Dhaka সোমবার, ০৪ অগাস্ট ২০২৫, ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভারত পাশে ছিল বলেই অনেক বড় দেশের অশুভ খেলা সফল হয়নি : কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

স্বাধীনতাবিরোধীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তুলতে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, গত নির্বাচনে প্রতিকূল পরিবেশে সাঁতার কেটে এগোতে হয়েছে আওয়ামী লীগকে। ভারত বাংলাদেশের পাশে ছিল বলেই অনেক বড় দেশের অশুভ খেলা সফল হয়নি।

শনিবার (১৬ মার্চ) ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের দ্বিবার্ষিক সম্মেলন তিনি এসব কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ভারতের সঙ্গে গায়ে পড়ে তিক্ততার সম্পর্ক তৈরি করে সমস্যার সমাধান সম্ভব না। ভারতের সঙ্গে যে অবিশ্বাসের দেয়াল তৈরি হয়েছিল শেখ হাসিনা ও মোদি সরকার তা ভেঙে দিয়েছে। ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো বলে সিটমহল বিনিময়, ৬৮ বছরের যে সমস্যা তার শান্তিপূর্ণ সমাধান করেছেন। তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এর সমাধানও অবশ্যই হবে, ধৈর্য ধারণ করতে হবে। গায়ে পড়ে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক তিক্ত করে সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, সামাজিক মাধ্যমে যে ইন্ডিয়া আউট ক্যাম্পেইন, এটি সমীচীন নয়। প্রশ্ন রাখেন, ভারত বিরোধী মনোভাব কেন জাগ্রত করার চেষ্টা করা হচ্ছে? যারা নির্বাচনে আসেনি এটি তাদের অপপ্রচারের একটা ঢাল। আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় থাকে তখন ভারত বিরোধীতায় লিপ্ত হয় একটি মহল। এখনো তারা সেটি করছে।

তিনি বলেন, যখন কথা বলি তখন বিশ্বাস থেকেই বলি। বাংলাদেশে ৭৫ থেকে একুশ বছর কারা শাসন করেছিল? সেই একুশ বছর প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কে বৈরিতা সৃষ্টি করেছিল।

তিনি আরও বলেন, সংখ্যালঘু ভাবনাটাই একটি দাসত্বের শেকল। এটি ভেঙে ফেলতে হবে। হিন্দুদের জমি দখল এবং মন্দির ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িতদের রাজনৈতিক পরিচয় থাকলেও তারা সবার অভিন্ন শত্রু, দুর্বৃত্ত।

তিনি বলেন, আপনারা মন মানসিকতায় হীনমন্যতায় ভুগবেন না। মুসলমানের ভোটের চেয়ে আপনার ভোটের কী মূল্য কম? কোন পার্থক্য কী আছে? তাহলে কেন নিজেকে সংখ্যালঘু ভাববেন? এই দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে মুসলমানদের পাশে হিন্দু বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবার অবদান আছে। কারও অবদান কম নয়।

ওবায়দুল কাদের বলেন, যারা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সম্পদ, ধর্মীয় মন্দির এই সব স্পর্শকাতর বিষয়ে তাদের মনে কষ্ট দেন, মন ভেঙে ফেলেন এই সব লোক রাজনৈতিক পরিচয়ে যদিও থাকেন তাদের আসল পরিচয় দুর্বৃত্ত। এরাই হিন্দুদের বাড়ি দখল করে। মন্দির ভাঙচুর করে। এরা আমাদের সকলের অভিন্ন শত্রু। এদের ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ করতে হবে। এর কোন বিকল্প নেই।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, মুসলমানের ভোট ও আপনার ভোটের মধ্যে কোনো পার্থক্য কি আছে? আপনার ভোটের কি মূল্য কম? তাহলে কেন নিজেকে মাইনরিটি ভাববেন? এই দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে মুসলমানদের পাশাপাশি হিন্দু, বৌদ্ধ এবং খ্রিস্টান সবার অবদান রয়েছে, কারও অবদান কম নয়।

সেতুমন্ত্রী বলেন, সংখ্যালঘু ধারণাটাই একটা দাসত্বের শেকল, ভেঙে ফেলতে হবে। দাসত্ব কেন করবেন? বাংলাদেশের সংবিধান কী বলে। কেন নিজেদের সংখ্যালঘু ভাবেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতায় সব ধর্মের মানুষের সমান অবদান ছিল।

এ সময় শেখ হাসিনার সরকারকে সংখ্যালঘু বান্ধব সরকার হিসেবে উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার যতদিন আছে ততদিন পাশে আছে। আওয়ামী লীগ আগেও পাশে ছিল, এখনো আছে এবং আগামীতেও থাকবে। অন্য দল ক্ষমতায় এলে ২০০১ সালের মতো আবার পরিস্থিতি তৈরি হবে।

বাজারে সিন্ডিকেট প্রসঙ্গে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, সিন্ডিকেট কি ভালো? সরকার কেন সিন্ডিকেটকে সমর্থন করবে? সিন্ডিকেট যে বা যাহারা করুক এর সূত্র খুঁজতে হবে। প্রকৃত সত্য বের করতে হবে এবং যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। সরকার এখানে সক্রিয় আছে। সংকট সমাধানের যোগ্য নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাই ধৈর্য ধরার আহ্বান ওবায়দুল কাদেরের।

এর আগে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জে এল ভৌমিকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. চন্দ্রনাথ পোদ্দারের সঞ্চালনায় সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী অধ্যাপক ডা. সামন্ত লাল সেন, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাস গুপ্তসহ সনাতন ধর্মের অন্যান্য নেতারা।

আবহাওয়া

সারাদেশের সব পোশাক কারখানা ৫ আগস্ট বন্ধ

ভারত পাশে ছিল বলেই অনেক বড় দেশের অশুভ খেলা সফল হয়নি : কাদের

প্রকাশের সময় : ০২:২১:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ মার্চ ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

স্বাধীনতাবিরোধীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তুলতে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, গত নির্বাচনে প্রতিকূল পরিবেশে সাঁতার কেটে এগোতে হয়েছে আওয়ামী লীগকে। ভারত বাংলাদেশের পাশে ছিল বলেই অনেক বড় দেশের অশুভ খেলা সফল হয়নি।

শনিবার (১৬ মার্চ) ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের দ্বিবার্ষিক সম্মেলন তিনি এসব কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ভারতের সঙ্গে গায়ে পড়ে তিক্ততার সম্পর্ক তৈরি করে সমস্যার সমাধান সম্ভব না। ভারতের সঙ্গে যে অবিশ্বাসের দেয়াল তৈরি হয়েছিল শেখ হাসিনা ও মোদি সরকার তা ভেঙে দিয়েছে। ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো বলে সিটমহল বিনিময়, ৬৮ বছরের যে সমস্যা তার শান্তিপূর্ণ সমাধান করেছেন। তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এর সমাধানও অবশ্যই হবে, ধৈর্য ধারণ করতে হবে। গায়ে পড়ে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক তিক্ত করে সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, সামাজিক মাধ্যমে যে ইন্ডিয়া আউট ক্যাম্পেইন, এটি সমীচীন নয়। প্রশ্ন রাখেন, ভারত বিরোধী মনোভাব কেন জাগ্রত করার চেষ্টা করা হচ্ছে? যারা নির্বাচনে আসেনি এটি তাদের অপপ্রচারের একটা ঢাল। আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় থাকে তখন ভারত বিরোধীতায় লিপ্ত হয় একটি মহল। এখনো তারা সেটি করছে।

তিনি বলেন, যখন কথা বলি তখন বিশ্বাস থেকেই বলি। বাংলাদেশে ৭৫ থেকে একুশ বছর কারা শাসন করেছিল? সেই একুশ বছর প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কে বৈরিতা সৃষ্টি করেছিল।

তিনি আরও বলেন, সংখ্যালঘু ভাবনাটাই একটি দাসত্বের শেকল। এটি ভেঙে ফেলতে হবে। হিন্দুদের জমি দখল এবং মন্দির ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িতদের রাজনৈতিক পরিচয় থাকলেও তারা সবার অভিন্ন শত্রু, দুর্বৃত্ত।

তিনি বলেন, আপনারা মন মানসিকতায় হীনমন্যতায় ভুগবেন না। মুসলমানের ভোটের চেয়ে আপনার ভোটের কী মূল্য কম? কোন পার্থক্য কী আছে? তাহলে কেন নিজেকে সংখ্যালঘু ভাববেন? এই দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে মুসলমানদের পাশে হিন্দু বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবার অবদান আছে। কারও অবদান কম নয়।

ওবায়দুল কাদের বলেন, যারা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সম্পদ, ধর্মীয় মন্দির এই সব স্পর্শকাতর বিষয়ে তাদের মনে কষ্ট দেন, মন ভেঙে ফেলেন এই সব লোক রাজনৈতিক পরিচয়ে যদিও থাকেন তাদের আসল পরিচয় দুর্বৃত্ত। এরাই হিন্দুদের বাড়ি দখল করে। মন্দির ভাঙচুর করে। এরা আমাদের সকলের অভিন্ন শত্রু। এদের ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ করতে হবে। এর কোন বিকল্প নেই।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, মুসলমানের ভোট ও আপনার ভোটের মধ্যে কোনো পার্থক্য কি আছে? আপনার ভোটের কি মূল্য কম? তাহলে কেন নিজেকে মাইনরিটি ভাববেন? এই দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে মুসলমানদের পাশাপাশি হিন্দু, বৌদ্ধ এবং খ্রিস্টান সবার অবদান রয়েছে, কারও অবদান কম নয়।

সেতুমন্ত্রী বলেন, সংখ্যালঘু ধারণাটাই একটা দাসত্বের শেকল, ভেঙে ফেলতে হবে। দাসত্ব কেন করবেন? বাংলাদেশের সংবিধান কী বলে। কেন নিজেদের সংখ্যালঘু ভাবেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতায় সব ধর্মের মানুষের সমান অবদান ছিল।

এ সময় শেখ হাসিনার সরকারকে সংখ্যালঘু বান্ধব সরকার হিসেবে উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার যতদিন আছে ততদিন পাশে আছে। আওয়ামী লীগ আগেও পাশে ছিল, এখনো আছে এবং আগামীতেও থাকবে। অন্য দল ক্ষমতায় এলে ২০০১ সালের মতো আবার পরিস্থিতি তৈরি হবে।

বাজারে সিন্ডিকেট প্রসঙ্গে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, সিন্ডিকেট কি ভালো? সরকার কেন সিন্ডিকেটকে সমর্থন করবে? সিন্ডিকেট যে বা যাহারা করুক এর সূত্র খুঁজতে হবে। প্রকৃত সত্য বের করতে হবে এবং যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। সরকার এখানে সক্রিয় আছে। সংকট সমাধানের যোগ্য নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাই ধৈর্য ধরার আহ্বান ওবায়দুল কাদেরের।

এর আগে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জে এল ভৌমিকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. চন্দ্রনাথ পোদ্দারের সঞ্চালনায় সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী অধ্যাপক ডা. সামন্ত লাল সেন, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাস গুপ্তসহ সনাতন ধর্মের অন্যান্য নেতারা।