Dhaka বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ৩০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাবাকে হত্যার দায়ে ছেলের যাবজ্জীবন

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি : 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে বাবাকে হত্যার দায়ে জসিম মিয়া (৪৩) নামে এক ব্যক্তির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।

বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতের জেলা ও দায়রা জজ মো. শহিদুল ইসলাম এই দণ্ডাদেশ দেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ১৪ আগস্ট দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরের জিনোদপুর ইউনিয়নের কাঁঠালিয়া গ্রামে পাট কাটা নিয়ে লিল মিয়ার (৭৫) সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয় ছেলে জসিম উদ্দিনের। এরই একপর্যায়ে ঘর থেকে কাঠের ছিয়া (স্থানীয় ভাষায় ছাহাইট) দিয়ে বাবা লিল মিয়ার মাথায় উপর্যুপরি আঘাত করেন জসিম উদ্দিন। এতে রক্তাক্ত হয়ে বৃদ্ধ লিল মিয়া মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী মমতাজ বেগম বাদী হয়ে নবীনগর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করলে জসিম উদ্দিনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই মামলায় তদন্তে পুলিশ জসিম উদ্দিনকে দায়ী করে ২০২৪ সালের ৩০ এপ্রিল আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। পরবর্তীতে একই বছরের ২৭ আগস্ট একমাত্র আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ বিচারার্থে আমলে নেওয়া হয় এবং ২০২৪ সালের ৭ অক্টোবর বিগত আসামি জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ৩০২/৩২৩ ধারায় চার্জ গঠন করে।

সাক্ষ্য প্রমাণ ও যুক্তিতর্ক শেষে বুধবার আদালত জসিমকে পিতা হত্যার দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন।

রায় ঘোষণার পর আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. নাজমুল হক রিটন জানান, তার আসামি (মো. জসিম উদ্দিন) মানসিক রোগী ছিলেন। বাদী এবং সাক্ষী সবাই আসামির আপনজন হওয়ায় অন্য কোনও সাক্ষী ছিল না। এর মধ্য দিয়ে আসামি ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। নিম্ন আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে তিনি উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।

অপরদিকে, আসামির উপস্থিতিতে রায় ঘোষণার পর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফখর উদ্দিন আহম্মদ খান জানান, আসামি মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন না। তার বাবাকে সুস্থ মস্তিষ্কে, ঠান্ডা মাথায় হত্যা করা হয়েছে। সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে মামলাটি পর্যালোচনা করে আদালত আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেছেন। এই রায়ের মধ্য দিয়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাবাকে হত্যার দায়ে ছেলের যাবজ্জীবন

প্রকাশের সময় : ০৪:১৭:৪৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি : 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে বাবাকে হত্যার দায়ে জসিম মিয়া (৪৩) নামে এক ব্যক্তির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।

বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতের জেলা ও দায়রা জজ মো. শহিদুল ইসলাম এই দণ্ডাদেশ দেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ১৪ আগস্ট দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরের জিনোদপুর ইউনিয়নের কাঁঠালিয়া গ্রামে পাট কাটা নিয়ে লিল মিয়ার (৭৫) সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয় ছেলে জসিম উদ্দিনের। এরই একপর্যায়ে ঘর থেকে কাঠের ছিয়া (স্থানীয় ভাষায় ছাহাইট) দিয়ে বাবা লিল মিয়ার মাথায় উপর্যুপরি আঘাত করেন জসিম উদ্দিন। এতে রক্তাক্ত হয়ে বৃদ্ধ লিল মিয়া মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী মমতাজ বেগম বাদী হয়ে নবীনগর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করলে জসিম উদ্দিনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই মামলায় তদন্তে পুলিশ জসিম উদ্দিনকে দায়ী করে ২০২৪ সালের ৩০ এপ্রিল আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। পরবর্তীতে একই বছরের ২৭ আগস্ট একমাত্র আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ বিচারার্থে আমলে নেওয়া হয় এবং ২০২৪ সালের ৭ অক্টোবর বিগত আসামি জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ৩০২/৩২৩ ধারায় চার্জ গঠন করে।

সাক্ষ্য প্রমাণ ও যুক্তিতর্ক শেষে বুধবার আদালত জসিমকে পিতা হত্যার দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন।

রায় ঘোষণার পর আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. নাজমুল হক রিটন জানান, তার আসামি (মো. জসিম উদ্দিন) মানসিক রোগী ছিলেন। বাদী এবং সাক্ষী সবাই আসামির আপনজন হওয়ায় অন্য কোনও সাক্ষী ছিল না। এর মধ্য দিয়ে আসামি ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। নিম্ন আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে তিনি উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।

অপরদিকে, আসামির উপস্থিতিতে রায় ঘোষণার পর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফখর উদ্দিন আহম্মদ খান জানান, আসামি মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন না। তার বাবাকে সুস্থ মস্তিষ্কে, ঠান্ডা মাথায় হত্যা করা হয়েছে। সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে মামলাটি পর্যালোচনা করে আদালত আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেছেন। এই রায়ের মধ্য দিয়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।