নিজস্ব প্রতিবেদক :
পাশের দেশ ভারতের চেয়ে আমাদের দেশের গণমাধ্যম অনেক স্বাধীনভাবে কাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
সোমবার (১০ এপ্রিল) দুপুরে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মন্ত্রী এই মন্তব্য করেন ।
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের তুলনা করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ভারতে তথ্য অধিদফতরকে ফ্যাক্টচেকের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। কোন সংবাদটি সঠিক, কোনটি সঠিক না, সেটি তারা পরীক্ষা করবে। এ ধরনের সংবাদ যদি কেউ পোস্ট করে, তাহলে সেই দায়দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট সংবাদমাধ্যমকে নিতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে যখন বলা হবে, এই সংবাদটি সঠিক না, সেটি তাদের নিজ দায়িত্বে সরিয়ে নিতে হবে। সরিয়ে না নিলে সেই ক্ষেত্রে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশে এমন কোনো ব্যবস্থা আমরা নিইনি। তার মানেটা এই যে, আমাদের দেশের গণমাধ্যম পার্শ্ববর্তী ভারতের সঙ্গে অনেকে বেশি স্বাধীনভাবে কাজ করে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে রিপোর্ট প্রকাশ করার কারণে বিবিসির কার্যালয়ে কয়েক দিন ধরে তল্লাশি করা হয়েছে ট্যাক্স অফিসের মাধ্যমে। আমাদের দেশে কোনো পত্রিকা অফিসে তো ট্যাক্স অফিস যায়নি।
তিনি বলেন, আমরা চাই সিটি করপোরেশন নির্বাচনসহ সব নির্বাচনে বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করুক। তবে যেকোনো রাজনৈতিক দল সিদ্ধান্ত নিতে পারে, সেটি তাদের নিজস্ব ব্যাপার, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কি না। কিন্তু বিএনপির মধ্যে নির্বাচন নিয়ে সব সময় দোদুল্যমানতা থাকে। তারা কোনো কোনো সিটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে, আবার কোনো কোনোটাতে করেনি। এই দোদুল্যমানতাই বিএনপির জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিএনপি সিটি নির্বাচনে আন্দোলনের অংশ হিসেবেও অংশগ্রহণ করতে পারতো। পারলে তাদের জন্য সেটি ভালো হতো এবং তারা তাদের জনপ্রিয়তা যাচাই করতে পারতো। নির্বাচন কেমন হচ্ছে সেটিও তারা পরখ করতে পারতো। যদি তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সেটি তাদের জন্য মঙ্গলজনক, গণতন্ত্রের জন্য মঙ্গলজনক।
মন্ত্রী বলেন, কুমিল্লা সিটিতে একটি প্রতিদ্বন্দ্বীতামূলক নির্বাচন হয়েছে। এই সিটি নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে সেটি নির্বাচন কমিশন নিশ্চিত করেছে। সরকার সব সময় নির্বাচন কমিশনকে ফেসিলেটেড করেছে। সুতরাং এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করাই বিএনপির জন্য ভালো। নির্বাচন থেকে পালিয়ে বেড়ানো বিএনপির জন্য শুভ হয়নি। বিএনপির নির্বাচন বিমুখতা গণতন্ত্র বিমুখতার শামিল।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রতি রমজানেই আমাদের কিছু অসাধু ব্যবসায়ী দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে দেয়। এবারও সেই তৎপরতা ছিল। কিন্তু সরকারের নানামুখী তৎপরতার কারণে কোনও কোনও পণ্যের দাম কমেছে। মুরগিতে যেমন দাম অনেক বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল, সেটি কমেছে। এতে প্রমাণিত হয়— যদি আমরা ভোক্তা অধিকারকে আরও শক্তিশালী করতে পারি, তাদের কার্যক্রম আরও সম্প্রসারণ করতে পারি, তাহলে পণ্যের দাম যখন-তখন অহেতুক বাড়ার কোনও সুযোগ নেই। শুধু ভোক্তা অধিকারই না, এফবিসিসিআইও সোচ্চার হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, ইউরোপের বিভিন্ন জায়গায় পণ্যের সংকট আছে। কোনও কোনও বিপণী বিতানে এক লিটারের বেশি ভোজ্যতেল কিনতে দেওয়া হয়নি। ছয়টি কিংবা ১২টির বেশি ডিম কিনতে দেওয়া হয়নি। যে কারণে দেখা গেছে, কেনার জন্য একই পরিবারের পাঁচ জন মার্কেটে গেছেন। সেখানে পণ্যের সংকট আছে, যেটি আমাদের দেশে নেই। অসাধু ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করে যদি পত্রপত্রিকায় রিপোর্ট হয়, তাহলে সেটি সরকারের জন্য সহায়ক হবে।