Dhaka রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভ্যাট বাড়লেও নিত্যপণ্যের দামের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না : অর্থ উপদেষ্টা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : ০২:২১:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ জানুয়ারী ২০২৫
  • ১৯৩ জন দেখেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

৪৩টি পণ্যের ওপরে ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্তে নিত্যপণ্যের দামের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান তিনি।

উপদেষ্টা বলেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত পূরণে নয়, বরং রাজস্ব বাড়ানোর স্বার্থেই বিভিন্ন পণ্যের ওপর কর বাড়ানো হয়েছে।

তবে ৪৩টি পণ্যের উপরে ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্তে নিত্যপণ্যের দামের ওপরে প্রভাব পড়বে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের কষ্ট হবে না। তিন তারকা মানের ওপরের হোটেলগুলোর ক্ষেত্রে কর বাড়ানো হয়েছে। সাধারণ মানের হোটেল রেস্তোরাঁর ওপরে বাড়ানো হয়নি।

উপদেষ্টা বলেন, আইএমএফ এর শর্তের জন্য নয়, রাজস্ব বাড়ানোর জন্য কিছু পণ্যের উপর ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এবারের বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বাজেট বাড়ানো হবে। আয়-ব্যয়ের উপর সমন্বয় করে ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিতে হয় সরকারের।

চলতি নতুন বছরে দেশের অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আসবে বলেও জানান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ব্যাংকগুলোকে পর্যাপ্ত সাপোর্ট দেয়া হবে। আগামী বাজেটে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়ানো হবে।

উপদেষ্টা আরও বলেন, বাংলাদেশে রাজস্ব হারের গ্যাপ অনেক বেশি। এই গ্যাপ কমাতে হবে। দেশ অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তাই রাজস্ব গ্যাপ কমাতে ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত। নেপাল, ভুটানসহ অনেক দেশেই এত কম রাজস্ব দেয়া হয় না।

বিমান ভাড়ার ক্ষেত্রে ভ্যাট বাড়া প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বিমানের ভাড়ার ক্ষেত্রে আগে ৫০০ টাকা ছিল, সেটি ২০০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। অভ্যন্তরীণ বিমানে এখন লোকজন মোটামুটি চড়ে। তারা ২০০ টাকা বেশি দিতে পারবে না বলে মনে হয় না। এগুলো মার্জিনাল। পৃথিবীর কোনো দেশেই কিন্তু নেপাল, ভুটান ধরেন, এত লো ট্যাক্স কোথাও নেই। সব জিনিসের ওপরে। এসেন্সিয়াল জিনিসের ক্ষেত্রে আমরা সব সময় বলেছি, সেখানে আমরা প্রায় জিরো করে নিয়ে আসব। চূড়ান্তভাবে ভোক্তা ১৫ শতাংশ ট্যাক্স দিচ্ছে না। ইনপুটের জন্য সে রিবেট পাবে। জিজ্ঞেস করেন, সেটা ওরা জানে।

অন্তর্বর্তী সরকারের পাঁচ মাস পরে এই সিদ্ধান্ত কেন নেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এটা করার কারণটা হলো যে ছাড় দিয়েছি, সেটা হিসাব করে… কয়েক হাজার কোটি টাকা ছাড় দেওয়া হয়েছে। আর আমাদের রাজস্ব গ্যাপ এত বেশি, আমি তো আর বড় করে ডেফিসিট ফাইন্যান্সিং করে এগোতে পারব না।

আইএমএফের পরামর্শে এটি করা হচ্ছে কি না জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, না, সব দিক চিন্তা-ভাবনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সাধারণ মানুষের কষ্ট হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মনে হয় না কষ্ট হবে।

জনগণ স্বস্তি পাচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, জনগণের স্বস্তি না পাওয়ার তো কোনো কথা না।

তিনি বলেন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আইটি খাতে আমরা বরাদ্দ কমাব না। বরং আমরা বৃদ্ধি করব। কিন্তু আমাদের রাজস্ব আয় বাড়াতে হবে। ধার করে বেশিদিন চলা যায় না।

ট্যাক্স এবং কাস্টমস পর্যালোচনা এখনো বাকি আছে বলে জানিয়েছেন উপদেষ্টা। এসব ক্ষেত্রেও বাড়বে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটা এখন বলব না।

নতুন বছরে অর্থনীতিকে কোন জায়গায় নিয়ে যেতে চান, এমন প্রশ্নের উত্তরে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, অর্থনীতি মোটামুটি স্ট্রং তো হয়েছে, এখন দরকার স্থিতিশীলতা। আমি বলব না, সব ক্ষেত্রে এটা হয়েছে। ব্যাংকিং সেক্টরে কিছু শৃঙ্খলা ফিরেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক চেষ্টা করছে, কিছু কিছু দুর্বল ব্যাংকে সাপোর্ট দেওয়া হচ্ছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

আড়াই বছরেও শেষ হয়নি সেতু নির্মাণ কাজ, দুর্ভোগে এলাকাবাসী

ভ্যাট বাড়লেও নিত্যপণ্যের দামের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না : অর্থ উপদেষ্টা

প্রকাশের সময় : ০২:২১:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ জানুয়ারী ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

৪৩টি পণ্যের ওপরে ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্তে নিত্যপণ্যের দামের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান তিনি।

উপদেষ্টা বলেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত পূরণে নয়, বরং রাজস্ব বাড়ানোর স্বার্থেই বিভিন্ন পণ্যের ওপর কর বাড়ানো হয়েছে।

তবে ৪৩টি পণ্যের উপরে ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্তে নিত্যপণ্যের দামের ওপরে প্রভাব পড়বে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের কষ্ট হবে না। তিন তারকা মানের ওপরের হোটেলগুলোর ক্ষেত্রে কর বাড়ানো হয়েছে। সাধারণ মানের হোটেল রেস্তোরাঁর ওপরে বাড়ানো হয়নি।

উপদেষ্টা বলেন, আইএমএফ এর শর্তের জন্য নয়, রাজস্ব বাড়ানোর জন্য কিছু পণ্যের উপর ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এবারের বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বাজেট বাড়ানো হবে। আয়-ব্যয়ের উপর সমন্বয় করে ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিতে হয় সরকারের।

চলতি নতুন বছরে দেশের অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আসবে বলেও জানান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ব্যাংকগুলোকে পর্যাপ্ত সাপোর্ট দেয়া হবে। আগামী বাজেটে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়ানো হবে।

উপদেষ্টা আরও বলেন, বাংলাদেশে রাজস্ব হারের গ্যাপ অনেক বেশি। এই গ্যাপ কমাতে হবে। দেশ অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তাই রাজস্ব গ্যাপ কমাতে ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত। নেপাল, ভুটানসহ অনেক দেশেই এত কম রাজস্ব দেয়া হয় না।

বিমান ভাড়ার ক্ষেত্রে ভ্যাট বাড়া প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বিমানের ভাড়ার ক্ষেত্রে আগে ৫০০ টাকা ছিল, সেটি ২০০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। অভ্যন্তরীণ বিমানে এখন লোকজন মোটামুটি চড়ে। তারা ২০০ টাকা বেশি দিতে পারবে না বলে মনে হয় না। এগুলো মার্জিনাল। পৃথিবীর কোনো দেশেই কিন্তু নেপাল, ভুটান ধরেন, এত লো ট্যাক্স কোথাও নেই। সব জিনিসের ওপরে। এসেন্সিয়াল জিনিসের ক্ষেত্রে আমরা সব সময় বলেছি, সেখানে আমরা প্রায় জিরো করে নিয়ে আসব। চূড়ান্তভাবে ভোক্তা ১৫ শতাংশ ট্যাক্স দিচ্ছে না। ইনপুটের জন্য সে রিবেট পাবে। জিজ্ঞেস করেন, সেটা ওরা জানে।

অন্তর্বর্তী সরকারের পাঁচ মাস পরে এই সিদ্ধান্ত কেন নেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এটা করার কারণটা হলো যে ছাড় দিয়েছি, সেটা হিসাব করে… কয়েক হাজার কোটি টাকা ছাড় দেওয়া হয়েছে। আর আমাদের রাজস্ব গ্যাপ এত বেশি, আমি তো আর বড় করে ডেফিসিট ফাইন্যান্সিং করে এগোতে পারব না।

আইএমএফের পরামর্শে এটি করা হচ্ছে কি না জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, না, সব দিক চিন্তা-ভাবনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সাধারণ মানুষের কষ্ট হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মনে হয় না কষ্ট হবে।

জনগণ স্বস্তি পাচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, জনগণের স্বস্তি না পাওয়ার তো কোনো কথা না।

তিনি বলেন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আইটি খাতে আমরা বরাদ্দ কমাব না। বরং আমরা বৃদ্ধি করব। কিন্তু আমাদের রাজস্ব আয় বাড়াতে হবে। ধার করে বেশিদিন চলা যায় না।

ট্যাক্স এবং কাস্টমস পর্যালোচনা এখনো বাকি আছে বলে জানিয়েছেন উপদেষ্টা। এসব ক্ষেত্রেও বাড়বে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটা এখন বলব না।

নতুন বছরে অর্থনীতিকে কোন জায়গায় নিয়ে যেতে চান, এমন প্রশ্নের উত্তরে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, অর্থনীতি মোটামুটি স্ট্রং তো হয়েছে, এখন দরকার স্থিতিশীলতা। আমি বলব না, সব ক্ষেত্রে এটা হয়েছে। ব্যাংকিং সেক্টরে কিছু শৃঙ্খলা ফিরেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক চেষ্টা করছে, কিছু কিছু দুর্বল ব্যাংকে সাপোর্ট দেওয়া হচ্ছে।