Dhaka সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভারতে বসে হাসিনার রাজনৈতিক কার্যক্রম, যা জানাল মোদি সরকার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

ভারতে বসে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনাকে সমর্থন করে না মোদি সরকার। এটি দুই দেশের সম্পর্কের একটি ক্ষুদ্র প্রতিবন্ধক বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি।

সম্প্রতি বাংলাদেশ সফর করে গেছেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব বিক্রম মিশ্রি। এই ইস্যুতে তিনি মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের কাছে ব্রিফিং করেছেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেস নেতা শশী থারুরও।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক কোনো একক দল বা সরকারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এক্ষেত্রে ভারত বাংলাদেশের জনগণকে গুরুত্ব দেয়।

দেশটির পররাষ্ট্র সচিব বলেন, শেখ হাসিনা নিজের যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে বক্তব্য বা বিবৃতি দিচ্ছেন। এক্ষেত্রে ভারত সরকার কোনো ধরনের সুবিধা দেয় না। কারণ তৃতীয় কোনো দেশে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ পরিহার ভারতের ঐতিহ্য।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূসের সমালোচনা করে বিভিন্ন স্থানে বিবৃতি ও ভিডিও বার্তা দিচ্ছেন শেখ হাসিনা। ফলে এমন সময় মিশ্রির এই মন্তব্যকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছে।

বিক্রম মিশ্রি কমিটিকে জানান, সোমবার ঢাকা সফরের সময় তিনি অন্তর্র্বতী সরকারকে জানিয়েছেন যে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক কোনো বিশেষ রাজনৈতিক দল বা সরকারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। ভারত বাংলাদেশের জনগণের সাথে সম্পর্ককে অগ্রাধিকার দেয় ও যে কোনো সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখবে।

তিনি বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ায় বাণিজ্য ও যোগাযোগের বৃহত্তম অংশীদার হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারত ও বাংলাদেশ রেল যোগাযোগ, বাস সংযোগ, অভ্যন্তরীণ নৌপথ নির্মাণ করেছে। তবে বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে যাত্রীবাহী রেল সেবা স্থগিত রয়েছে বলেও জানান কমিটিকে।

তিনি কমিটিকে বলেন, ভারত বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সহিংসতা নিয়ে উদ্বিগ্ন হলেও বাংলাদেশের প্রশাসন এসব সহিংসতার সাথে জড়িত অনেককে গ্রেপ্তার করেছে। তিনি জানান তার সফরের পরে দুই দেশের সম্পর্কের স্পষ্ট উন্নতি হয়েছে।

বিক্রম মিশ্রি বলেন, সফরে দুই পক্ষই তাদের উদ্বেগ প্রকাশ ও ব্যাখ্যা করেছে। ভারতের পক্ষ থেকে  বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের অনেক দোষী সাব্যস্ত “সন্ত্রাসী” যারা ভারত বিরোধী বক্তব্যে লিপ্ত রয়েছে তাদের মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্তে গভীর উদ্বেগ জানানো হয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে মিথ্যা ও ভুয়া তথ্যও প্রচার নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে।

ড. মুহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো চুক্তি পর্যালোচনার বিষয়ে প্রশ্ন তোলেনি বলে জানান ভারতীয় পররাষ্ট্রসচিব। যদিও এমন খবর গণমাধ্যমে দেয়া হয়েছিল।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আগস্টে শেখ হাসিনা পতন ও ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তার নিয়ে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে বেশ টানাপড়েন চলছে। এমন পরিস্থিতিতে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক ঠিক রাখতে চলতি সপ্তাহে ঢাকা সফর করেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব।

সফরে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার পাশাপাশি ঢাকায় পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও পররাষ্ট্রসচিব জসীম উদ্দিনের সঙ্গেও বৈঠক করেন তিনি।

ঢাকার সফর শেষে গতকাল বুধবার প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্তর্বর্তী সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে দিল্লিতে ভারতীয় সংসদ সদস্যদের (এমপি) ব্রিফ করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি। সেখানে এসব কথা বলেন তিনি।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ভারতে বসে হাসিনার রাজনৈতিক কার্যক্রম, যা জানাল মোদি সরকার

প্রকাশের সময় : ১২:৩২:১৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

ভারতে বসে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনাকে সমর্থন করে না মোদি সরকার। এটি দুই দেশের সম্পর্কের একটি ক্ষুদ্র প্রতিবন্ধক বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি।

সম্প্রতি বাংলাদেশ সফর করে গেছেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব বিক্রম মিশ্রি। এই ইস্যুতে তিনি মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের কাছে ব্রিফিং করেছেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেস নেতা শশী থারুরও।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক কোনো একক দল বা সরকারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এক্ষেত্রে ভারত বাংলাদেশের জনগণকে গুরুত্ব দেয়।

দেশটির পররাষ্ট্র সচিব বলেন, শেখ হাসিনা নিজের যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে বক্তব্য বা বিবৃতি দিচ্ছেন। এক্ষেত্রে ভারত সরকার কোনো ধরনের সুবিধা দেয় না। কারণ তৃতীয় কোনো দেশে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ পরিহার ভারতের ঐতিহ্য।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূসের সমালোচনা করে বিভিন্ন স্থানে বিবৃতি ও ভিডিও বার্তা দিচ্ছেন শেখ হাসিনা। ফলে এমন সময় মিশ্রির এই মন্তব্যকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছে।

বিক্রম মিশ্রি কমিটিকে জানান, সোমবার ঢাকা সফরের সময় তিনি অন্তর্র্বতী সরকারকে জানিয়েছেন যে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক কোনো বিশেষ রাজনৈতিক দল বা সরকারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। ভারত বাংলাদেশের জনগণের সাথে সম্পর্ককে অগ্রাধিকার দেয় ও যে কোনো সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখবে।

তিনি বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ায় বাণিজ্য ও যোগাযোগের বৃহত্তম অংশীদার হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারত ও বাংলাদেশ রেল যোগাযোগ, বাস সংযোগ, অভ্যন্তরীণ নৌপথ নির্মাণ করেছে। তবে বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে যাত্রীবাহী রেল সেবা স্থগিত রয়েছে বলেও জানান কমিটিকে।

তিনি কমিটিকে বলেন, ভারত বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সহিংসতা নিয়ে উদ্বিগ্ন হলেও বাংলাদেশের প্রশাসন এসব সহিংসতার সাথে জড়িত অনেককে গ্রেপ্তার করেছে। তিনি জানান তার সফরের পরে দুই দেশের সম্পর্কের স্পষ্ট উন্নতি হয়েছে।

বিক্রম মিশ্রি বলেন, সফরে দুই পক্ষই তাদের উদ্বেগ প্রকাশ ও ব্যাখ্যা করেছে। ভারতের পক্ষ থেকে  বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের অনেক দোষী সাব্যস্ত “সন্ত্রাসী” যারা ভারত বিরোধী বক্তব্যে লিপ্ত রয়েছে তাদের মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্তে গভীর উদ্বেগ জানানো হয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে মিথ্যা ও ভুয়া তথ্যও প্রচার নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে।

ড. মুহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো চুক্তি পর্যালোচনার বিষয়ে প্রশ্ন তোলেনি বলে জানান ভারতীয় পররাষ্ট্রসচিব। যদিও এমন খবর গণমাধ্যমে দেয়া হয়েছিল।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আগস্টে শেখ হাসিনা পতন ও ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তার নিয়ে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে বেশ টানাপড়েন চলছে। এমন পরিস্থিতিতে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক ঠিক রাখতে চলতি সপ্তাহে ঢাকা সফর করেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব।

সফরে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার পাশাপাশি ঢাকায় পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও পররাষ্ট্রসচিব জসীম উদ্দিনের সঙ্গেও বৈঠক করেন তিনি।

ঢাকার সফর শেষে গতকাল বুধবার প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্তর্বর্তী সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে দিল্লিতে ভারতীয় সংসদ সদস্যদের (এমপি) ব্রিফ করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি। সেখানে এসব কথা বলেন তিনি।