Dhaka বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫, ৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভারতের সঙ্গে ১০ চুক্তি ‘বাতিলের’ তথ্য সঠিক নয় : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ভারতের সঙ্গে ১০টি চুক্তি বাতিল করা হয়েছে বলে যে তালিকা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসেছে, সেটা সঠিক নয় বলে জানিয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের আমলে ভারতের সঙ্গে শুধু একটি চুক্তি বাতিল করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি এ কথা বলেন।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে জানতে চাওয়া হয়, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ফেসবুকে দাবি করেছেন, শেখ হাসিনা সরকারের আমলে ভারতের সঙ্গে করা ১০টি চুক্তি ও প্রকল্প বাতিল হয়েছে।

এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, যে তালিকাটি এসেছে, সম্ভবত একজন উপদেষ্টা তা প্রচার করেছেন। হয়তো এটা তিনি না করলেও পারতেন। তবে যে তালিকা সেখানে এসেছে, সেটি সঠিক নয়। এর অধিকাংশ চুক্তিই বাস্তবে নেই। শুধু একটি চুক্তিই বাতিল হয়েছে—সেটি হলো ভারতীয় প্রতিরক্ষা কম্পানি জিআরএসইর সঙ্গে টাগবোট সরবরাহ সংক্রান্ত চুক্তি।

তবে ভারতের সঙ্গে বিভিন্ন চুক্তি পর্যালোচনা প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলেও জানান তিনি।

তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে যেসব চুক্তি বাতিলের কথা হচ্ছে, তার অনেকগুলো বাস্তবে নেই। তিনি বলেন, যেই তালিকা একজন উপদেষ্টার ফেসবুকে প্রকাশ করেছেন, সেটা সঠিক নয়। এই তালিকার অধিকাংশ চুক্তি বাস্তবে নেই। একটি চুক্তি আছে অনেক পুরোনো। আর কয়েকটি চুক্তি আছে, যেগুলো পর্যালোচনার মধ্যে আছে , ঠিক ওই নামে নেই।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ত্রিপুরা-চট্টগ্রাম রেল সংযোগ প্রকল্প, অভয়পুর-আখাউড়া রেলপথ সম্প্রসারণ নামে কোনও প্রকল্প নেই। আশুগঞ্জ-আগরতলা করিডর নামে নেই কিছু, যে নামে আছে তা হচ্ছে— আশুগঞ্জ নদীবন্দর-সরাইল-ধরখার-আখাউড়া স্থলবন্দর মহাসড়ককে চার লেন প্রকল্প, এটার একটা প্যাকেজ বাতিল হয়েছে। ‘ফেনী নদী পানি ব্যবস্থাপনা প্রকল্প’ নামে কিছু নেই, যেটা আছে সেটা একটা সমঝোতা স্মারক, সেটা বাতিল হয়নি। কুশিয়ারা নদীর পানি বণ্টন প্রকল্প বলে কিছু নেই, যেটা আছে সেটা একটা সমঝোতা স্মারক। এটি স্থগিত হয়নি। বন্দরের ব্যবহার সংক্রান্ত সড়ক ও নৌপথ উন্নয়ন চুক্তি নামে কোনও চুক্তি নেই। যেটা আছে মোংলা বন্দর ব্যবহার করে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পণ্য পরিবহন, সেটা বাতিল হয়নি। ফারাক্কা বাঁধ সংক্রান্ত প্রকল্পে বাংলাদেশের আর্থিক সহযোগিতা প্রস্তাব– এরকম কিছু নেই। সিলেট-শিলচর সংযোগ প্রকল্প নামে কোনও প্রকল্প নেই। পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন সম্প্রসারণ চুক্তি– এরকম কোনও চুক্তি হয়নি।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা আরো বলেন, ভারতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল বাতিল হয়নি, প্রক্রিয়া চলছে। আদানি বিদ্যুৎ নিয়ে যেটা বলা হয়েছে, সেটা মোটামুটি ঠিক আছে। এটা পুনর্বিবেচনার জন্য আলোচনা চলছে। গঙ্গা পানি বণ্টন চুক্তির মেয়াদ আগামী বছর শেষ হবে। এটা নবায়নের জন্য আলোচনা হবে, যোগাযোগ চলছে। তিস্তা চুক্তি নিয়ে আমরা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছি। খুব যে অগ্রগতি তা না। ভারতীয় প্রতিরক্ষা কোম্পানি জিআরএসইর সঙ্গে টাগ বোট চুক্তি– এটা আমরা বাতিল করেছি। এটা বিবেচনা করে দেখা গেছে যে, বাংলাদেশের জন্য খুব একটা লাভজনক না।

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার ভারতের সঙ্গে একটা চুক্তিই বাতিল করেছে। যখন কোনও চুক্তি সই হবে বা বাতিল হবে, তখন আমরা আপনাদেরকে জানাবো।

কুশিয়ারা নদীর পানিবণ্টন প্রকল্প বলে কিছু নেই উল্লেখ করে তৌহিদ হোসেন বলেন, যেটা আছে সেটা একটা সমঝোতা স্মারক। এটি স্থগিত হয়নি। বন্দরের ব্যবহার সংক্রান্ত সড়ক ও নৌপথ উন্নয়ন চুক্তি নামেও কোনো চুক্তি নেই। যেটা আছে মোংলা বন্দর ব্যবহার করে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পণ্য পরিবহণ, সেটা বাতিল হয়নি। ফারাক্কা বাঁধ সংক্রান্ত প্রকল্পে বাংলাদেশের আর্থিক সহযোগিতা প্রস্তাব, এরকম কিছু নেই। সিলেট-শিলচর সংযোগ প্রকল্প নামে কোনো প্রকল্প নেই। পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন সম্প্রসারণ চুক্তি, এরকম কোনো চুক্তি হয়নি।

উপদেষ্টা বলেন, ভারতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল বাতিল হয়নি, প্রক্রিয়া চলছে। আদানি বিদ্যুৎ নিয়ে যেটা বলা হয়েছে সেটা মোটামুটি ঠিক আছে। এটা পুনর্বিবেচনার জন্য আলোচনা চলছে। গঙ্গা পানিবণ্টন চুক্তির মেয়াদ আগামী বছর শেষ হবে। এটা নবায়নের জন্য আলোচনা হবে, যোগাযোগ চলছে। তিস্তা চুক্তি নিয়ে আমরা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছি। খুব যে অগ্রগতি তা না।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ভারতের সঙ্গে ১০ চুক্তি ‘বাতিলের’ তথ্য সঠিক নয় : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

প্রকাশের সময় : ০৯:২৭:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ভারতের সঙ্গে ১০টি চুক্তি বাতিল করা হয়েছে বলে যে তালিকা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসেছে, সেটা সঠিক নয় বলে জানিয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের আমলে ভারতের সঙ্গে শুধু একটি চুক্তি বাতিল করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি এ কথা বলেন।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে জানতে চাওয়া হয়, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ফেসবুকে দাবি করেছেন, শেখ হাসিনা সরকারের আমলে ভারতের সঙ্গে করা ১০টি চুক্তি ও প্রকল্প বাতিল হয়েছে।

এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, যে তালিকাটি এসেছে, সম্ভবত একজন উপদেষ্টা তা প্রচার করেছেন। হয়তো এটা তিনি না করলেও পারতেন। তবে যে তালিকা সেখানে এসেছে, সেটি সঠিক নয়। এর অধিকাংশ চুক্তিই বাস্তবে নেই। শুধু একটি চুক্তিই বাতিল হয়েছে—সেটি হলো ভারতীয় প্রতিরক্ষা কম্পানি জিআরএসইর সঙ্গে টাগবোট সরবরাহ সংক্রান্ত চুক্তি।

তবে ভারতের সঙ্গে বিভিন্ন চুক্তি পর্যালোচনা প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলেও জানান তিনি।

তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে যেসব চুক্তি বাতিলের কথা হচ্ছে, তার অনেকগুলো বাস্তবে নেই। তিনি বলেন, যেই তালিকা একজন উপদেষ্টার ফেসবুকে প্রকাশ করেছেন, সেটা সঠিক নয়। এই তালিকার অধিকাংশ চুক্তি বাস্তবে নেই। একটি চুক্তি আছে অনেক পুরোনো। আর কয়েকটি চুক্তি আছে, যেগুলো পর্যালোচনার মধ্যে আছে , ঠিক ওই নামে নেই।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ত্রিপুরা-চট্টগ্রাম রেল সংযোগ প্রকল্প, অভয়পুর-আখাউড়া রেলপথ সম্প্রসারণ নামে কোনও প্রকল্প নেই। আশুগঞ্জ-আগরতলা করিডর নামে নেই কিছু, যে নামে আছে তা হচ্ছে— আশুগঞ্জ নদীবন্দর-সরাইল-ধরখার-আখাউড়া স্থলবন্দর মহাসড়ককে চার লেন প্রকল্প, এটার একটা প্যাকেজ বাতিল হয়েছে। ‘ফেনী নদী পানি ব্যবস্থাপনা প্রকল্প’ নামে কিছু নেই, যেটা আছে সেটা একটা সমঝোতা স্মারক, সেটা বাতিল হয়নি। কুশিয়ারা নদীর পানি বণ্টন প্রকল্প বলে কিছু নেই, যেটা আছে সেটা একটা সমঝোতা স্মারক। এটি স্থগিত হয়নি। বন্দরের ব্যবহার সংক্রান্ত সড়ক ও নৌপথ উন্নয়ন চুক্তি নামে কোনও চুক্তি নেই। যেটা আছে মোংলা বন্দর ব্যবহার করে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পণ্য পরিবহন, সেটা বাতিল হয়নি। ফারাক্কা বাঁধ সংক্রান্ত প্রকল্পে বাংলাদেশের আর্থিক সহযোগিতা প্রস্তাব– এরকম কিছু নেই। সিলেট-শিলচর সংযোগ প্রকল্প নামে কোনও প্রকল্প নেই। পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন সম্প্রসারণ চুক্তি– এরকম কোনও চুক্তি হয়নি।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা আরো বলেন, ভারতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল বাতিল হয়নি, প্রক্রিয়া চলছে। আদানি বিদ্যুৎ নিয়ে যেটা বলা হয়েছে, সেটা মোটামুটি ঠিক আছে। এটা পুনর্বিবেচনার জন্য আলোচনা চলছে। গঙ্গা পানি বণ্টন চুক্তির মেয়াদ আগামী বছর শেষ হবে। এটা নবায়নের জন্য আলোচনা হবে, যোগাযোগ চলছে। তিস্তা চুক্তি নিয়ে আমরা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছি। খুব যে অগ্রগতি তা না। ভারতীয় প্রতিরক্ষা কোম্পানি জিআরএসইর সঙ্গে টাগ বোট চুক্তি– এটা আমরা বাতিল করেছি। এটা বিবেচনা করে দেখা গেছে যে, বাংলাদেশের জন্য খুব একটা লাভজনক না।

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার ভারতের সঙ্গে একটা চুক্তিই বাতিল করেছে। যখন কোনও চুক্তি সই হবে বা বাতিল হবে, তখন আমরা আপনাদেরকে জানাবো।

কুশিয়ারা নদীর পানিবণ্টন প্রকল্প বলে কিছু নেই উল্লেখ করে তৌহিদ হোসেন বলেন, যেটা আছে সেটা একটা সমঝোতা স্মারক। এটি স্থগিত হয়নি। বন্দরের ব্যবহার সংক্রান্ত সড়ক ও নৌপথ উন্নয়ন চুক্তি নামেও কোনো চুক্তি নেই। যেটা আছে মোংলা বন্দর ব্যবহার করে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পণ্য পরিবহণ, সেটা বাতিল হয়নি। ফারাক্কা বাঁধ সংক্রান্ত প্রকল্পে বাংলাদেশের আর্থিক সহযোগিতা প্রস্তাব, এরকম কিছু নেই। সিলেট-শিলচর সংযোগ প্রকল্প নামে কোনো প্রকল্প নেই। পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন সম্প্রসারণ চুক্তি, এরকম কোনো চুক্তি হয়নি।

উপদেষ্টা বলেন, ভারতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল বাতিল হয়নি, প্রক্রিয়া চলছে। আদানি বিদ্যুৎ নিয়ে যেটা বলা হয়েছে সেটা মোটামুটি ঠিক আছে। এটা পুনর্বিবেচনার জন্য আলোচনা চলছে। গঙ্গা পানিবণ্টন চুক্তির মেয়াদ আগামী বছর শেষ হবে। এটা নবায়নের জন্য আলোচনা হবে, যোগাযোগ চলছে। তিস্তা চুক্তি নিয়ে আমরা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছি। খুব যে অগ্রগতি তা না।