Dhaka মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৫ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভূমি আইনে কৃষক স্বার্থ পরিপন্থি ধারা বাতিলসহ ৬ দাবিতে মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিনা ক্ষতিপূরণে কৃষকের জমিতে প্রকল্প বন্ধ ও ভূমি আইনে কৃষকদের স্বার্থের পরিপন্থি ধারা বাতিলসহ ৬ দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছেন চরাঞ্চল ও নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা।

শনিবার (৭ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে চরাঞ্চল ও নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও কৃষিস্বার্থ রক্ষা সংগ্রাম কমিটি এ মানববন্ধনের আয়োজন করে।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, দেশের নদী ভাঙন অঞ্চলে বসবাসকারী তিন কোটি মানুষ জান-মালের ঝুঁকি নিয়ে সব প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে অনাবাদি উঁচুনিচু জমি আবাদযোগ্য করে দেশের কৃষি উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন। অথচ স্বাধীন দেশে আইনের মারপ্যাঁচে আজ চরের মানুষ তার পৈত্রিক জমির প্রজাস্বত্ব হারিয়েছেন।

তারা আরও বলেন, ভূমি অফিস জেগে ওঠা চরে পূর্র্বতন মালিক বা তার উত্তরাধিকারকে জমি খারিজ দেয় না। বিগত সময়ে বিভিন্ন জরিপে নিজ নামে জমিজমা রেকর্ড করা সত্ত্বেও ভূমি অফিস খাজনাদি না নেওয়ায় এসব অঞ্চলের মানুষ জমিজমা বিক্রি করতে পারছে না। এতে এসব অঞ্চলের মানুষ জমিজমা থাকা সত্ত্বেও উচ্চশিক্ষা ও জরুরি চিকিৎসা নিতে পারছে না।

কৃষক সংগ্রাম কমিটির কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক কৃষকনেতা জাহিদ হোসেন খান বলেন, বর্তমানে বিশেষজ্ঞ সমীক্ষা ছাড়াই সারাদেশে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে নদী খনন করার নামে চলছে বালু ব্যবসার মহোৎসব। বালু মাফিয়াচক্র ড্রেজিংয়ের নামে কৃষকদের কায়েমি জমি কেটে নিচ্ছে। নদীর পাড় সংরক্ষণও ঢালু সঠিক মাপমতো না করায় নদী খননের পরে জমিজমা ভেঙে আবার নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। এসব ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নেই। তাই নদী ভাঙন অঞ্চলের মানুষের অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থেই লড়াই সংগ্রামে নামতে হয়েছে।

নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও কৃষিস্বার্থ রক্ষা সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক নাটুয়াপাড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান প্রবীণ কৃষকনেতা আব্দুল কাদেরের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, ক্ষেতমজুর সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সোহেল আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন রেজা প্রমুখ।

তাদের দাবিগুলো হলো

১. ভূমি আইন ২০২৩-এ ‘যখনই চর জেগে উঠবে তখনই চলতি কর পরিশোধ সাপেক্ষে প্রজাস্বত্ব বহাল হবে’ এমন বিধান রেখে অবিলম্বে সংসদে আইন পাস করা। ভূমি আইনে কৃষক স্বার্থের পরিপন্থি ধারা বাতিল করা।

২. চরাঞ্চলে ডিএস, সিএস, এসএ, আরএস রেকর্ড ও চিটার ভিত্তিতে প্রজাস্বত্ব বহাল ও খাজনা খারিজ চালু করা।

৩. মাদারগঞ্জে তিন ফসলি জমিতে সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল করে অন্যত্র স্থানান্তর করা।

৪. বিনা ক্ষতিপূরণে কৃষকের জমিতে কোনো প্রকল্প নয়, তিন ফসলি জমিতে প্রকল্প নেওয়া বন্ধ করা। প্রকৃত কৃষকদের সাশ্রয়ী মূল্যে সার, বীজ, কীটনাশক ও অন্যান্য কৃষি উপকরণ দেওয়া।

৫. নদীভাঙন রোধে ও জলাবদ্ধতা নিরসনে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষককে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা।

৬. চরাঞ্চল, বীর অঞ্চল ও শহরে ভিন্ন ভিন্ন জমির সিলিংয়ের বন্দোবস্ত রেখে সারা দেশে গ্রাম-শহরে ব্যক্তিগত স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির সিলিং পুনর্র্নিধারণ করা। উদ্বৃত্ত সম্পত্তি ভূমিহীন-আশ্রয়হীন মানুষের মধ্যে বণ্টন করা।

 

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন সড়কের বেহাল দশা, চলাচলে চরম ভোগান্তি

ভূমি আইনে কৃষক স্বার্থ পরিপন্থি ধারা বাতিলসহ ৬ দাবিতে মানববন্ধন

প্রকাশের সময় : ০৬:৫৪:৪১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ অক্টোবর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিনা ক্ষতিপূরণে কৃষকের জমিতে প্রকল্প বন্ধ ও ভূমি আইনে কৃষকদের স্বার্থের পরিপন্থি ধারা বাতিলসহ ৬ দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছেন চরাঞ্চল ও নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা।

শনিবার (৭ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে চরাঞ্চল ও নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও কৃষিস্বার্থ রক্ষা সংগ্রাম কমিটি এ মানববন্ধনের আয়োজন করে।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, দেশের নদী ভাঙন অঞ্চলে বসবাসকারী তিন কোটি মানুষ জান-মালের ঝুঁকি নিয়ে সব প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে অনাবাদি উঁচুনিচু জমি আবাদযোগ্য করে দেশের কৃষি উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন। অথচ স্বাধীন দেশে আইনের মারপ্যাঁচে আজ চরের মানুষ তার পৈত্রিক জমির প্রজাস্বত্ব হারিয়েছেন।

তারা আরও বলেন, ভূমি অফিস জেগে ওঠা চরে পূর্র্বতন মালিক বা তার উত্তরাধিকারকে জমি খারিজ দেয় না। বিগত সময়ে বিভিন্ন জরিপে নিজ নামে জমিজমা রেকর্ড করা সত্ত্বেও ভূমি অফিস খাজনাদি না নেওয়ায় এসব অঞ্চলের মানুষ জমিজমা বিক্রি করতে পারছে না। এতে এসব অঞ্চলের মানুষ জমিজমা থাকা সত্ত্বেও উচ্চশিক্ষা ও জরুরি চিকিৎসা নিতে পারছে না।

কৃষক সংগ্রাম কমিটির কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক কৃষকনেতা জাহিদ হোসেন খান বলেন, বর্তমানে বিশেষজ্ঞ সমীক্ষা ছাড়াই সারাদেশে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে নদী খনন করার নামে চলছে বালু ব্যবসার মহোৎসব। বালু মাফিয়াচক্র ড্রেজিংয়ের নামে কৃষকদের কায়েমি জমি কেটে নিচ্ছে। নদীর পাড় সংরক্ষণও ঢালু সঠিক মাপমতো না করায় নদী খননের পরে জমিজমা ভেঙে আবার নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। এসব ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নেই। তাই নদী ভাঙন অঞ্চলের মানুষের অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থেই লড়াই সংগ্রামে নামতে হয়েছে।

নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও কৃষিস্বার্থ রক্ষা সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক নাটুয়াপাড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান প্রবীণ কৃষকনেতা আব্দুল কাদেরের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, ক্ষেতমজুর সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সোহেল আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন রেজা প্রমুখ।

তাদের দাবিগুলো হলো

১. ভূমি আইন ২০২৩-এ ‘যখনই চর জেগে উঠবে তখনই চলতি কর পরিশোধ সাপেক্ষে প্রজাস্বত্ব বহাল হবে’ এমন বিধান রেখে অবিলম্বে সংসদে আইন পাস করা। ভূমি আইনে কৃষক স্বার্থের পরিপন্থি ধারা বাতিল করা।

২. চরাঞ্চলে ডিএস, সিএস, এসএ, আরএস রেকর্ড ও চিটার ভিত্তিতে প্রজাস্বত্ব বহাল ও খাজনা খারিজ চালু করা।

৩. মাদারগঞ্জে তিন ফসলি জমিতে সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল করে অন্যত্র স্থানান্তর করা।

৪. বিনা ক্ষতিপূরণে কৃষকের জমিতে কোনো প্রকল্প নয়, তিন ফসলি জমিতে প্রকল্প নেওয়া বন্ধ করা। প্রকৃত কৃষকদের সাশ্রয়ী মূল্যে সার, বীজ, কীটনাশক ও অন্যান্য কৃষি উপকরণ দেওয়া।

৫. নদীভাঙন রোধে ও জলাবদ্ধতা নিরসনে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষককে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা।

৬. চরাঞ্চল, বীর অঞ্চল ও শহরে ভিন্ন ভিন্ন জমির সিলিংয়ের বন্দোবস্ত রেখে সারা দেশে গ্রাম-শহরে ব্যক্তিগত স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির সিলিং পুনর্র্নিধারণ করা। উদ্বৃত্ত সম্পত্তি ভূমিহীন-আশ্রয়হীন মানুষের মধ্যে বণ্টন করা।