Dhaka বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫, ৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভারতে মন্দিরে কুয়ার ছাদ ধসে নিহত বেড়ে ৩৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

ভারতের মধ্য প্রদেশে একটি মন্দিরের ভেতর থাকা প্রাচীন কূয়ায় ধসের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৫ জনে দাঁড়িয়েছে। জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে ১৪ জনকে, নিখোঁজ রয়েছেন আরও একজন। বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) ইন্দোরের বেলেশ্বর মহাদেব ঝুলেলাল মন্দিরে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।

শুক্রবার (৩১ মার্চ) ইন্দোরের কালেক্টর ইলায়ারাজা টি দেশটির সংবাদ মাধ্যমগুলোকে জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে অভিযান শুরু হয়। ১৮ ঘণ্টা অতিবাহিত হলেও অভিযান এখনো চলছে।

তিনি আরও জানিয়েছেন, মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনায় মোট ৩৫ জন মারা গেছেন, একজন নিখোঁজ এবং ১৪ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে দুজন চিকিৎসা নিয়ে ইতোমধ্যেই বাড়ি ফিরেছেন।

বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) রামনবমী উপলক্ষে মন্দিরটিতে হাজির হয়েছিলেন বিপুল সংখ্যক পুণ্যার্থী। এসময় একটি প্রাচীন কূয়ার ছাদের ওপর একসঙ্গে অনেকে দাঁড়ানোয় ভার সইতে না পেরে হঠাৎ ভেঙে পড়ে সেটি। কূপটি অনেক পুরোনো হওয়ায় সেটির মুখ কংক্রিটের ছাউনি দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছিল। তবে অনেক লোক একসঙ্গে সেই ছাউনির ওপর উঠে পড়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

একটি বেসরকারি ট্রাস্ট পরিচালিত মন্দিরটি ইন্দোরের অন্যতম প্রাচীন আবাসিক এলাকা স্নেহনগরে অবস্থিত।

সূত্রের বরাতে এনডিটিভি জানিয়েছে, ইন্দোর মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগের ভিত্তিতে কাজ করলে এই ট্র্যাজেডি এড়ানো যেতো।

২০২২ সালের এপ্রিল মাসে বেলেশ্বর মহাদেব মন্দিরের ট্রাস্টের কাছে পৌরসভার পাঠানো একটি নোটিশের অনুলিপি হাতে পেয়েছে এনডিটিভি। এতে বলা হয়েছে, স্থানীয়দের অভিযোগ, মন্দিরটি একটি দখল করা পার্কের মধ্যে প্রাচীন কূয়ার ওপর নির্মিত।

এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পৌর কর্তৃপক্ষ কূয়ার ছাদ ভেঙে ফেলার জন্য চিহ্নিতও করেছিল। কিন্তু এ ধরনের পদক্ষেপ হিন্দুদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করবে বলে ট্রাস্ট সতর্ক করার পর পিছিয়ে যায় তারা।

প্রায় চার দশক আগে কূয়ার মুখ ঢেকে দিয়ে তার ওপর নির্মাণ করা হয়েছিল বেলেশ্বর মহাদেব মন্দির। রামনবমীতে কূয়ার ওপর নির্মিত মন্দিরের পাটাতনের ওপর পূজার আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু কংক্রিটের স্ল্যাবটি একসঙ্গে ৩০-৪০ জনের ভার বহনের মতো যথেষ্ট মজবুত ছিল না। ফলে পূর্ণার্থীরা কূয়ার ছাদ ভেঙে ৪০ ফুট গভীরে পড়ে যান।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবি ও ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশের পাশাপাশি স্থানীয় লোকজন কূয়ায় পড়ে যাওয়া পুণ্যার্থীদের উদ্ধারের চেষ্টা করছেন।

মধ্য প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান এ ঘটনায় গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে উদ্ধার অভিযান দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন। মৃতদের পরিবারগুলোকে পাঁচ লাখ রুপি করে এবং আহতদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার রুপি ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, আমরা শোকাহত পরিবারগুলোর পাশে রয়েছি। আহতদের চিকিৎসার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাদের পুরো চিকিৎসার খরচ রাজ্য সরকার বহন করবে।

এ ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। তিনি টুইটারে বলেছেন, ইন্দোরের দুর্ঘটনা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। আমি মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ চৌহানের সঙ্গে কথা বলেছি ও পরিস্থিতি সম্পর্কে জেনেছি। রাজ্য সরকার দ্রুতগতিতে উদ্ধার ও ত্রাণ কাজ চালাচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত সবাই ও তাদের পরিবারের জন্য প্রার্থনা করছি।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ভারতে মন্দিরে কুয়ার ছাদ ধসে নিহত বেড়ে ৩৫

প্রকাশের সময় : ০২:৫০:১৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ মার্চ ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

ভারতের মধ্য প্রদেশে একটি মন্দিরের ভেতর থাকা প্রাচীন কূয়ায় ধসের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৫ জনে দাঁড়িয়েছে। জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে ১৪ জনকে, নিখোঁজ রয়েছেন আরও একজন। বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) ইন্দোরের বেলেশ্বর মহাদেব ঝুলেলাল মন্দিরে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।

শুক্রবার (৩১ মার্চ) ইন্দোরের কালেক্টর ইলায়ারাজা টি দেশটির সংবাদ মাধ্যমগুলোকে জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে অভিযান শুরু হয়। ১৮ ঘণ্টা অতিবাহিত হলেও অভিযান এখনো চলছে।

তিনি আরও জানিয়েছেন, মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনায় মোট ৩৫ জন মারা গেছেন, একজন নিখোঁজ এবং ১৪ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে দুজন চিকিৎসা নিয়ে ইতোমধ্যেই বাড়ি ফিরেছেন।

বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) রামনবমী উপলক্ষে মন্দিরটিতে হাজির হয়েছিলেন বিপুল সংখ্যক পুণ্যার্থী। এসময় একটি প্রাচীন কূয়ার ছাদের ওপর একসঙ্গে অনেকে দাঁড়ানোয় ভার সইতে না পেরে হঠাৎ ভেঙে পড়ে সেটি। কূপটি অনেক পুরোনো হওয়ায় সেটির মুখ কংক্রিটের ছাউনি দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছিল। তবে অনেক লোক একসঙ্গে সেই ছাউনির ওপর উঠে পড়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

একটি বেসরকারি ট্রাস্ট পরিচালিত মন্দিরটি ইন্দোরের অন্যতম প্রাচীন আবাসিক এলাকা স্নেহনগরে অবস্থিত।

সূত্রের বরাতে এনডিটিভি জানিয়েছে, ইন্দোর মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগের ভিত্তিতে কাজ করলে এই ট্র্যাজেডি এড়ানো যেতো।

২০২২ সালের এপ্রিল মাসে বেলেশ্বর মহাদেব মন্দিরের ট্রাস্টের কাছে পৌরসভার পাঠানো একটি নোটিশের অনুলিপি হাতে পেয়েছে এনডিটিভি। এতে বলা হয়েছে, স্থানীয়দের অভিযোগ, মন্দিরটি একটি দখল করা পার্কের মধ্যে প্রাচীন কূয়ার ওপর নির্মিত।

এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পৌর কর্তৃপক্ষ কূয়ার ছাদ ভেঙে ফেলার জন্য চিহ্নিতও করেছিল। কিন্তু এ ধরনের পদক্ষেপ হিন্দুদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করবে বলে ট্রাস্ট সতর্ক করার পর পিছিয়ে যায় তারা।

প্রায় চার দশক আগে কূয়ার মুখ ঢেকে দিয়ে তার ওপর নির্মাণ করা হয়েছিল বেলেশ্বর মহাদেব মন্দির। রামনবমীতে কূয়ার ওপর নির্মিত মন্দিরের পাটাতনের ওপর পূজার আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু কংক্রিটের স্ল্যাবটি একসঙ্গে ৩০-৪০ জনের ভার বহনের মতো যথেষ্ট মজবুত ছিল না। ফলে পূর্ণার্থীরা কূয়ার ছাদ ভেঙে ৪০ ফুট গভীরে পড়ে যান।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবি ও ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশের পাশাপাশি স্থানীয় লোকজন কূয়ায় পড়ে যাওয়া পুণ্যার্থীদের উদ্ধারের চেষ্টা করছেন।

মধ্য প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান এ ঘটনায় গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে উদ্ধার অভিযান দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন। মৃতদের পরিবারগুলোকে পাঁচ লাখ রুপি করে এবং আহতদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার রুপি ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, আমরা শোকাহত পরিবারগুলোর পাশে রয়েছি। আহতদের চিকিৎসার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাদের পুরো চিকিৎসার খরচ রাজ্য সরকার বহন করবে।

এ ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। তিনি টুইটারে বলেছেন, ইন্দোরের দুর্ঘটনা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। আমি মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ চৌহানের সঙ্গে কথা বলেছি ও পরিস্থিতি সম্পর্কে জেনেছি। রাজ্য সরকার দ্রুতগতিতে উদ্ধার ও ত্রাণ কাজ চালাচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত সবাই ও তাদের পরিবারের জন্য প্রার্থনা করছি।