নিজস্ব প্রতিবেদক :
ভ্যাট বসলে মেট্রোরেলের সুনাম নষ্ট হবে বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, আমাদের এনবিআর মেট্রোরেলে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করেছে, এটা হতে পারে না। এটি ভুল সিদ্ধান্ত। ভ্যাট বসলে মেট্রোরেলের সুনাম নষ্ট হবে। ভারতে মেট্রোরেলে কি ভ্যাট আছে? ভারতে ভ্যাট নেই আমরা কেন করব? আমি প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছি। তিনি বিষয়টি বিবেচনা করবেন।
রোববার (১৯ মে) রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) আয়োজিত ঢাকা মেট্রোরেলের ব্রান্ডিং সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, যে বাংলাদেশ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের বিস্ময়, সে দেশের রাজধানী পৃথিবীর অন্যতম খারাপ। বসবাসযোগ্য ১৪০টি দেশের মধ্যে ১৩০’র পরে আমাদের অবস্থান। এটা দেশের উন্নয়নের সঙ্গে মিলে না। এ শহরে এত দামি গাড়ি চলে, কিন্তু বাসের অবস্থা এত খারাপ কেন! বারবার কথাবার্তা বলেও সমাধান করা যায়নি। এ অবস্থা থেকে আমাদের মুক্তি পেতেই হবে। ঢাকায় যে বাসগুলো চলে, ভীষণ খারাপ লাগে। এগুলো দেখলে কেমন লাগে। এতে আমার লজ্জা লাগে। আমাদের মালিক সাহেবরা কী বিদেশ যান না, দেখেন না!
তিনি বলেন, আজকে আমাদের বুড়িগঙ্গা শেষ, কর্ণফুলীও শেষ। এখন মুখে লেকচার দিয়ে লাভ নেই। এতবার অনুরোধ করেছি। কিন্তু কাজ হচ্ছে না। মেট্রোরেল আমাদের সম্পদ। ২০৩০ সালে ৬টি এমআরটি লাইনের কাজ শেষ হবে। এগুলোর মধ্যে দুটিই পাতাল রেল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে পরিকল্পনা, ঢাকা সেটিরই অবিচ্ছেদ্য অংশ।
ব্র্যান্ডিং সেমিনারে অতিথিদের আমন্ত্রণ নিয়ে সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, সামনে যারা বসে আছেন তারা বেশিরভাগই আমাদের মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা। কিন্তু যাদের কাছে ব্র্যান্ডিংয়ের দরকার তারা নেই। তিন লাখ যাত্রী প্রতিদিন উত্তরা থেকে মতিঝিল আসছেন। মতিঝিল থেকে উত্তরা যাচ্ছেন। এখানে তাদের কাউকে রাখা দরকার ছিল। মন্ত্রণালয়ের লোকদের কাছে ব্র্যান্ডিং করা দরকার আছে কিনা- এটা আমি আগেও বলেছি। আমরা কাদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখছি সেটা আমাদের মনে রাখতে হবে।
বহির্বিশ্বের পরিবহনের সঙ্গে তুলনা করে তিনি বলেন, এই শহরে যে বাসগুলো চলে, এখানে এত গরিব বাস। টিভিতে দেখি আফ্রিকান ছোট ছোট গাড়ি চলে, সেগুলো দেখতে অনেক সুন্দর। অথচ এই শহরের বাসগুলো জরাজীর্ণ।
কাদের বলেন, এই জরাজীর্ণ বাস নিয়ে আমরা মিটিং করে বিআরটিএর সঙ্গে কথা বলেও সমাধান করতে পারিনি। ঢাকার সঙ্গে এসব যায় না। আজ আমাদের বুড়িগঙ্গা শেষ, কর্ণফুলীও শেষ।
তিনি বলেন, আমাদের মেট্রোরেল অনেক সুন্দর, শব্দদূষণ নেই। অথচ পিলারগুলো পোস্টার দিয়ে ভরা। অপরিচ্ছন্ন নোংরা। মেট্রোরেল আমাদের সম্পদ। ২০৩০ সালে আমাদের টার্গেট ছিল ৬টি এমআরটি লাইনের যে কাজ শেষ হবে। ১ ও ৫ এর গ্রাউন্ড ম্যাপিং হয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ব্রেইনে আজ মেট্রোরেল, এলিভ্যাটেড এক্সপ্রেস। এই বাংলাদেশ নিয়ে তার যে বহুমুখী পরিকল্পনা। এই ঢাকা তার অবিচ্ছেদ্য অংশ।
ঢাকার দুই মেয়রের উদ্দেশ্যে সেতুমন্ত্রী বলেন, যে বাসগুলো চলে, ভীষণ খারাপ লাগে। এত আধুনিক মেট্রোরেল থেকে নেমে যখন গরিব গরিব বাসে, জীর্ণ-শীর্ণ বাস দেখতে কেমন লাগে। আমাদের মালিকেরা কি লজ্জা পায় না। তারা কি বিদেশে যান না, দেখেন না।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিনুল্লাহ নূরীর সভাপতিত্বে এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি রেজওয়ান আহমেদ তৌফিক, ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক, জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি, জাইকা বাংলাদেশে প্রতিনিধি ইচিগুচি তোমোহোদি।