Dhaka সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বেগম জিয়া-ড. ইউনূসরা নন, আজিজ-বেনজীররা সম্মানিত : রিজভী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আওয়ামী লীগের কাছে বেগম জিয়া-ড. ইউনূসরা নন, আজিজ-বেনজীররা সম্মানিত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

বৃহস্পতিবার (৬ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) জিয়াউর রহমানের ৪৩তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী তাঁতী দল আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের কাছে বেগম জিয়া-ড. ইউনূসরা নন, আজিজ-বেনজীররা সম্মানিত। কারণ, এদের দিয়েই শেখ হাসিনা ভোটারবিহীন নির্বাচন করিয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধা কোটার নামে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের লোকেরা সরকারি চাকরি পাবে। মেধাবীরা আর চাকরি পাবে না।

রিজভী বলেন, যে বেনজীরের নামে এত ঘটনা তিনি বিদেশে চলে গেলেন। আর পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন বিদেশ যাওয়ার ব্যাপারে তার কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। বাবা-মা সন্তানকে লালন পালন করে ছোট থেকে বড় করে ঠিক তেমনিভাবে সরকার বেনজীরকে লালনপালন করে বড় করেছে।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, সারা বাংলা দেশে মানুষের জমি-বাড়িঘর আত্মসাৎ করা বেনজীর ঢাকা শহরে ফ্ল্যাটের পরে ফ্ল্যাট, স্ত্রী-মেয়ের নামে ফ্ল্যাট কিনেছে। কারণ এদেরকে দিয়েই শেখ হাসিনা ভোটারবিহীন নির্বাচন করেছে, রাতের অন্ধকারে নির্বাচন করেছে, সমস্ত অপকর্ম করিয়েছে।

রিজভী বলেন, বেনজীরদের দিয়ে সরকার বিএনপির অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী, শ্রমিক থেকে শুরু করে পেশাজীবী কতজনকে যে অপহরণ করেছে, বিচারবহির্ভূত হত্যা করিয়েছে, তার হিসাব নেই। আজিজ এবং বেনজীরের খবর পড়ে মানুষ বিস্মিত। আমরা তো মাত্র অল্প জানি, ভেতরে যে আরও কত কী আছে?

গুণী মানুষরা এখন কারাগারের লোহার খাঁচায় মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ড.ইউনুস বলছেন আমি আধা ঘণ্টার মতো লোহার খাঁচায় ছিলাম। আর দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যক্তি বছরের পর বছর লোহার খাঁচার মধ্যে আবদ্ধ। আজকে ইউনুসরা সম্মানিত নন, এখন সম্মানিত কে? বেনজীর-আজিজ সম্মানিত। কী ব্যাকগ্রাউন্ড এগুলো বলার মতো নয়।

রিজভী বলেন, মানুষের শেষ আশ্রয় বিচার বিভাগের যে স্বাধীনতা, এখন সেটি নেই। বরং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা তারা নিজেরাই সরকারের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। সেটি না হলে যশোরের নোয়াপাড়ার আফরোজা বেগমকে পুলিশ ধরে নিয়ে ফ্যানের সঙ্গে টানিয়ে টর্চার করে মেরে ফেলল, সে নাকি মাদকের ব্যবসা করে, ইয়াবা পেয়েছে। তাকে টর্চার করে মেরে ফেলা হলো, এটার কারণ হচ্ছে দেশে আইনের শাসন নেই। বিচার বিভাগের কাছে মানুষের আশ্রয় নেই।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করলে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতারা প্রমশন পায়।

রিজভী বলেন, নানা অপপ্রচার চালিয়েও জনগণের কাছ থেকে জিয়ার নাম মুছতে পারেনি ক্ষমতাসীনরা। তারা হুমকি-ধমকি দিয়ে আদালতকে ব্যবহার করে ইতিহাসকে কবজা করার চেষ্টা করে।

বিচারক কি আইনের শাসন মানেন, নাকি শেখ হাসিনার নির্দেশনা মানেন প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ছাত্রলীগ-আওয়ামী লীগের লোকদের ডেকে এনে বিচারক বানানো হয়। নিম্ন আদালত হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করে বিএনপির নেতাকর্মীদের কারাগারে পাঠান। বিচার বিভাগের কাছে মানুষের শেষ আশ্রয় পাওয়ার সম্ভাবনা নেই।

রিজভী বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান জনগণের প্রতি যে স্থায়ী ছাপ রেখে গেছেন এটি শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নেতারা হাজার রকম চেষ্টা করেও মুছে ফেলতে পারেনি। তিনি যা অর্জন করেছেন তা আওয়ামী লীগ নেতাদের নেই। ওদের নেই বলেই, ওরা অপপ্রচার করে।

স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান- এ তথ্য জানিয়ে রিজভী বলেন, একথা তো আওয়ামী লীগের অনেক মন্ত্রী-নেতা স্বীকার করেছেন। এটাকে অস্বীকার করবে কি করে? জোর করে ওরা এটাকে মিথ্যা বানানোর চেষ্টা করে। ধমকি দিয়ে হুমকি দিয়ে আদালতকে কব্জায় নিয়ে এরা ইতিহাস বিকৃত করে। এভাবে করলে কি আসল ইতিহাস ভুলিয়ে দেয়া যাবে? কখনো যাবে না, যায়নি, এটা কখনো ভবিষ্যতে সম্ভব হবে না।

সংগঠনের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব মুজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন- বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু প্রমুখ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

আড়াই বছরেও শেষ হয়নি সেতু নির্মাণ কাজ, দুর্ভোগে এলাকাবাসী

বেগম জিয়া-ড. ইউনূসরা নন, আজিজ-বেনজীররা সম্মানিত : রিজভী

প্রকাশের সময় : ০৩:২০:৫২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ জুন ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আওয়ামী লীগের কাছে বেগম জিয়া-ড. ইউনূসরা নন, আজিজ-বেনজীররা সম্মানিত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

বৃহস্পতিবার (৬ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) জিয়াউর রহমানের ৪৩তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী তাঁতী দল আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের কাছে বেগম জিয়া-ড. ইউনূসরা নন, আজিজ-বেনজীররা সম্মানিত। কারণ, এদের দিয়েই শেখ হাসিনা ভোটারবিহীন নির্বাচন করিয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধা কোটার নামে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের লোকেরা সরকারি চাকরি পাবে। মেধাবীরা আর চাকরি পাবে না।

রিজভী বলেন, যে বেনজীরের নামে এত ঘটনা তিনি বিদেশে চলে গেলেন। আর পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন বিদেশ যাওয়ার ব্যাপারে তার কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। বাবা-মা সন্তানকে লালন পালন করে ছোট থেকে বড় করে ঠিক তেমনিভাবে সরকার বেনজীরকে লালনপালন করে বড় করেছে।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, সারা বাংলা দেশে মানুষের জমি-বাড়িঘর আত্মসাৎ করা বেনজীর ঢাকা শহরে ফ্ল্যাটের পরে ফ্ল্যাট, স্ত্রী-মেয়ের নামে ফ্ল্যাট কিনেছে। কারণ এদেরকে দিয়েই শেখ হাসিনা ভোটারবিহীন নির্বাচন করেছে, রাতের অন্ধকারে নির্বাচন করেছে, সমস্ত অপকর্ম করিয়েছে।

রিজভী বলেন, বেনজীরদের দিয়ে সরকার বিএনপির অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী, শ্রমিক থেকে শুরু করে পেশাজীবী কতজনকে যে অপহরণ করেছে, বিচারবহির্ভূত হত্যা করিয়েছে, তার হিসাব নেই। আজিজ এবং বেনজীরের খবর পড়ে মানুষ বিস্মিত। আমরা তো মাত্র অল্প জানি, ভেতরে যে আরও কত কী আছে?

গুণী মানুষরা এখন কারাগারের লোহার খাঁচায় মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ড.ইউনুস বলছেন আমি আধা ঘণ্টার মতো লোহার খাঁচায় ছিলাম। আর দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যক্তি বছরের পর বছর লোহার খাঁচার মধ্যে আবদ্ধ। আজকে ইউনুসরা সম্মানিত নন, এখন সম্মানিত কে? বেনজীর-আজিজ সম্মানিত। কী ব্যাকগ্রাউন্ড এগুলো বলার মতো নয়।

রিজভী বলেন, মানুষের শেষ আশ্রয় বিচার বিভাগের যে স্বাধীনতা, এখন সেটি নেই। বরং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা তারা নিজেরাই সরকারের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। সেটি না হলে যশোরের নোয়াপাড়ার আফরোজা বেগমকে পুলিশ ধরে নিয়ে ফ্যানের সঙ্গে টানিয়ে টর্চার করে মেরে ফেলল, সে নাকি মাদকের ব্যবসা করে, ইয়াবা পেয়েছে। তাকে টর্চার করে মেরে ফেলা হলো, এটার কারণ হচ্ছে দেশে আইনের শাসন নেই। বিচার বিভাগের কাছে মানুষের আশ্রয় নেই।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করলে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতারা প্রমশন পায়।

রিজভী বলেন, নানা অপপ্রচার চালিয়েও জনগণের কাছ থেকে জিয়ার নাম মুছতে পারেনি ক্ষমতাসীনরা। তারা হুমকি-ধমকি দিয়ে আদালতকে ব্যবহার করে ইতিহাসকে কবজা করার চেষ্টা করে।

বিচারক কি আইনের শাসন মানেন, নাকি শেখ হাসিনার নির্দেশনা মানেন প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ছাত্রলীগ-আওয়ামী লীগের লোকদের ডেকে এনে বিচারক বানানো হয়। নিম্ন আদালত হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করে বিএনপির নেতাকর্মীদের কারাগারে পাঠান। বিচার বিভাগের কাছে মানুষের শেষ আশ্রয় পাওয়ার সম্ভাবনা নেই।

রিজভী বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান জনগণের প্রতি যে স্থায়ী ছাপ রেখে গেছেন এটি শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নেতারা হাজার রকম চেষ্টা করেও মুছে ফেলতে পারেনি। তিনি যা অর্জন করেছেন তা আওয়ামী লীগ নেতাদের নেই। ওদের নেই বলেই, ওরা অপপ্রচার করে।

স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান- এ তথ্য জানিয়ে রিজভী বলেন, একথা তো আওয়ামী লীগের অনেক মন্ত্রী-নেতা স্বীকার করেছেন। এটাকে অস্বীকার করবে কি করে? জোর করে ওরা এটাকে মিথ্যা বানানোর চেষ্টা করে। ধমকি দিয়ে হুমকি দিয়ে আদালতকে কব্জায় নিয়ে এরা ইতিহাস বিকৃত করে। এভাবে করলে কি আসল ইতিহাস ভুলিয়ে দেয়া যাবে? কখনো যাবে না, যায়নি, এটা কখনো ভবিষ্যতে সম্ভব হবে না।

সংগঠনের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব মুজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন- বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু প্রমুখ।