নিজস্ব প্রতিবেদক :
ভারত বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে নয়, একটি নির্দিষ্ট দলের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
রোববার (২৪ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যলয়ে নিজ দফতরে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপের তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ভারত বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে নয়, একটি নির্দিষ্ট দলের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে চায়। আপনারা দেখেছেন তারা কীভাবে একটি ফ্যাসিবাদী সরকারকে পৃষ্ঠপোষকতা করছে। বাংলাদেশে স্বৈরশাসন কায়েম করতে সমর্থন দিচ্ছে। সেই ২০১৪ সাল, ২০১৮ সাল কিংবা ২০২৩ সালের ৭ জানুয়ারি তারা একই ঘটনা ঘটিয়েছে। বাংলাদেশের ৯৭ ভাগ জনগণের বিরুদ্ধে তারা অবস্থান নিয়েছে।
রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, এক আওয়াজ-স্লোগান আজ সর্বমহলে সমাদৃত, সেটি হলো ভারতের পণ্য বর্জন। দেশের মানুষ খুশি হয়ে তা করেনি, ভারতের দীর্ঘদিনের বঞ্চনা, অপমান লাঞ্ছনা ও ক্ষোভ থেকে তারা এটি করছেন।
তিনি বলেন, আজকের রাজনীতিতে সবচেয়ে সমাদৃত শব্দ ‘ভারতীয় পণ্য বর্জন’। এই পণ্য বর্জন এক দিনে সৃষ্টি হয়নি। দীর্ঘদিনের অপমান, বঞ্চনা ও লাঞ্ছনার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের জনগণ ভারতীয় পণ্য বর্জনের সমর্থন দিয়েছে। কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী এ বর্জনের আহ্বান জানালেও আজ তা সর্বমহলে সমাদৃত।
রিজভী বলেন, কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী ভারতীয় পণ্য বর্জনের ঘোষণা দিতে পারেন, কিন্তু সব মহল ও জনগণের মধ্যে এটি আজ গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। সুতরাং ভারতীয় পণ্য বর্জনে আমরা যে সংহতি জানিয়েছি তা বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে, গণতন্ত্রের পক্ষে।
তিনি বলেন, ‘আজকে ভারত বন্ধুত্বের কথা বলে। অথচ পানির ন্যায্য হিস্যা দেয় না, বন্ধুত্বের কথা বলে প্রতিনিয়ত সীমান্তে বাংলাদেশী হত্যা করা হচ্ছে। এসব অন্যায় ও অবিচারের কারণে বাংলাদেশীদের প্রতিবাদী করে তুলেছে। বাংলাদেশের বাজার বাণিজ্যে তারা একতরফা আধিপত্য বজায় রেখেছে দীর্ঘদিন। তারা বাংলাদেশকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র মনে করলে ভারসাম্যমূলক বাণিজ্য বা অর্থনৈতিক অবকাঠামো গড়ে তুলতো। ভারত কখনোই ব্যবসায়িক নীতি মানেনি।’
তিনি আরো বলেন, দেশ কিভাবে চলবে তা নির্ধারণ করবে জনগণ। দেশবাসীই ভোটের মাধ্যমে ঠিক করবে কে রাষ্ট্র পরিচালনা করবে। আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে। আর এই অবৈধ সরকারকে অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে ভারতের নীতিনির্ধারকেরা। এ কারণেই বাংলাদেশের জনগণের ভারতের বিরুদ্ধে বেশি ক্ষুদ্ধ হয়েছে।
রিজভী বলেন, মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ১৯৭২ সালে ভারতের একতরফা নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন, তিনি পানির ন্যায্য হিস্যার জন্য আন্দোলন করেছিলেন। এ দেশের বাম রাজনৈতিক দলগুলো ভারতের একতরফা নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। জিয়াউর রহমানও ভারতের কাছ থেকে ন্যায্য হিস্যা পেতে নানাভাবে কাজ করেছেন। সুতরাং ভারতীয় পণ্য বর্জনে বিএনপির অবস্থান যৌক্তিক।