নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মাঝারি ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এতে বিভিন্ন জায়গায় ভবন হেলে পড়া, ফাটল ধরার ঘটনাও ঘটেছে।
শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকালে ১০টা ৩৮ মিনিটে কয়েক সেকেন্ডের এই ভূমিকম্পে রাজধানীর বাড্ডার লিংক রোডে একটি ৫ তলা ভবন, নিউমার্কেট এলাকায় একটি ভবন হেলে পড়েছে।
এছাড়াও রামপুরা টিভি রোডে কয়েকটা বিল্ডিং একটা অন্যটার ওপর হেলে পড়েছে। উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টরের ৪ নাম্বার রোডের একটি ৬ তলা বাড়ির দ্বিতীয় তলায় চার পাশে বড় ফাটল ধরেছে। এদিকে পঙ্গু হাসপাতালের সামনের অংশে ওপর পর্যন্ত বড় ফাটল ধরেছে।
ফায়ার সার্ভিসের তথ্য অনুযায়ী, আরমানিটোলার কসাইটুলি ৬ তলা ভবন ধসে পড়ার খবর পাওয়া যায়। সদরঘাট ও সিদ্দিকবাজার ফায়ার স্টেশন থেকে ২টি ইউনিট সেখানে গিয়ে দেখে। ভবনের কোনও ক্ষতি সাধন হয়নি। পলেস্তারার কিছু অংশ ও কিছু ইট খসে পড়েছিল। ফায়ার সার্ভিস যাওয়ার পরে কোনও হতাহত পাইনি।
এছাড়া খিলগাঁও নির্মাণাধীন ভবন থেকে পার্শ্ববর্তী দোতলা একটি ভবনে একটি ইট পড়ে একজন আহত হন।
সূত্রাপুর স্বামীবাগ আট তলা একটি ভবন অন্য একটি ভবনে হেলে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। সূত্রাপুর ফায়ার স্টেশন থেকে ঘটনাস্থলে গেছে।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে একটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। স্যাটেলাইট ফায়ার স্টেশন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তবে কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
কলাবাগানের আবেদখালী রোড একটি ৭ তলা ভবন হেলে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। মোহাম্মদপুর ফায়ার স্টেশন থেকে একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গেছে। এখনও হতাহতের কোনও খবর পাওয়া যায়নি। ভবন ঠিক আছে, লোকজন আতঙ্কিত হয়ে ফোন করেছিল বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসিন হল, কবি জসীমউদ্দিন হল, স্যার এ এফ রহমান, মোকাররম ভবন, শেখ ফজলুল হলসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় পলেস্তারা খসে পড়েছে।
উত্তর বাড্ডার বাসিন্দা ইমরান হোসেন জানান, শুক্রবার সকালে ঘুমের মধ্যে শক্ত ঝাঁকুনি অনুভব করে অনেকেই বিচলিত হয়ে পড়েন। ভূমিকম্প টের পেয়ে অনেকেই বাসভবন থেকে বেরিয়ে পড়েন। অনেক ভবনে ফাঁটল দেখা দিয়েছে। ঘটনার এক ঘণ্টা বাদেও বাসায় ঢুকতে ভয় পাচ্ছেন।
তিনি জানান, আসবাবপত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, শেলফ থালা-বাসন নিচে পড়ে গেছে। ক্ষয়ক্ষতি দেখতে কোনো জরুরি সাড়াদানকারী দলকে তিনি দেখেননি। মেরামতের জন্য লোক পাওয়া যাচ্ছে না।
আবহাওয়া অধিদফতরের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ১০টা ৩৮ মিনিট ২৬ সেকেন্ডে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এর উৎপত্তিস্থল নরসিংদীর মাধবদী। এর মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৭ রিখটার স্কেল। এটি মধ্যম মাত্রার ভূমিকম্প।
রাজধানী কালাচাঁদপুরের বাসিন্দা আফরোজা খানম লাকি বলেন, ‘আমাদের বাসা ৭ তলায়। ভূমিকম্পের সঙ্গে সঙ্গে পুরো ভবন দুলতে থাকে। জোরে জোরে শব্দ হতে থাকে। বাসার জিনিসপত্র এলোমেলো হয়ে যায়। আমরা দৌড়ে নিচে যাওয়া শুরু করলাম, কিছু সময়ের মধ্যে থেমে যায়।’
এদিকে, মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিস) বলছে, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির তীব্রতা ছিল ৫ দশমিক ৭। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল নরসিংদী।
অন্যদিকে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতাসহ আশপাশের এলাকায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
নিজস্ব প্রতিবেদক 























