Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভারত থেকে কেনা ইআরপি ব্যবস্থা অকেজো

ফাইল ছবি

বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য ভারত থেকে ভারত থেকে কেনা ইআরপি ব্যবস্থা অকেজো হয়ে আছে। এটি কাজে লাগাতে ফের আরেকটা প্রকল্প গ্রহণ করেছে রেলওয়ে। ২০১৭ সালে প্রায় ৩৩ কোটি টাকার সফটওয়্যার ও সেগুলোর লাইসেন্স কিনেছিল বাংলাদেশ রেলওয়ে। একই সময়ে বাংলাদেশের একটি কোম্পানি থেকে আরো প্রায় ৫২ কোটি টাকার কম্পিউটারসহ বিভিন্ন আইটি সরঞ্জাম কেনে সংস্থাটি। এসব কেনা হয়েছিল রেলওয়ের এন্টারপ্রাইজ রিসোর্স প্ল্যানিং (ইআরপি) ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য।

পরিকল্পনা হয়েছিল টিকিট বিক্রি, আয়-ব্যয়, ইঞ্জিন-কোচ চলাচল, জ্বালানি ব্যবহার, কর্মীদের দৈনন্দিন কর্মঘণ্টা, ওভারটাইমের মতো বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম এই ইআরপি ব্যবস্থার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ ও পর্যবেক্ষণ করা হবে। কিন্তু তথ্য-প্রযুক্তিতে প্রয়োজনীয় জনবল না থাকায় এখন পর্যন্ত ইআরপি ব্যবস্থাটি গড়ে তুলতে পারেনি রেলওয়ে। এরই মধ্যে শেষ হয়েছে সফটওয়্যারের লাইসেন্সের মেয়াদ, নষ্ট হয়েছে কম্পিউটারসহ বিভিন্ন আইটি সরঞ্জাম। অকেজো এই ইআরপি ব্যবস্থা কাজে লাগাতে এবার নতুন একটি সমীক্ষা প্রকল্প গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছে রেলওয়েটি। রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সমীক্ষা শেষে গ্রহণ করা হবে বিনিয়োগ প্রকল্প।

‘বাংলাদেশ রেলওয়েতে ইতোপূর্বে স্থাপিত এন্টারপ্রাইজ রিসোর্স প্ল্যানিং (ইআরটি) সিস্টেম পর্যালোচনাসহ নতুন ক্লাউডভিত্তিক ইআরপি সিস্টেম স্থাপনের নিমিত্তে প্রযুক্তি নির্বাচন ও বাজেট প্রণয়ণের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা’ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে।

রেলওয়েতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বছরের ২৪ মে প্রকল্পটির যাচাই কমিটির একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক সমীক্ষা প্রস্তাব পুনর্গঠন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

সমীক্ষা প্রকল্পটি সম্পর্কে রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইআরপি ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য এর আগে যেসব সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার কেনা হয়েছিল, সেগুলোর ব্যবহার উপযোগিতা যাচাই করা হবে সমীক্ষা প্রকল্পটির মাধ্যমে। তবে বেশির ভাগ সরঞ্জাম দীর্ঘদিন ব্যবহার না হওয়ায় নষ্ট হয়ে গেছে। এজন্য নতুন করে বিভিন্ন সরঞ্জাম কিনতে হবে। পাশাপাশি ইআরপি ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য আধুনিক প্রযুক্তি নির্বাচন করা হবে। একইভাবে নতুন করে ইআরপি ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য একটি বাজেটও তৈরি করা হবে সমীক্ষা প্রকল্পের মাধ্যমে। সমীক্ষা প্রকল্প সম্পন্নের পর ইআরপি ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য বিনিয়োগ প্রকল্প গ্রহণ করা হবে।

বর্তমানে বাংলাদেশ রেলওয়েতে যেসব ইআরপি সরঞ্জাম অকেজো অবস্থায় রয়েছে সেগুলো কেনা হয়েছিল এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ঋণ সহায়তায় বাস্তবায়িত ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের সংস্কার’ শীর্ষক প্রকল্পের মাধ্যমে। ২০১৯ সালের জুনে প্রকল্পটি সমাপ্ত হয়েছে। প্রকল্পটি নিয়ে একটি মূল্যায়ন প্রতিবেদন তৈরি করছে পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি)।

খসড়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পের মাধ্যমে ইআরপি সফটওয়্যার ‘গো লাইভ’, ‘পোস্ট গো লাইভ অনসাইট সাপোর্ট’, বিভিন্ন মডিউলের নতুন কম্পোনেন্ট ডেভেলপ করা এবং সমগ্র ইআরপি ব্যবস্থা বাংলাদেশ রেলওয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সময়ের মধ্যে ডাটা সেন্টার, ডাটা রিকভারি সেন্টার এবং নেটওয়ার্কিং সংক্রান্ত্র যন্ত্রপাতির ওয়ারেন্টি, অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স সাপোর্ট এবং ডিসি, ডিআরএস, ইআরপি নেটওয়ার্কও হস্তান্তর করা হয়েছে। ইআরপি ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য আইটি জনবল নিয়োগের কথা থাকলেও জনবল নিয়োগ করা সম্ভব হয়নি। ফলে প্রকল্পটির অন্যতম উদ্দেশ্য ইআরপি ব্যবস্থা গড়ে তোলা অর্জিত হয়নি বলে খসড়া প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে আইএমইডি।

তবে রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম মনে করছেন, নতুন জনবল কাঠামোতে সৃষ্ট আইটি খাতে জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে প্রযুক্তিগতভাবে আরো এগিয়ে যাবে রেলওয়ে। তিনি বলেন, ‘যাত্রীসেবার মান উন্নয়নে রেলওয়েতে অবকাঠামো উন্নয়নের একাধিক প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। চলমান ও পরিকল্পনাধীন রয়েছে আরো একাধিক প্রকল্প। আমরা শুধু অবকাঠামো উন্নয়ন নয়, রেলওয়েতে উন্নত প্রযুক্তিও সংযুক্ত করতে চাই। রেলওয়ের যাবতীয় পরিচালন কার্যক্রমকে ডিজিটালাইজড করার লক্ষ্যে আমরা কার্যক্রম হাতে নিয়েছি।’

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

ভারত থেকে কেনা ইআরপি ব্যবস্থা অকেজো

প্রকাশের সময় : ০২:২১:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩

বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য ভারত থেকে ভারত থেকে কেনা ইআরপি ব্যবস্থা অকেজো হয়ে আছে। এটি কাজে লাগাতে ফের আরেকটা প্রকল্প গ্রহণ করেছে রেলওয়ে। ২০১৭ সালে প্রায় ৩৩ কোটি টাকার সফটওয়্যার ও সেগুলোর লাইসেন্স কিনেছিল বাংলাদেশ রেলওয়ে। একই সময়ে বাংলাদেশের একটি কোম্পানি থেকে আরো প্রায় ৫২ কোটি টাকার কম্পিউটারসহ বিভিন্ন আইটি সরঞ্জাম কেনে সংস্থাটি। এসব কেনা হয়েছিল রেলওয়ের এন্টারপ্রাইজ রিসোর্স প্ল্যানিং (ইআরপি) ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য।

পরিকল্পনা হয়েছিল টিকিট বিক্রি, আয়-ব্যয়, ইঞ্জিন-কোচ চলাচল, জ্বালানি ব্যবহার, কর্মীদের দৈনন্দিন কর্মঘণ্টা, ওভারটাইমের মতো বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম এই ইআরপি ব্যবস্থার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ ও পর্যবেক্ষণ করা হবে। কিন্তু তথ্য-প্রযুক্তিতে প্রয়োজনীয় জনবল না থাকায় এখন পর্যন্ত ইআরপি ব্যবস্থাটি গড়ে তুলতে পারেনি রেলওয়ে। এরই মধ্যে শেষ হয়েছে সফটওয়্যারের লাইসেন্সের মেয়াদ, নষ্ট হয়েছে কম্পিউটারসহ বিভিন্ন আইটি সরঞ্জাম। অকেজো এই ইআরপি ব্যবস্থা কাজে লাগাতে এবার নতুন একটি সমীক্ষা প্রকল্প গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছে রেলওয়েটি। রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সমীক্ষা শেষে গ্রহণ করা হবে বিনিয়োগ প্রকল্প।

‘বাংলাদেশ রেলওয়েতে ইতোপূর্বে স্থাপিত এন্টারপ্রাইজ রিসোর্স প্ল্যানিং (ইআরটি) সিস্টেম পর্যালোচনাসহ নতুন ক্লাউডভিত্তিক ইআরপি সিস্টেম স্থাপনের নিমিত্তে প্রযুক্তি নির্বাচন ও বাজেট প্রণয়ণের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা’ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে।

রেলওয়েতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বছরের ২৪ মে প্রকল্পটির যাচাই কমিটির একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক সমীক্ষা প্রস্তাব পুনর্গঠন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

সমীক্ষা প্রকল্পটি সম্পর্কে রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইআরপি ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য এর আগে যেসব সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার কেনা হয়েছিল, সেগুলোর ব্যবহার উপযোগিতা যাচাই করা হবে সমীক্ষা প্রকল্পটির মাধ্যমে। তবে বেশির ভাগ সরঞ্জাম দীর্ঘদিন ব্যবহার না হওয়ায় নষ্ট হয়ে গেছে। এজন্য নতুন করে বিভিন্ন সরঞ্জাম কিনতে হবে। পাশাপাশি ইআরপি ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য আধুনিক প্রযুক্তি নির্বাচন করা হবে। একইভাবে নতুন করে ইআরপি ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য একটি বাজেটও তৈরি করা হবে সমীক্ষা প্রকল্পের মাধ্যমে। সমীক্ষা প্রকল্প সম্পন্নের পর ইআরপি ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য বিনিয়োগ প্রকল্প গ্রহণ করা হবে।

বর্তমানে বাংলাদেশ রেলওয়েতে যেসব ইআরপি সরঞ্জাম অকেজো অবস্থায় রয়েছে সেগুলো কেনা হয়েছিল এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ঋণ সহায়তায় বাস্তবায়িত ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের সংস্কার’ শীর্ষক প্রকল্পের মাধ্যমে। ২০১৯ সালের জুনে প্রকল্পটি সমাপ্ত হয়েছে। প্রকল্পটি নিয়ে একটি মূল্যায়ন প্রতিবেদন তৈরি করছে পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি)।

খসড়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পের মাধ্যমে ইআরপি সফটওয়্যার ‘গো লাইভ’, ‘পোস্ট গো লাইভ অনসাইট সাপোর্ট’, বিভিন্ন মডিউলের নতুন কম্পোনেন্ট ডেভেলপ করা এবং সমগ্র ইআরপি ব্যবস্থা বাংলাদেশ রেলওয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সময়ের মধ্যে ডাটা সেন্টার, ডাটা রিকভারি সেন্টার এবং নেটওয়ার্কিং সংক্রান্ত্র যন্ত্রপাতির ওয়ারেন্টি, অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স সাপোর্ট এবং ডিসি, ডিআরএস, ইআরপি নেটওয়ার্কও হস্তান্তর করা হয়েছে। ইআরপি ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য আইটি জনবল নিয়োগের কথা থাকলেও জনবল নিয়োগ করা সম্ভব হয়নি। ফলে প্রকল্পটির অন্যতম উদ্দেশ্য ইআরপি ব্যবস্থা গড়ে তোলা অর্জিত হয়নি বলে খসড়া প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে আইএমইডি।

তবে রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম মনে করছেন, নতুন জনবল কাঠামোতে সৃষ্ট আইটি খাতে জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে প্রযুক্তিগতভাবে আরো এগিয়ে যাবে রেলওয়ে। তিনি বলেন, ‘যাত্রীসেবার মান উন্নয়নে রেলওয়েতে অবকাঠামো উন্নয়নের একাধিক প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। চলমান ও পরিকল্পনাধীন রয়েছে আরো একাধিক প্রকল্প। আমরা শুধু অবকাঠামো উন্নয়ন নয়, রেলওয়েতে উন্নত প্রযুক্তিও সংযুক্ত করতে চাই। রেলওয়ের যাবতীয় পরিচালন কার্যক্রমকে ডিজিটালাইজড করার লক্ষ্যে আমরা কার্যক্রম হাতে নিয়েছি।’