Dhaka মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভোটের সময় রাতে এআই অপব্যবহার নিয়ে সিইসির শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

নির্বাচনের সময় রাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) অপব্যবহার নিয়ে আশঙ্কার কথা বললেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। তিনি বলেন, রাতের বেলায় এআই অপব্যবহার বেশি হতে পারে।

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবার) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সংক্রান্ত এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই আশঙ্কার কথা বলেন তিনি।

সিইসি বলেন, এআইয়ের অপব্যবহার এখন গ্লোবাল সমস্যা। নির্বাচনে এআইয়ের অপব্যবহার আমরা রোধ করতে চাই। মিসইনফরমেশন ও ডিসইনফরমেশন নিয়ন্ত্রণে আমরা কেন্দ্রীয়ভাবে একটি সেল গঠন করব। তার আগে আপনাদের (বিশেষজ্ঞ) মতামত প্রয়োজন।

তিনি বলেন, নির্বাচনের সময় অনেক কিছু রাতে ঘটে যেতে পারে। বিশেষ করে রাতের বেলায় এআইয়ের অপব্যবহার বেশি হতে পারে। এ জন্য আমাদের দিন-রাত রাউন্ড দ্য ক্লক কাজ করতে হবে। কী ধরনের জনবল আমরা এ কাজে লাগাতে পারি, ডিসইনফরমেশন যেকোনো জায়গা থেকে আসতে পারে, আমরা কীভাবে সেই তথ্য পৌঁছাব, সে বিষয়ে পরামর্শ দরকার।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই-এর অপব্যবহার এখন একটি বৈশ্বিক মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এআইকে অস্ত্র বা যন্ত্রের সঙ্গে তুলনা করে এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, একজন ডাক্তার যেমন এটি ব্যবহার করতে পারেন, তেমনি একজন ছিনতাইকারীও ব্যবহার করতে পারে। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে এআইয়ের অপব্যবহার রোধ করতে এটিকে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সঙ্গে একীভূত করার চেষ্টা চলছে।

সিইসি সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে বলেন, আমরা সবাই মিলে একত্রে চিন্তা করলে আরও অনেক ভালো কিছু বেরিয়ে আসবে। তাই এই কর্মশালাটি একত্রে চিন্তা করে একটি সুনির্দিষ্ট সমাধান নিয়ে আসার একটি সুযোগ।

সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা চেয়ে সিইসি কড়া নির্দেশনা দিয়ে বলেন, নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় এআইয়ের অপব্যবহার মোকাবিলায় একটি শক্তিশালী অবকাঠামো তৈরির জন্য কর্মশালায় উপস্থিত বিশেষজ্ঞ ও কর্মকর্তাদের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট কয়েকটি বিষয়ে মৌলিক সুপারিশ চাওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র নীতিগত নির্দেশিকা নয়, বরং বাস্তবায়নযোগ্য খুঁটিনাটি জানতে চেয়েছি। তিনি বলেন, আমি এই কর্মশালা থেকে সুনির্দিষ্ট কিছু পরামর্শ চাই।

সিইসি জোর দিয়ে বলেন, নির্বাচন চলাকালীন সময়ে, বিশেষ করে গভীর রাতেও বহু কিছু ঘটে যেতে পারে। তাই ভুল তথ্য বা মিথ্যা তথ্যের দ্রুত মোকাবিলায় গঠিত সেলকে অবশ্যই ২৪ ঘণ্টা কাজ করতে হবে। এ কাজের জন্য কী ধরনের লোকবল নিয়োগ দিতে হবে তা নিশ্চিত করতে হবে।

ফ্যাক্ট চেকিংয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, ফ্যাক্ট চেকিংয়ের পদ্ধতি কেমন হবে, কত দ্রুত তথ্য যাচাই করা যাবে, এবং কোন কোন সংস্থাকে এর জন্য কাজে লাগানো হবে—এই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট সমাধান দরকার। ফ্যাক্ট চেকিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় জনবল সংখ্যা কত হবে, তারও ধারণা দিতে হবে।

সিইসি পাহাড়ি অঞ্চল বা প্রত্যন্ত এলাকা থেকে ভুল তথ্য ছড়ানোর চ্যালেঞ্জ নিয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, ধরুন, পাহাড়ের দুর্গম অঞ্চল বা সমুদ্র উপকূলের অফশোর আইল্যান্ডগুলো থেকে অস্বাভাবিক বা মিথ্যা তথ্য আসতে পারে। সেই তথ্য বা মিথ্যা তথ্যের কাছে পৌঁছানো এবং সেগুলোকে মোকাবিলা করার উপায় কী? এজন্য প্রত্যন্ত অঞ্চলের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সেলের সংযোগ স্থাপন করা অত্যন্ত জরুরি। প্রয়োজনে প্রতি শিফটে কতজন কর্মী নিয়োগ করতে হবে এবং তাদের শিক্ষাগত পটভূমি বা অভিজ্ঞতা কেমন হতে হবে, সে বিষয়ে বিস্তারিত সুপারিশ দিতে হবে।

স্থানীয় সংযোগের বিষয়ে সিইসি বলেন, প্রত্যন্ত অঞ্চলে কারা আমাদের হয়ে কাজ করবে এবং এই মিথ্যা তথ্যগুলো সম্পর্কে আমাদের সাথে যোগাযোগ করবে—এই সব খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে পরামর্শ দিতে হবে। এই কর্মশালাটি অত্যন্ত কার্যকর হবে এবং আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনকে তার যাত্রাপথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে বলে প্রত্যাশা করেন সিইসি।

এ সময় চার নির্বাচন কমিশনার, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ভোটের সময় রাতে এআই অপব্যবহার নিয়ে সিইসির শঙ্কা

প্রকাশের সময় : ১২:৫৬:৪০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

নির্বাচনের সময় রাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) অপব্যবহার নিয়ে আশঙ্কার কথা বললেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। তিনি বলেন, রাতের বেলায় এআই অপব্যবহার বেশি হতে পারে।

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবার) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সংক্রান্ত এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই আশঙ্কার কথা বলেন তিনি।

সিইসি বলেন, এআইয়ের অপব্যবহার এখন গ্লোবাল সমস্যা। নির্বাচনে এআইয়ের অপব্যবহার আমরা রোধ করতে চাই। মিসইনফরমেশন ও ডিসইনফরমেশন নিয়ন্ত্রণে আমরা কেন্দ্রীয়ভাবে একটি সেল গঠন করব। তার আগে আপনাদের (বিশেষজ্ঞ) মতামত প্রয়োজন।

তিনি বলেন, নির্বাচনের সময় অনেক কিছু রাতে ঘটে যেতে পারে। বিশেষ করে রাতের বেলায় এআইয়ের অপব্যবহার বেশি হতে পারে। এ জন্য আমাদের দিন-রাত রাউন্ড দ্য ক্লক কাজ করতে হবে। কী ধরনের জনবল আমরা এ কাজে লাগাতে পারি, ডিসইনফরমেশন যেকোনো জায়গা থেকে আসতে পারে, আমরা কীভাবে সেই তথ্য পৌঁছাব, সে বিষয়ে পরামর্শ দরকার।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই-এর অপব্যবহার এখন একটি বৈশ্বিক মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এআইকে অস্ত্র বা যন্ত্রের সঙ্গে তুলনা করে এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, একজন ডাক্তার যেমন এটি ব্যবহার করতে পারেন, তেমনি একজন ছিনতাইকারীও ব্যবহার করতে পারে। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে এআইয়ের অপব্যবহার রোধ করতে এটিকে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সঙ্গে একীভূত করার চেষ্টা চলছে।

সিইসি সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে বলেন, আমরা সবাই মিলে একত্রে চিন্তা করলে আরও অনেক ভালো কিছু বেরিয়ে আসবে। তাই এই কর্মশালাটি একত্রে চিন্তা করে একটি সুনির্দিষ্ট সমাধান নিয়ে আসার একটি সুযোগ।

সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা চেয়ে সিইসি কড়া নির্দেশনা দিয়ে বলেন, নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় এআইয়ের অপব্যবহার মোকাবিলায় একটি শক্তিশালী অবকাঠামো তৈরির জন্য কর্মশালায় উপস্থিত বিশেষজ্ঞ ও কর্মকর্তাদের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট কয়েকটি বিষয়ে মৌলিক সুপারিশ চাওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র নীতিগত নির্দেশিকা নয়, বরং বাস্তবায়নযোগ্য খুঁটিনাটি জানতে চেয়েছি। তিনি বলেন, আমি এই কর্মশালা থেকে সুনির্দিষ্ট কিছু পরামর্শ চাই।

সিইসি জোর দিয়ে বলেন, নির্বাচন চলাকালীন সময়ে, বিশেষ করে গভীর রাতেও বহু কিছু ঘটে যেতে পারে। তাই ভুল তথ্য বা মিথ্যা তথ্যের দ্রুত মোকাবিলায় গঠিত সেলকে অবশ্যই ২৪ ঘণ্টা কাজ করতে হবে। এ কাজের জন্য কী ধরনের লোকবল নিয়োগ দিতে হবে তা নিশ্চিত করতে হবে।

ফ্যাক্ট চেকিংয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, ফ্যাক্ট চেকিংয়ের পদ্ধতি কেমন হবে, কত দ্রুত তথ্য যাচাই করা যাবে, এবং কোন কোন সংস্থাকে এর জন্য কাজে লাগানো হবে—এই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট সমাধান দরকার। ফ্যাক্ট চেকিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় জনবল সংখ্যা কত হবে, তারও ধারণা দিতে হবে।

সিইসি পাহাড়ি অঞ্চল বা প্রত্যন্ত এলাকা থেকে ভুল তথ্য ছড়ানোর চ্যালেঞ্জ নিয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, ধরুন, পাহাড়ের দুর্গম অঞ্চল বা সমুদ্র উপকূলের অফশোর আইল্যান্ডগুলো থেকে অস্বাভাবিক বা মিথ্যা তথ্য আসতে পারে। সেই তথ্য বা মিথ্যা তথ্যের কাছে পৌঁছানো এবং সেগুলোকে মোকাবিলা করার উপায় কী? এজন্য প্রত্যন্ত অঞ্চলের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সেলের সংযোগ স্থাপন করা অত্যন্ত জরুরি। প্রয়োজনে প্রতি শিফটে কতজন কর্মী নিয়োগ করতে হবে এবং তাদের শিক্ষাগত পটভূমি বা অভিজ্ঞতা কেমন হতে হবে, সে বিষয়ে বিস্তারিত সুপারিশ দিতে হবে।

স্থানীয় সংযোগের বিষয়ে সিইসি বলেন, প্রত্যন্ত অঞ্চলে কারা আমাদের হয়ে কাজ করবে এবং এই মিথ্যা তথ্যগুলো সম্পর্কে আমাদের সাথে যোগাযোগ করবে—এই সব খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে পরামর্শ দিতে হবে। এই কর্মশালাটি অত্যন্ত কার্যকর হবে এবং আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনকে তার যাত্রাপথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে বলে প্রত্যাশা করেন সিইসি।

এ সময় চার নির্বাচন কমিশনার, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।