পাবনা জেলা প্রতিনিধি :
পাবনার চাটমোহর উপজেলার মামাখালী গ্রামের তিন কিলোমিটার কাঁচা মাটির রাস্তা। সামান্য বৃষ্টি হলেই হাঁটু সমান কাঁদা-পানির সৃষ্টি হয়ে এ পথ চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। দীর্ঘদিন ধরে নিচু কাঁচা রাস্তাটি নিয়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন মামাখালীর শত শত মানুষ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, চাটমোহর উপজেলার ছাইকোলা ও নিমাইচড়া দুটি ইউনিয়নের ভেতর মামাখালী গ্রামটির অবস্থান। গ্রামে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ ও শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর বসবাস হলেও যোগাযোগ ব্যবস্থা বেহাল।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চাটমোহর উপজেলা প্রকৌশলী রাকিব হোসেন বলেন, খোঁজখবর নিয়ে রাস্তাটি মেরামত করা হবে।
মামাখালী গ্রামের বাসিন্দারা বলেন, গ্রামের পূর্বপাড়া থেকে বরদানগর পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার কাঁচা সড়কটি গ্রামের বাসিন্দাদের চলাচলের একমাত্র ভরসা। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুম এলে সড়কটির বেহাল দশায় চরম দুর্ভোগের ভেতর দিয়ে চলাচল করতে হয় তাদের। বর্ষার পানিতে রাস্তাটি তলিয়ে গেলে তিন-চার মাস যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকতে হয়।
তখন হেঁটে চলাও দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে। যাদের সামর্থ্য আছে তারাও নৌকায় যাতায়াত করেন। স্কুলগামী শিশুরা প্রতিদিন কাঁদা-পানি মাড়িয়ে যাতায়াত করেন।
মামাখালী গ্রামবাসীর অভিযোগ, গ্রামটির একাংশ ছাইকোলা ইউনিয়নের ও অপর অংশ নিমাইচড়া ইউনিয়নে হওয়ার কারণেই উন্নয়নের ছোঁয়া লাগে না। ফলে পুরো এলাকাটি বছরের পর বছর থেকে সুবিধাবঞ্চিত। মামাখালী পূর্বপাড়া থেকে বরদানগর পর্যন্ত তিন কিলোমিটার রাস্তাটি পাকা করা হলে তাদের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে। তারা চলাচল করে সাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন।
মামাখালী গ্রামের বাসিন্দা ৭০ বছর বয়সী সিরাজুল ইসলাম প্রামাণিক বলেন, জন্মের পর থেকেই এই গ্রামের রাস্তার এমন অবস্থা দেখে আসছি। গবাদি পশু নিয়ে বর্ষা মৌসুমে আমাদের ঘরবন্দি হয়ে থাকতে হয়।
গৃহবধূ রহিমা খাতুন বলছিলেন, আমার ছোট ছেলেকে এই পথ ধরে স্কুলে যেতে প্রতিদিন ভোগান্তি পোহাতে হয়। প্রায়ই কাঁদায় পড়ে বই-খাতা ভিজে যায়। তখন খুব কষ্ট লাগে। আমরা কি এই কষ্ট নিয়েই বাঁচবো? আমাদের এলাকার উন্নয়ন কি কখনো হবে না?
৫০ বছর বয়সী সোলায়মান বলেন, প্রতিবার নির্বাচনের সময় সবাই আসে রাস্তা পাকা করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে। নির্বাচিত হওয়ার পর আর কেউ ফিরে তাকায় না গ্রামটির দিকে।
বনমালীনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক বাসনা রানী মণ্ডল বলেন, বর্ষাকালে কাঁদা হাঁটু পর্যন্ত চলে আসে। তখন রাস্তা-ঘাট এতটাই পিচ্ছিল হয়ে যায় যে, শিশুরা স্কুলে যাতায়াতের সময় বইখাতা নষ্ট করে ফেলে। শিক্ষকদেরও বর্ষা মৌসমে চলাচল করতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
চাটমোহর উপজেলার প্রকৌশলী মো. রাকিব হোসেন বলেন, আমি এই স্টেশনে নতুন। আমার জানা ছিল না। তাছাড়া আমাদের কাছে কেউ কখনো প্রকল্প নিয়ে আসেনি, তাই রাস্তাটিও মেরামত হয়নি। স্ব উদ্যোগে খোঁজ খবর নিয়ে রাস্তাটি মেরামত করা হবে।