Dhaka সোমবার, ০৪ অগাস্ট ২০২৫, ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে ইউপি চেয়ারম্যানসহ আটক ৩৮

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি : 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আধিপত্য বিস্তার ও বিভিন্ন বিষয়ে বিরোধের জের ধরে ইউপি চেয়ারম্যান ও জেলা পরিষদের সদস্যের অনুসারীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছেন। এ সময় ২০টি বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে এক রাউন্ড টিয়ারশেল ও ৩৭ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় পুলিশ বর্তমান চেয়ারম্যান, সাবেক চেয়ারম্যানসহ ৩৮ জনকে আটক করেছে। আহতরা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল ও স্থানীয় বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা নেয়।

সোমবার (১৩ নভেম্বর) সকালে সদর উপজেলার নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের কালিসীমা গ্রামের পশ্চিমপাড়ায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্র ও পুলিশ জানায়, নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ আলমের অনুসারীদের সাথে একই ইউনিয়নের বাসিন্দা ও জেলা পরিষদের সদস্য বাবুল মিয়ার অনুসারীদের এলাকায় আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আলমের গ্রুপে রয়েছেন ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. হোসেন ও ইউপি সদস্য আরজু মিয়ার অনুসারীরা। অপরদিকে জেলা পরিষদের সদস্য বাবুল মিয়ার গ্রুপে রয়েছেন ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল কাইয়ূমের অনুসারীরা।

জানা গেছে, গত কয়েক দিন আগে চেয়ারম্যান শাহ আলম গ্রুপের বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল হক শওকতের ছেলে মিল্লাতকে মারধর করে বাবুল মিয়ার অনুসারীরা। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসার চেষ্টা করা হয়। গত রোববার রাতে পুনরায় বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল হক শওকত এবং তার ছেলে মিল্লাতকে আবারো মারধোর করে বাবুলের অনুসারীরা।

এই ঘটনায় গ্রামে উত্তেজনা বিরাজ করলে বিষয়টি মীমাংসার জন্য সোমবার সকালে উভয়পক্ষকে সদর থানায় ডাকা হয়। এরমধ্যেই বেলা সাড়ে ১১টার সময় দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে উভয়পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। দফায় দফায় সংঘর্ষ চলাকালে দাঙ্গাবাজরা ব্যাপক ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ও উভয়পক্ষের ২০টি বাড়ি ভাঙচুর করে। সংঘর্ষ চলাকালে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়।

আহতদের মধ্যে ফিরোজ মিয়া (৫০), বিল্লাল মিয়া (৩৫), সাকিব মিয়া (২৫), হানিফ মিয়া (৩৫) ও বাবু মিয়া মিয়া (২২) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। বাকিরা গ্রেফতারের ভয়ে শহরের বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি ও চিকিৎসা নেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাঠিপেটা, এক রাউন্ড টিয়ারশেল এবং ৩৭ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

গ্রেফতাররা হলেন নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহ আলম, একই ইউনিয়ন পরিষদের ৮নং ওয়ার্ড সদস্য আরজু মিয়া, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ুম, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেন, মনির হোসেন (৪০), মজিবুর রহমান (৫২), বেদন মিয়া (৪১), মো. কামাল খা মেম্বার (৩৮), সফিকুল ইসলাম (৬০), হোসেন মিয়া (৪৫), নুরুল ইসলাম (৬৭), ইব্রাহীম মিয়া (৪০) বাদল মিয়া (৫১), মহিউদ্দিন মিয়া (৫১), বাছির মিয়া (৫০), মনিরুল ইসলাম (৪৬), তাজু মিয়া (৬০), কুদ্দুছ মেম্বার (৫৮), ইদন মিয়া (৫০), সিরাজ মিয়া (৬৫), হায়ের আলী (৬০), মো. শামীম (৩৮), আম্বিয়া খাতুন (৩৫), আসমা (৩২), ববি বেগম (৩৪), শিক্ষা বেগম (১৯), লাভলী বেগম (৩০), রেখা আক্তার (৩০), রীমা বেগম (২৫), পারুল বেগম (৪৫), পারভীন বেগম (৩৫), নাদিয়া আক্তার (২৮), সাফিয়া খাতুন (৭০), নাহিয়া ইসলাম অন্তু (১৯), সেলিনা বেগম (৬৩), রেবেদা সুলতানা (৪৩), রিমা বেগম (২৫) এবং আজিম মুনসুর (১৯)।

এ ব্যাপারে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসাইন বলেন, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আলমের অনুসারীদের সাথে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বাবুল মিয়ার অনুসারীদের সংঘর্ষ হয়। আমরা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান, সাবেক দুইজন চেয়ারম্যান, বর্তমান একজন ইউপি সদস্য, সাবেক ইউপি সদস্যসহ ৩৮ জনকে আটক করেছি। এর মধ্যে ২৩ জন পুরুষ ও ১৫ জন মহিলা রয়েছে। সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রনে আনতে এক রাউন্ড টিয়ারশেল এবং ৩৭ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রাতেই আটককৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

আবহাওয়া

সারাদেশের সব পোশাক কারখানা ৫ আগস্ট বন্ধ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে ইউপি চেয়ারম্যানসহ আটক ৩৮

প্রকাশের সময় : ০২:৫২:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৩

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি : 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আধিপত্য বিস্তার ও বিভিন্ন বিষয়ে বিরোধের জের ধরে ইউপি চেয়ারম্যান ও জেলা পরিষদের সদস্যের অনুসারীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছেন। এ সময় ২০টি বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে এক রাউন্ড টিয়ারশেল ও ৩৭ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় পুলিশ বর্তমান চেয়ারম্যান, সাবেক চেয়ারম্যানসহ ৩৮ জনকে আটক করেছে। আহতরা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল ও স্থানীয় বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা নেয়।

সোমবার (১৩ নভেম্বর) সকালে সদর উপজেলার নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের কালিসীমা গ্রামের পশ্চিমপাড়ায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্র ও পুলিশ জানায়, নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ আলমের অনুসারীদের সাথে একই ইউনিয়নের বাসিন্দা ও জেলা পরিষদের সদস্য বাবুল মিয়ার অনুসারীদের এলাকায় আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আলমের গ্রুপে রয়েছেন ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. হোসেন ও ইউপি সদস্য আরজু মিয়ার অনুসারীরা। অপরদিকে জেলা পরিষদের সদস্য বাবুল মিয়ার গ্রুপে রয়েছেন ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল কাইয়ূমের অনুসারীরা।

জানা গেছে, গত কয়েক দিন আগে চেয়ারম্যান শাহ আলম গ্রুপের বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল হক শওকতের ছেলে মিল্লাতকে মারধর করে বাবুল মিয়ার অনুসারীরা। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসার চেষ্টা করা হয়। গত রোববার রাতে পুনরায় বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল হক শওকত এবং তার ছেলে মিল্লাতকে আবারো মারধোর করে বাবুলের অনুসারীরা।

এই ঘটনায় গ্রামে উত্তেজনা বিরাজ করলে বিষয়টি মীমাংসার জন্য সোমবার সকালে উভয়পক্ষকে সদর থানায় ডাকা হয়। এরমধ্যেই বেলা সাড়ে ১১টার সময় দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে উভয়পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। দফায় দফায় সংঘর্ষ চলাকালে দাঙ্গাবাজরা ব্যাপক ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ও উভয়পক্ষের ২০টি বাড়ি ভাঙচুর করে। সংঘর্ষ চলাকালে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়।

আহতদের মধ্যে ফিরোজ মিয়া (৫০), বিল্লাল মিয়া (৩৫), সাকিব মিয়া (২৫), হানিফ মিয়া (৩৫) ও বাবু মিয়া মিয়া (২২) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। বাকিরা গ্রেফতারের ভয়ে শহরের বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি ও চিকিৎসা নেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাঠিপেটা, এক রাউন্ড টিয়ারশেল এবং ৩৭ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

গ্রেফতাররা হলেন নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহ আলম, একই ইউনিয়ন পরিষদের ৮নং ওয়ার্ড সদস্য আরজু মিয়া, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ুম, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেন, মনির হোসেন (৪০), মজিবুর রহমান (৫২), বেদন মিয়া (৪১), মো. কামাল খা মেম্বার (৩৮), সফিকুল ইসলাম (৬০), হোসেন মিয়া (৪৫), নুরুল ইসলাম (৬৭), ইব্রাহীম মিয়া (৪০) বাদল মিয়া (৫১), মহিউদ্দিন মিয়া (৫১), বাছির মিয়া (৫০), মনিরুল ইসলাম (৪৬), তাজু মিয়া (৬০), কুদ্দুছ মেম্বার (৫৮), ইদন মিয়া (৫০), সিরাজ মিয়া (৬৫), হায়ের আলী (৬০), মো. শামীম (৩৮), আম্বিয়া খাতুন (৩৫), আসমা (৩২), ববি বেগম (৩৪), শিক্ষা বেগম (১৯), লাভলী বেগম (৩০), রেখা আক্তার (৩০), রীমা বেগম (২৫), পারুল বেগম (৪৫), পারভীন বেগম (৩৫), নাদিয়া আক্তার (২৮), সাফিয়া খাতুন (৭০), নাহিয়া ইসলাম অন্তু (১৯), সেলিনা বেগম (৬৩), রেবেদা সুলতানা (৪৩), রিমা বেগম (২৫) এবং আজিম মুনসুর (১৯)।

এ ব্যাপারে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসাইন বলেন, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আলমের অনুসারীদের সাথে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বাবুল মিয়ার অনুসারীদের সংঘর্ষ হয়। আমরা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান, সাবেক দুইজন চেয়ারম্যান, বর্তমান একজন ইউপি সদস্য, সাবেক ইউপি সদস্যসহ ৩৮ জনকে আটক করেছি। এর মধ্যে ২৩ জন পুরুষ ও ১৫ জন মহিলা রয়েছে। সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রনে আনতে এক রাউন্ড টিয়ারশেল এবং ৩৭ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রাতেই আটককৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।