চাঁদপুর জেলা প্রতিনিধি :
নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান বলেছেন, ভোটার আনার দায়িত্ব প্রার্থীদের, আর পরিবশে ঠিক রাখার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের।
মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে তিনি চাঁদপুর জেলার পাঁচটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা ও ব্যক্তিবর্গের সাথে বিশেষ আইনশৃঙ্খলা ও মতবিনিময় সভা শেষে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ভোটারদের ভোট দিতে উৎসাহ দিতে রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সকল পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বিভিন্ন এলাকায় প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। ভোটের অধিকার আপনার। আপনি ভোট দিতে আসেন। আপনার ভোট আপনি দেবেন, অন্য কেউ আপনার ভোট দেবে না। ভোটের সুন্দর পরিবেশ বজায় থাকবে। আজকের অনুষ্ঠানে প্রার্থীদের বলেছি, ভোটকেন্দ্রে ভোটার আনার দায়িত্ব তাদের। কিন্তু সুস্থ্য সুন্দর পরিবেশে ভোটগ্রহণের দায়িত্ব আমাদের।
আনিছুর রহমান বলেন, প্রচার-প্রচারণায় বাধা সৃষ্টি করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইন অনুযায়ী যতটুকু প্রচার-প্রচারণার সুযোগ দেওয়া আছে তা করতে দিতে হবে। এক্ষেত্রে প্রার্থীদেরও দায়িত্ব আছে। আচরণবিধিতে আছে কে কোথায় প্রচারণা করতে চায় তার ২৪ ঘণ্টা আগে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে জানাতে হবে। কারণ একই স্থানে যদি দুইজনের নির্বাচনী প্রচারণার কার্যক্রম হয়, তাহলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে। তাই আমরা প্রার্থীদের বিষয়টি অবহিত করেছি। আমাদের মিশন হচ্ছে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে চাই। এটা করার জন্য আমাদের যা যা প্রয়োজন আমরা তাই করব। যিনি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আসবেন আমরা তাকে গ্রহণ করব।
ইসি আলমগীর বলেন, ভোট দেওয়া সবার অধিকার। প্রার্থীরা বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে ভোটার উপস্থিতি করাবে। পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ রাখতে জেলা রিটানিং কর্মকর্তা ও পুলিশ সুপারসহ আইনশৃংখলা রক্ষাবাহিনী কাজ করবে।
নির্বাচন কমিশনার বলেন, ভোটারদের কেন্দ্রে নিয়ে আসতে শুধু প্রার্থীরাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন। এ ছাড়া নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় আচরণবিধি মানা হচ্ছে কি না তা দেখতেও গোটা কমিশন এখন মাঠে চষে বেড়াচ্ছে। সুতরাং এই নির্বাচন নিয়ে কোনো প্রশ্ন ওঠার কারণ নেই।
আনিছুর রহমান বলেছেন, এবার ব্যালট পেপার নিবার্চনের দিন সকালে কেন্দ্রে পৌঁছানো হবে। সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হবে। তার আগেই ব্যালট পেপার কেন্দ্রে পৌঁছে যাবে। অর্থাৎ সময় মতো পৌঁছে যাবে। এতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থাকবে। এজন্য প্রয়োজনে সেনাবাহিনী-বিজিবির সহায়তা নেওয়া হবে। তবে যুক্তিক কারণ দেখিয়ে কিছু দুর্গম এলাকা দ্বীপ এবং চরঞ্চাচলে ভোটগ্রহণের আগের দিন ব্যালট পেপার পৌঁছানো হবে।
আনিছুর রহমান বলেন, যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী আছেন তারা কিন্তু কম শক্তি সমর্থক নিয়ে নির্বাচনের মাঠে নেই। তাদের সমর্থক আছে সেটা বিবেচনা করেই মাঠে নেমেছেন। তারা মাঠে থাকবেন। আজকের আলোচনায় তাদের প্রত্যেকের অভিযোগের কথাও শুনেছি। তাদেরকে বলেছি- আপনারা মাঠে থাকেন, শেষ সময় পর্যন্ত মাঠে থাকতে হবে। ভোটের দিন আরেকটি বিষয় লক্ষ্য করা যায়, প্রার্থীরা বলেন- আমার এজেন্ট বের করে দিয়েছে। মূলত তিনি এজেন্টই দেননি। যে কারণে আজকে প্রার্থীদের বলেছি- ভোটের দিন একটি নির্ধারিত ফরম দেবেন। ভোট শুরু হওয়ার আধাঘণ্টা আগে যেন তাদের এজেন্টদের নাম দেন এবং তারা যেন উপস্থিত থাকেন। ভোট শেষ হওয়ার পরে গণনা পর্যন্ত এজেন্ট থাকতে হবে এবং ফলাফলে স্বাক্ষর দেবে। তার প্রার্থীর ফলাফল যাই হোক না কেন উপস্থিত থাকতে হবে।
নির্বাচন কমিশনার বলেন, আমাদের কাছে অভিযোগ আসছে। আমরা অভিযোগগুলো তদন্ত করে দেখছি এবং সতত্যা পেলে সেগুলো মামলা হচ্ছে। এক্ষেত্রে পুলিশতো বাদী হয়ে মামলা নিবেনা। কারণ পুলিশত সরকার পক্ষের লোক। যিনি অভিযোগকারী তাকেই প্রথমে থানায় অভিযোগ করতে হবে। অভিযোগ দেরি করে দিলে বিষয়টি দূর্বল হয়ে যায়। এই বিষয়টিও স্বতন্ত্রপ্রার্থীদের দেখতে হবে।
এসময় চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলায় একটি ইউনিয়নে নারীরা ভোট না দেওয়া প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘ইসলামে ভোট না দেওয়ার কথা বলা হয়নি। সেখানে সকল প্রার্থীকে নিয়ে উদ্বুদ্ধকরণ সভা করার কথা বলা হয়েছে।’
এ সময় চাঁদপুর জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, জেলা নির্বাচন কমকর্তা তোফায়েল হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।