নিজস্ব প্রতিবেদক
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের মেয়ের জামাই মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমানকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভিআইপি লাউঞ্জ ব্যবহার, কাস্টমস ব্যাগেজ, ইমিগ্রেশনসহ অন্যান্য প্রটোকল দেওয়ার জন্য চিঠি দিয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। বিমানবন্দরের পরিচালককে দেওয়া চিঠিটি ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
মঙ্গলবার (৬ জুন) বিমানবন্দরের পরিচালককে পাঠানো মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (প্রশাসন-১) ড. অমিতাভ চক্রবর্ত্তী স্বাক্ষরিত চিঠিতে এ কথা বলা হয়েছে।
পরে বুধবার (৭ জুন) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালককে চিঠিটি পাঠানো হয়।
চিঠিতে বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের জামাতা মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান শুক্রবার বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে (ফ্লাইট নম্বর ই কে- ৫৮৬) দুবাই থেকে হজরত শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন। তাকে বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জ ব্যবহারের অনুমতিসহ প্রটোকল অফিসার মশিউর রহমানকে কাস্টমস ব্যাগেজ, ইমিগ্রেশন এবং বিমানবন্দরের অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা পালনের জন্য বোর্ডিং ব্রিজ পাস প্রদানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।
তাকে বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জ ব্যবহারের অনুমতিসহ মন্ত্রীর প্রটোকল অফিসার মশিউর রহমানকে কাস্টমস ব্যাগেজ, ইমিগ্রেশন এবং বিমানবন্দরের অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা পালনের জন্য বোর্ডিং ব্রিজ পাস দেওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিমানবন্দর পরিচালককে নির্দেশ দেওয়া হয়।
মন্ত্রীর জামাতা বিমানবন্দরে ভিআইপি লাউঞ্জ ব্যবহারসহ অন্যান্য প্রটোকল পায় কি না, জানতে চাইলে উপসচিব ড. অমিতাভ চক্রবর্ত্তী বলেন, মন্ত্রীর জামাতা যখন দেশে আসেন মন্ত্রী তাকে আনতে যান। তাই আমরা চিঠি দিয়েছি। মন্ত্রী শুক্রবার তাকে আনতে বিমানবন্দরে যাবেন কি না, এমন প্রশ্নে উপসচিব বলেন, তিনি যাবেন কি না আমি জানি না। মন্ত্রীর মেয়ে দেশে এলেও এ ধরনের চিঠি আমরা দিয়ে থাকি। তাহলে কীসের ভিত্তিতে এই চিঠি দিয়েছেন এর সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গুরুত্বপূর্ণ ও অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ব্যবহারের জন্য পৃথক লাউঞ্জ রয়েছে। যেটাকে ভিআইপি লাউঞ্জ বলা হয়। ভিআইপি লাউঞ্জ কারা ব্যবহার করতে পারবেন এমন একটি স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের।
লাউঞ্জ রজনীগন্ধা, বকুল, দোলনচাঁপা ও চামেলি নামে বিমানবন্দরে ৪টি ভিআইপি লাউঞ্জ রয়েছে। রজনীগন্ধা রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ভিআইপিরা ব্যবহার করেন। বকুল ব্যবহার করেন অতিরিক্ত সচিব বা তার পদমযার্দার ও সমমর্যাদার ব্যক্তিরা। দোলনচাঁপা ব্যবহার করেন সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। আর চামেলি দিয়ে একুশে পদক পাওয়া ব্যক্তি, সংবাদপত্রের সম্পাদক ও রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা প্রবেশ ও বের হতে পারেন।
কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ রয়েছে, ভিআইপি লাউঞ্জ ব্যবহারের ক্ষেত্রে সরকার দলীয় নেতা, এমপি, মন্ত্রীদের আত্মীয়-স্বজন, আমলারা বিধি না মেনে ব্যবহার করছেন।