Dhaka শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫, ৭ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে : মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বলেছেন, যারা ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন তারা যদি স্বেচ্ছায় এসে তা স্বীকার করেন, তাহলে তাদের জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হবে। নয়তো প্রতারণার দায়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বুধবার (১১ ডিসেম্বর) শহীদ বুদ্ধিজীবী ও মহান বিজয় দিবস এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সার্বিক কার্যক্রম নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

ফারুক ই আজম বলেন, মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়া অনেক বড় অপরাধ। আদালতের কাছ থেকে যখন এ বিষয়টা নির্ণয় হবে তখন তাদের সনদ বাতিল এবং সাজার ব্যবস্থা করব। একই সঙ্গে এসব অমুক্তিযোদ্ধাদের নাম প্রত্যাহারের সুযোগ দিয়ে সাধারণ ক্ষমার চিন্তা করা হচ্ছে।

মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, বহু অভিযোগ আছে যে, মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছে, গেজেটভুক্ত হয়েছে এবং সুবিধাদি গ্রহণ করছে। আমার দৃষ্টিতে এটা জাতির সঙ্গে প্রতারণা। এটা ছোটখাটো অপরাধ নয়, অনেক বড় অপরাধ। আদালতের কাছ থেকে যখন এ বিষয়টা নির্ণয় হবে তখন তাদের তো বাতিল (সনদ) করবোই এবং সাজার ব্যবস্থাও করব, যেন এটার জন্য প্রয়োজনীয় শাস্তি ভোগ করে।

তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রাথমিক ও মূল লক্ষ্য ছিল কোটা সংস্কার। পরবর্তী সময়ে এ আন্দোলন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে রূপ নেয়। এই আন্দোলনের চেতনাকে ধারণ করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা এবং সরকারি চাকরিতে প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির পদে এ পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগপ্রাপ্ত জনবলের সংখ্যা যাচাইয়ের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

উপদেষ্টা বলেন, ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে অমুক্তিযোদ্ধা শনাক্তকরণ প্রক্রিয়া আরম্ভ করা হয়েছে। অমুক্তিযোদ্ধা শনাক্তকরণে অভিযোগ ফরম মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের তথ্যাদি যাচাই-বাছাইয়ের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ ডাটাবেজ তৈরির কাজ এগিয়ে চলছে।

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের হাতে ৩-৪টা তালিকা আছে, বহু রকমের নীল তালিকা, লাল তালিকা, নানা রকমের তালিকা, ভারতীয় তালিকা। বিভিন্ন রকমের মুক্তিযোদ্ধার তালিকা এখানে আছে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, অনুরাগের বশে কিংবা কারো আত্মীয়তার বশে কিংবা অন্য কোনো এখানে বহু মানুষকে মুক্তিযোদ্ধা করা হয়েছে। তাদেরকে চিহ্নিত করতে একটু সময় তো লাগবে। কারণ, আমরা চাই না যারা সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধা তাদের মর্যাদা যেন ক্ষুণ্ন না হয়। সেটাকে অক্ষুণ্ন রেখেই বাকি কাজ সম্পন্ন করতে হবে। এটা আমাদের জন্য একটা দুরূহ কাজ। আমরা প্রচেষ্টা রাখছি। এ ক্ষেত্রেও সফলতা আসবে। ’

উপদেষ্টা বলেন, আমরা একটা ইনডেমনিটিও (সাধারণ ক্ষমা) হয়তো দেব। যারা অমুক্তিযোদ্ধা এভাবে মুক্তিযোদ্ধা হয়ে আসছেন, তারা যেন স্বেচ্ছায় এখান থেকে চলে যান। যদি চলে যান তাহলে হয়তো তারা সাধারণ ক্ষমাও পেতে পারেন। আর যদি সেটা না হয়, আমরা যেটা বলেছি যে এই প্রতারণায় দায়ে আমরা তাদেরকে অভিযুক্ত করব।

তিনি আরও বলেন, সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগপ্রাপ্তদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রস্তুত করার জন্য সব মন্ত্রণালয় থেকে তথ্যাদি সংগ্রহের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এর ফলে সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগপ্রাপ্তদের সংগৃহীত তথ্যাদি যাচাই-বাছাইপূর্বক একটি পূর্ণাঙ্গ ডাটাবেজ তৈরি করা যাবে। এ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগপ্রাপ্তদের সর্বমোট সংখ্যা ৮৯ হাজার ২৩৫ জন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

অপতথ্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামতে ভোটারদের প্রতি আহ্বান সিইসির

ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে : মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা

প্রকাশের সময় : ০৮:৫১:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বলেছেন, যারা ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন তারা যদি স্বেচ্ছায় এসে তা স্বীকার করেন, তাহলে তাদের জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হবে। নয়তো প্রতারণার দায়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বুধবার (১১ ডিসেম্বর) শহীদ বুদ্ধিজীবী ও মহান বিজয় দিবস এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সার্বিক কার্যক্রম নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

ফারুক ই আজম বলেন, মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়া অনেক বড় অপরাধ। আদালতের কাছ থেকে যখন এ বিষয়টা নির্ণয় হবে তখন তাদের সনদ বাতিল এবং সাজার ব্যবস্থা করব। একই সঙ্গে এসব অমুক্তিযোদ্ধাদের নাম প্রত্যাহারের সুযোগ দিয়ে সাধারণ ক্ষমার চিন্তা করা হচ্ছে।

মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, বহু অভিযোগ আছে যে, মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছে, গেজেটভুক্ত হয়েছে এবং সুবিধাদি গ্রহণ করছে। আমার দৃষ্টিতে এটা জাতির সঙ্গে প্রতারণা। এটা ছোটখাটো অপরাধ নয়, অনেক বড় অপরাধ। আদালতের কাছ থেকে যখন এ বিষয়টা নির্ণয় হবে তখন তাদের তো বাতিল (সনদ) করবোই এবং সাজার ব্যবস্থাও করব, যেন এটার জন্য প্রয়োজনীয় শাস্তি ভোগ করে।

তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রাথমিক ও মূল লক্ষ্য ছিল কোটা সংস্কার। পরবর্তী সময়ে এ আন্দোলন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে রূপ নেয়। এই আন্দোলনের চেতনাকে ধারণ করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা এবং সরকারি চাকরিতে প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির পদে এ পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগপ্রাপ্ত জনবলের সংখ্যা যাচাইয়ের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

উপদেষ্টা বলেন, ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে অমুক্তিযোদ্ধা শনাক্তকরণ প্রক্রিয়া আরম্ভ করা হয়েছে। অমুক্তিযোদ্ধা শনাক্তকরণে অভিযোগ ফরম মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের তথ্যাদি যাচাই-বাছাইয়ের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ ডাটাবেজ তৈরির কাজ এগিয়ে চলছে।

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের হাতে ৩-৪টা তালিকা আছে, বহু রকমের নীল তালিকা, লাল তালিকা, নানা রকমের তালিকা, ভারতীয় তালিকা। বিভিন্ন রকমের মুক্তিযোদ্ধার তালিকা এখানে আছে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, অনুরাগের বশে কিংবা কারো আত্মীয়তার বশে কিংবা অন্য কোনো এখানে বহু মানুষকে মুক্তিযোদ্ধা করা হয়েছে। তাদেরকে চিহ্নিত করতে একটু সময় তো লাগবে। কারণ, আমরা চাই না যারা সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধা তাদের মর্যাদা যেন ক্ষুণ্ন না হয়। সেটাকে অক্ষুণ্ন রেখেই বাকি কাজ সম্পন্ন করতে হবে। এটা আমাদের জন্য একটা দুরূহ কাজ। আমরা প্রচেষ্টা রাখছি। এ ক্ষেত্রেও সফলতা আসবে। ’

উপদেষ্টা বলেন, আমরা একটা ইনডেমনিটিও (সাধারণ ক্ষমা) হয়তো দেব। যারা অমুক্তিযোদ্ধা এভাবে মুক্তিযোদ্ধা হয়ে আসছেন, তারা যেন স্বেচ্ছায় এখান থেকে চলে যান। যদি চলে যান তাহলে হয়তো তারা সাধারণ ক্ষমাও পেতে পারেন। আর যদি সেটা না হয়, আমরা যেটা বলেছি যে এই প্রতারণায় দায়ে আমরা তাদেরকে অভিযুক্ত করব।

তিনি আরও বলেন, সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগপ্রাপ্তদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রস্তুত করার জন্য সব মন্ত্রণালয় থেকে তথ্যাদি সংগ্রহের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এর ফলে সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগপ্রাপ্তদের সংগৃহীত তথ্যাদি যাচাই-বাছাইপূর্বক একটি পূর্ণাঙ্গ ডাটাবেজ তৈরি করা যাবে। এ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগপ্রাপ্তদের সর্বমোট সংখ্যা ৮৯ হাজার ২৩৫ জন।