নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ নবী উল্লাহ নবীসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
রাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বিএনপির সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। অগ্নিকাণ্ডের আগে বিএনপি কয়েকজন নেতা ভিডিও কনফারেন্স করে ট্রেনে আগুন দেওয়ার পরিকল্পনা করেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার ও গোয়েন্দা প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
শনিবার (৬ জানুয়ারি) বেলা সোয়া ১২টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ট্রেনে আগুন লাগার আগে বিএনপির ১০/১১ জন ভিডিও কনফারেন্স করেন। সেখানে তারা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সবকিছু পরিকল্পনা করেন।
ডিবিপ্রধান বলেন, বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুনের পরিকল্পনা হিসেবে বিএনপির হাইপ্রোফাইল নেতারা ভিডিও কনফারেন্স করেন। কনফারেন্সে প্রথমে আসেন মহানগর দক্ষিণ যুবদলের আহ্বায়ক খন্দকার এনাম। এরপর আসেন সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়ন, যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ গাফফার, ইকবাল হোসেন বাবলু, একজন দপ্তর সম্পাদক ও কাজী মনসুর।
তারা ভিডিও কনফারেন্সে এসে বৃহত্তর ময়মনসিংহ থেকে ঢাকাগামী ট্রেনে বিশেষ করে নরসিংদীর কাছে সুবিধাজনক স্থানে অগ্নিসংযোগ করার কথা। আরেকটি স্থান কমলাপুর থেকে নারায়ণগঞ্জ লাইনে আপ-ডাউনে সুবিধাজনক স্থানে যাত্রীবাহী ট্রেনে আগুন লাগিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করা।
হারুন অর রশীদ আরও বলেন, দক্ষিণ যুবদল নেতা রবিউল ইসলাম নয়নের তত্ত্বাবধানে যুবদলের কয়েকটি টিম লালবাগের কয়েকজন দাগি সন্ত্রাসী দিয়ে বেনাপোল এক্সপ্রেসে আগুন লাগানো হয়। ভিডিও কনফারেন্সে বলা হয়-ট্রেনে কে আগুন লাগাবেন? কনফারেন্সে থাকা ১০-১২ জনের একজন বলেন তিনি আগুন লাগাতে পারবেন। তবে তদন্তের স্বার্থে এই মুহূর্তে তার নামটি আমরা বলবো না।
হারুন অর রশীদ বলেন, এছাড়া ভিডিও কনফারেন্সে থাকা আরও তিনজন আগুন লাগাতে পারবে বলে জানায়। তারা ২০১৩-১৪ সালে বিভিন্ন এলাকায় বোমা নিক্ষেপ ও অগ্নিসংযোগ করেছিল। তারা মিলে যাত্রাবাড়ীর আশপাশের এলাকা থেকে ট্রেনটিতে অগ্নিসংযোগ করে।
ডিবিপ্রধান আরও বলেন, যে মোবাইল থেকে ভিডিও কনফারেন্স করা হয়েছিল সেই মোবাইলটি উদ্ধার করেছে ডিবি। মোবাইলটি কাজী মনসুরের। তিনি আমাদের কাছে গ্রেফতার আছেন। যারা এক সময় জেলখানায় দাগি আসামি হিসেবে পরিচিত ছিল তারা এই অগ্নিসংযোগ করে।
যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের রিমান্ডে এনে ট্রেনে অগ্নিসংযোগের বিষয়ে বিস্তারিত পরে জানানো হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এদিকে শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টরের একটি বাসা থেকে সাদা পোশাকে কয়েকজন লোক নবী উল্লাহ নবীকে আটক করে নিয়ে যায়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানান, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও গোয়েন্দা কার্যক্রমের ভিত্তিতে বিএনপি নেতা মোহাম্মদ নবী উল্লাহ নবীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।