রশ্নে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সাধারণ ক্ষমা একটা বিশেষ পরিস্থিতিতে দলীয় রণকৌশল -সেটা হতেই পারে। সেটা দলের সভাপতি নিতে পারেন। নির্বাচন হওয়া পর্যন্ত প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সুযোগ আছে।
বিএনপির সমাবেশের পাল্টা সমাবেশ দেওয়ার কথা স্বীকার করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপিকে মানসিক বাধা দিতেই পাল্টা কর্মসূচি।
২৬ এপ্রিল ঢাকায় বিএনপির ডাকা কর্মসূচির দিন আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শান্তি সমাবেশের ডাক দিয়েছিল। বিএনপি কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর আওয়ামী লীগও শান্তি সমাবেশ প্রত্যাহার করে নিয়েছে। তবে বিভিন্ন সমাবেশে ওবায়দুল কাদের বলে আসছেন, আমরা শান্তি সমাবেশ করছি, পাল্টা কোনো সমাবেশ করছি না।
বিএনপি বা বিরোধী দলের কোনো কর্মসূচি থাকলে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি থাকে, ২৬ তারিখ কর্মসূচি ছিল, লোকজন বলছে এটা পাল্টাপাল্টি। যদি পাল্টাপাল্টি হয়ে থাকে তাহলে আপনারা কি বিএনপিকে চাপে রাখার জন্য এ কর্মসূচি দিচ্ছেন? না কি সরকারের মধ্যে অজানা আশঙ্কা কাজ করছে যে বিএনপি মাঠ দখল করে সরকারকে ফেলে দিতে পারে? সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, দেখুন, এখন নির্বাচন হয়ে গেছে, নির্বাচন যারা বয়কট করেছে, তারা নির্বাচন করতে দেবে না, সে স্বপ্ন মাঠে মারা গেছে। নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করতে পারবে না, পাঁচ দিনের মাথায় পড়ে যাবে। এমন দুঃস্বপ্ন তারা দেখেছিল। আপনি যে প্রশ্নটা করেছেন, আপনি বলেন বিএনপি এবং আমরা একইদিন কত সমাবেশ করেছি। আপনি দেখতেন একটা রাজনৈতিক দল হিসেবে, আমি পাল্টাপাল্টি মারামারি করতে যাচ্ছি কি না। তাদের সমাবেশে আমরা কোনো হামলা চালিয়েছি কি না, সরকারি দল হিসেবে। তা হলে অসুবিধা কি? আমরা কি বাধা দিয়েছি? আমাদের সমাবেশ আমরা করছি, তাদের সমাবেশ তারা করেছে। নির্বাচনের আগের দৃশ্যপট এটা।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আজকে হ্যাঁ, আমরা এটা মনেই করতে পারি, বিএনপি একতরফা কোনো সমাবেশ করতে গেলে, তারা অগ্নিসন্ত্রাস, সন্ত্রাসের বিষয় দিয়ে জনগণের জানমালের নিশ্চয়তা, সম্পদরক্ষা, সেখানে আমাদেরও সরকারি দল হিসেবে একটা দায়িত্ব আছে। আমরা মাঠে থাকলে তারা অগ্নিসন্ত্রাস করার বিষয়ে একটা মানসিক বাধা পাবে, সে কারণে আমরা এটা করি। আমরা শান্তি সমাবেশ করছি, তারা গণহত্যা, বিক্ষোভ অনেক কিছু করছে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, সংস্কৃতিকবিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল প্রমুখ।