Dhaka শুক্রবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৫, ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভোলার ইলিশা-১ কূপকে দেশের ২৯তম গ্যাসক্ষেত্র ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ভোলার ইলিশা-১ কূপটিকে দেশের ২৯তম গ্যাসক্ষেত্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। নতুন এই কূপে মজুদ প্রায় ২০০ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। দৈনিক গড়ে ২০ মিলিয়ন ঘনফুট করে গ্যাস উত্তোলন করা যাবে। সেই হিসাবে ২৫ থেকে ২৬ বছর গ্যাসক্ষেত্রটি থেকে গ্যাস পাওয়া যাবে।

সোমবার (২২ মে) বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ রাজধানীর বারিধারায় তার বাসভাবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, নতুন এ কূপে মজুদ রয়েছে প্রায় ২০০ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। যা থেকে দিনে গড়ে ২০ মিলিয়ন ঘনফুট করে গ্যাস তোলা যাবে। সেই হিসাবে ২৫ থেকে ২৬ বছর গ্যাস ক্ষেত্রটি থেকে গ্যাস পাওয়া যাবে। আমাদের একটি প্রসেস প্লান্ট রয়েছে, আরও একটি আনার কাজ শুরু হয়েছে। আশা করছি, দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে পাইপলাইনে দেওয়া সম্ভব হবে। আমরা ভোলা থেকে বরিশাল হয়ে খুলনা যাবে একটি পাইপলাইন। প্রি-ফিজিবিলিটি টেস্ট শেষ, এখন ফিজিবিলিটি স্ট্যাডির কাজ চলছে।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, যদি আমদানিকৃত এলএনজির দর বিবেচনা করি, তাহলে এই গ্যাসের মূল্য দাঁড়াবে ২৬ হাজার কোটি টাকা। এটা খুবই আনন্দের সংবাদ এবং সৌভাগ্যের। ভোলাতে সব মিলিয়ে প্রায় তিন টিসিএফ গ্যাস মজুত আশা করা হচ্ছে।

ভোলার গ্যাসক্ষেত্রটি বড় আকারের স্বপ্ন দেখাচ্ছে জানিয়ে নসরুল হামিদ বলেন, ভোলার গ্যাসের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিতে কাজ করছি আমরা। পাইপলাইন নির্মাণ করে ভোলার গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। দুই বছরের মধ্যে পাইপলাইন সম্পন্ন করতে চায় সরকার। পাইপলাইনে ভোলার গ্যাস সরবরাহ শুরু হতে লাগবে আরও তিন বছর।

তিনি বলেন, যত শিল্প এলাকা হবে ভবিষ্যতে সেখানে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে চায় সরকার। ভোলার গ্যাস দিয়ে মানুষকে কীভাবে সুবিধা দেয়া যায়, সেটা আমরা বিবেচনা করে দেখছি।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ভূতাত্ত্বিক তথ্য এবং ডিএসটি রিপোর্ট অনুযায়ী, ইলিশা-১ কূপে গ্যাসের সম্ভাব্য মজুদ প্রায় ২০০ বিলিয়ন ঘনফুট (বিসিএফ)। দৈনিক গড় ২০ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস উৎপাদন বিবেচনায় কূপটি থেকে ২৫-২৬ বছর গ্যাস উৎপাদন সম্ভব হবে। ইলিশা-১ কূপে গ্যাসের উল্লিখিত মজুদ বিবেচনায় গ্রাহক পর্যায়ে গ্যাসের আনুমানিক মূল্য প্রায় ৬ হাজার ৭৪৪ কোটি টাকা।

দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে এলএনজির বিদ্যমান মূল্য হিসাবে ইলিশা-১ কূপে গ্যাসের মজুদ (২০০ বিলিয়ন ঘনফুট) বিবেচনায় গ্যাসের আনুমানিক মূল্য প্রায় ২৬ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা।

সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, এটি হবে ভোলা জেলার তৃতীয় গ্যাসক্ষেত্র। অন্য দুটি হলো শাহবাজপুর ও ভোলা নর্থ গ্যাসক্ষেত্র। ভোলায় তিন গ্যাসক্ষেত্র (শাহজাদপুর, ভোলা নর্থ ও ইলিশা) মিলে ২ দশমিক ২৩ টিসিএফ গ্যাস মজুদ রয়েছে। সেখান থেকে প্রতিদিন উত্তোলন সক্ষম ২০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস।

সম্প্রতি রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান গ্যাজপ্রম বাপেক্সের হয়ে কূপটি খনন করে। গত মার্চে ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা ইউনিয়নের মালের হাটসংলগ্ন এলাকায় খননকাজ শুরু হয়। তিন হাজার ৪৭৫ মিটার গভীর পর্যন্ত খননকাজ শেষ হয় ২৪ এপ্রিল।

ভোলা জেলায় মোট ৩টি গ্যাসক্ষেত্রের ৯টি কূপ রয়েছে। এগুলো হলো- বোরহানউদ্দিন উপজেলার শাহাবাজপুর গ্যাস ক্ষেত্র ৬টি কূপ, সদরের ভেদুরিয়া ইউনিয়নের ভোলা নর্থর ২টি ও সর্বশেষ ইলিশা গ্যাস ক্ষেত্রের ইলিশা ১ কূপ। ভোলায় মজুদিকৃত গ্যাসের পরিমাণ ১ দশমিক ৭ টিসিএফ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

শেখ মুজিব জাতির জনক নন : নাহিদ ইসলাম

ভোলার ইলিশা-১ কূপকে দেশের ২৯তম গ্যাসক্ষেত্র ঘোষণা

প্রকাশের সময় : ১২:২৭:০৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ মে ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ভোলার ইলিশা-১ কূপটিকে দেশের ২৯তম গ্যাসক্ষেত্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। নতুন এই কূপে মজুদ প্রায় ২০০ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। দৈনিক গড়ে ২০ মিলিয়ন ঘনফুট করে গ্যাস উত্তোলন করা যাবে। সেই হিসাবে ২৫ থেকে ২৬ বছর গ্যাসক্ষেত্রটি থেকে গ্যাস পাওয়া যাবে।

সোমবার (২২ মে) বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ রাজধানীর বারিধারায় তার বাসভাবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, নতুন এ কূপে মজুদ রয়েছে প্রায় ২০০ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। যা থেকে দিনে গড়ে ২০ মিলিয়ন ঘনফুট করে গ্যাস তোলা যাবে। সেই হিসাবে ২৫ থেকে ২৬ বছর গ্যাস ক্ষেত্রটি থেকে গ্যাস পাওয়া যাবে। আমাদের একটি প্রসেস প্লান্ট রয়েছে, আরও একটি আনার কাজ শুরু হয়েছে। আশা করছি, দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে পাইপলাইনে দেওয়া সম্ভব হবে। আমরা ভোলা থেকে বরিশাল হয়ে খুলনা যাবে একটি পাইপলাইন। প্রি-ফিজিবিলিটি টেস্ট শেষ, এখন ফিজিবিলিটি স্ট্যাডির কাজ চলছে।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, যদি আমদানিকৃত এলএনজির দর বিবেচনা করি, তাহলে এই গ্যাসের মূল্য দাঁড়াবে ২৬ হাজার কোটি টাকা। এটা খুবই আনন্দের সংবাদ এবং সৌভাগ্যের। ভোলাতে সব মিলিয়ে প্রায় তিন টিসিএফ গ্যাস মজুত আশা করা হচ্ছে।

ভোলার গ্যাসক্ষেত্রটি বড় আকারের স্বপ্ন দেখাচ্ছে জানিয়ে নসরুল হামিদ বলেন, ভোলার গ্যাসের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিতে কাজ করছি আমরা। পাইপলাইন নির্মাণ করে ভোলার গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। দুই বছরের মধ্যে পাইপলাইন সম্পন্ন করতে চায় সরকার। পাইপলাইনে ভোলার গ্যাস সরবরাহ শুরু হতে লাগবে আরও তিন বছর।

তিনি বলেন, যত শিল্প এলাকা হবে ভবিষ্যতে সেখানে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে চায় সরকার। ভোলার গ্যাস দিয়ে মানুষকে কীভাবে সুবিধা দেয়া যায়, সেটা আমরা বিবেচনা করে দেখছি।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ভূতাত্ত্বিক তথ্য এবং ডিএসটি রিপোর্ট অনুযায়ী, ইলিশা-১ কূপে গ্যাসের সম্ভাব্য মজুদ প্রায় ২০০ বিলিয়ন ঘনফুট (বিসিএফ)। দৈনিক গড় ২০ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস উৎপাদন বিবেচনায় কূপটি থেকে ২৫-২৬ বছর গ্যাস উৎপাদন সম্ভব হবে। ইলিশা-১ কূপে গ্যাসের উল্লিখিত মজুদ বিবেচনায় গ্রাহক পর্যায়ে গ্যাসের আনুমানিক মূল্য প্রায় ৬ হাজার ৭৪৪ কোটি টাকা।

দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে এলএনজির বিদ্যমান মূল্য হিসাবে ইলিশা-১ কূপে গ্যাসের মজুদ (২০০ বিলিয়ন ঘনফুট) বিবেচনায় গ্যাসের আনুমানিক মূল্য প্রায় ২৬ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা।

সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, এটি হবে ভোলা জেলার তৃতীয় গ্যাসক্ষেত্র। অন্য দুটি হলো শাহবাজপুর ও ভোলা নর্থ গ্যাসক্ষেত্র। ভোলায় তিন গ্যাসক্ষেত্র (শাহজাদপুর, ভোলা নর্থ ও ইলিশা) মিলে ২ দশমিক ২৩ টিসিএফ গ্যাস মজুদ রয়েছে। সেখান থেকে প্রতিদিন উত্তোলন সক্ষম ২০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস।

সম্প্রতি রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান গ্যাজপ্রম বাপেক্সের হয়ে কূপটি খনন করে। গত মার্চে ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা ইউনিয়নের মালের হাটসংলগ্ন এলাকায় খননকাজ শুরু হয়। তিন হাজার ৪৭৫ মিটার গভীর পর্যন্ত খননকাজ শেষ হয় ২৪ এপ্রিল।

ভোলা জেলায় মোট ৩টি গ্যাসক্ষেত্রের ৯টি কূপ রয়েছে। এগুলো হলো- বোরহানউদ্দিন উপজেলার শাহাবাজপুর গ্যাস ক্ষেত্র ৬টি কূপ, সদরের ভেদুরিয়া ইউনিয়নের ভোলা নর্থর ২টি ও সর্বশেষ ইলিশা গ্যাস ক্ষেত্রের ইলিশা ১ কূপ। ভোলায় মজুদিকৃত গ্যাসের পরিমাণ ১ দশমিক ৭ টিসিএফ।