Dhaka বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভারতে ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনায় নিহত বেড়ে ২৮৮

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় উড়িষ্যায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। লাইনচ্যুত ও বিধ্বস্ত হওয়া বগির মধ্য থেকে এখনও ভেসে আসছে কান্নার আওয়াজ। এখন পর্যন্ত এই ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮৮ জনে। আহত হয়েছেন ৯ শতাধিক।

রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ সচিব প্রদীপ জেনার বরাত দিয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে এএনআইসহ বিভিন্ন ভারতীয় সংবাদমাধ্যম।

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দপ্তর ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্সের (এনডিআরএফ) ৩টি ইউনিট। ওড়িশা রাজ্য সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দপ্তর ওড়িশা ডিজাস্টার র‌্যাপিড অ্যাকশন ফোর্সের ৪টি ইউনিট, রাজ্যের ফায়ার সার্ভিস বিভগের ১৫টি উদ্ধারকারী দল, ২০০ পুলিশ সদস্য ও কর্মকর্তা, ৩০ জন ডাক্তার এবং ৬০টি অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থলে উদ্ধার তৎপরতার সঙ্গে যুক্ত আছে বলে জানিয়েছেন ওড়িশার মুখ্য সচিব।

শুক্রবার (২ জুন) রাত ৭টা ২০ মিনিটের দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে শালিমার-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেস ট্রেনের ১৫টি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে।

আনন্দবাজারের খবরে বলা হয়েছে, দুপুর ৩টা ১৫ মিনিট নাগাদ শালিমার স্টেশন থেকে ছাড়ে করমণ্ডল এক্সপ্রেস। পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুর স্টেশন ছাড়ে বিকাল সোয়া ৫টায়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ ট্রেনটি পৌঁছায় বালেশ্বরে। বাহানগা বাজারের কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ২৩ বগির ট্রেনটি।

রেলওয়ের মুখপাত্র অমিতাভ শর্মা বলেন, শুক্রবার (২ জুন) সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ শালিমার থেকে চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ১০-১২টি বগি বালেশ্বরের কাছে লাইনচ্যুত হয়ে পড়ে। দুর্ঘটনার করমণ্ডল এক্সপ্রেসের লাইনচ্যুত বগিগুলো ছিটকে পড়ে উল্টো দিকের লাইনে। কিছু ক্ষণ পর উল্টো দিকে লাইন দিয়ে আসে হাওড়াগামী যশবন্তপুর এক্সপ্রেস। সেই ট্রেনটি করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ছিটকে পড়া বগির ওপর দিয়ে চলে যায়। এতে লাইনচ্যুত যশবন্তপুর এক্সপ্রেসেরও ৩ থেকে ৪টি বগি লাইনচ্যুত হয়।

ওড়িশার মুখ্যসচিব প্রদীপ জেনা এনডিটিভিকে বলেছেন, দুর্ঘটনায় তৃতীয় আরেকটি ট্রেন জড়িত ছিল। দুটি যাত্রীবাহী ট্রেন ও একটি মালগাড়ি। প্রায় ৫০টি অ্যাম্বুলেন্স উপস্থিত হয়েছে। আহতের সংখ্যা অনেক বেশি মনে হচ্ছে। আহতদের হাসপাতালে নিতে বিপুল সংখ্যক বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

ওড়িশার দমকল বাহিনীর প্রধান সুধাংশু সরাঙ্গি উদ্ধার অভিযান তদারকি করছেন। বালেম্বরের হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজগুলোকে সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে।

জাতীয় ও স্থানীয় দুর্যোগ ত্রাণ বাহিনীর শতাধিক সদস্য আটকে পড়া যাত্রীদের উদ্ধারে কাজ করছে। তাদের কাছে পৌঁছানোর জন্য দুর্ঘটনায় পড়া বগি কাটার কাজ করছেন।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইটারে বলেছেন, ব্যক্তিগতভাবে রাজ্যের সচিব ও অপর সিনিয়র কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে পরিস্থিতি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করছেন।

ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নভীন পাটনায়েক রাজ্যের রাজস্বমন্ত্রী প্রমিলি মালিককে ঘটনাস্থলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন।

এই ট্রেন দুর্ঘটনার পর হাওড়া থেকে দক্ষিণ ভারত যাওয়ার সব ট্রেন বাতিল বলে ঘোষণা করা হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে ওড়িশাগামী ট্রেনও বাতিল। এর ফলে যাত্রী দুর্ভোগের আশঙ্কা রয়েছে।

ওড়িষার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক শনিবার ব্যাপক প্রাণঘাতী এই দুর্ঘটনার জেরে রাজ্যে একদিনের শোক ঘোষণা করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর থেকে বলা হয়েছে, শনিবার রাজ্যে কোনো ধরনের উদযাপন-অনুষ্ঠান হবে না।

আবহাওয়া

বদলির চিঠি প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলায় ৮ কর কর্মকর্তা বরখাস্ত

ভারতে ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনায় নিহত বেড়ে ২৮৮

প্রকাশের সময় : ১১:১৩:০৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ জুন ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় উড়িষ্যায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। লাইনচ্যুত ও বিধ্বস্ত হওয়া বগির মধ্য থেকে এখনও ভেসে আসছে কান্নার আওয়াজ। এখন পর্যন্ত এই ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮৮ জনে। আহত হয়েছেন ৯ শতাধিক।

রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ সচিব প্রদীপ জেনার বরাত দিয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে এএনআইসহ বিভিন্ন ভারতীয় সংবাদমাধ্যম।

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দপ্তর ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্সের (এনডিআরএফ) ৩টি ইউনিট। ওড়িশা রাজ্য সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দপ্তর ওড়িশা ডিজাস্টার র‌্যাপিড অ্যাকশন ফোর্সের ৪টি ইউনিট, রাজ্যের ফায়ার সার্ভিস বিভগের ১৫টি উদ্ধারকারী দল, ২০০ পুলিশ সদস্য ও কর্মকর্তা, ৩০ জন ডাক্তার এবং ৬০টি অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থলে উদ্ধার তৎপরতার সঙ্গে যুক্ত আছে বলে জানিয়েছেন ওড়িশার মুখ্য সচিব।

শুক্রবার (২ জুন) রাত ৭টা ২০ মিনিটের দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে শালিমার-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেস ট্রেনের ১৫টি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে।

আনন্দবাজারের খবরে বলা হয়েছে, দুপুর ৩টা ১৫ মিনিট নাগাদ শালিমার স্টেশন থেকে ছাড়ে করমণ্ডল এক্সপ্রেস। পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুর স্টেশন ছাড়ে বিকাল সোয়া ৫টায়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ ট্রেনটি পৌঁছায় বালেশ্বরে। বাহানগা বাজারের কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ২৩ বগির ট্রেনটি।

রেলওয়ের মুখপাত্র অমিতাভ শর্মা বলেন, শুক্রবার (২ জুন) সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ শালিমার থেকে চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ১০-১২টি বগি বালেশ্বরের কাছে লাইনচ্যুত হয়ে পড়ে। দুর্ঘটনার করমণ্ডল এক্সপ্রেসের লাইনচ্যুত বগিগুলো ছিটকে পড়ে উল্টো দিকের লাইনে। কিছু ক্ষণ পর উল্টো দিকে লাইন দিয়ে আসে হাওড়াগামী যশবন্তপুর এক্সপ্রেস। সেই ট্রেনটি করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ছিটকে পড়া বগির ওপর দিয়ে চলে যায়। এতে লাইনচ্যুত যশবন্তপুর এক্সপ্রেসেরও ৩ থেকে ৪টি বগি লাইনচ্যুত হয়।

ওড়িশার মুখ্যসচিব প্রদীপ জেনা এনডিটিভিকে বলেছেন, দুর্ঘটনায় তৃতীয় আরেকটি ট্রেন জড়িত ছিল। দুটি যাত্রীবাহী ট্রেন ও একটি মালগাড়ি। প্রায় ৫০টি অ্যাম্বুলেন্স উপস্থিত হয়েছে। আহতের সংখ্যা অনেক বেশি মনে হচ্ছে। আহতদের হাসপাতালে নিতে বিপুল সংখ্যক বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

ওড়িশার দমকল বাহিনীর প্রধান সুধাংশু সরাঙ্গি উদ্ধার অভিযান তদারকি করছেন। বালেম্বরের হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজগুলোকে সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে।

জাতীয় ও স্থানীয় দুর্যোগ ত্রাণ বাহিনীর শতাধিক সদস্য আটকে পড়া যাত্রীদের উদ্ধারে কাজ করছে। তাদের কাছে পৌঁছানোর জন্য দুর্ঘটনায় পড়া বগি কাটার কাজ করছেন।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইটারে বলেছেন, ব্যক্তিগতভাবে রাজ্যের সচিব ও অপর সিনিয়র কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে পরিস্থিতি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করছেন।

ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নভীন পাটনায়েক রাজ্যের রাজস্বমন্ত্রী প্রমিলি মালিককে ঘটনাস্থলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন।

এই ট্রেন দুর্ঘটনার পর হাওড়া থেকে দক্ষিণ ভারত যাওয়ার সব ট্রেন বাতিল বলে ঘোষণা করা হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে ওড়িশাগামী ট্রেনও বাতিল। এর ফলে যাত্রী দুর্ভোগের আশঙ্কা রয়েছে।

ওড়িষার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক শনিবার ব্যাপক প্রাণঘাতী এই দুর্ঘটনার জেরে রাজ্যে একদিনের শোক ঘোষণা করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর থেকে বলা হয়েছে, শনিবার রাজ্যে কোনো ধরনের উদযাপন-অনুষ্ঠান হবে না।