নিজস্ব প্রতিবেদক :
সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে টানা হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচি দিয়ে যাচ্ছে বিএনপি। চলমান এ আন্দোলনের অংশ হিসেবে বুধবার (২০ ডিসেম্বর) নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবে দলটি।
মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে এক ভার্চ্যুয়াল ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, বুধবার (২০ ডিসেম্বর) বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান চলমান আন্দোলনের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দেবেন।
রিজভী বলেন, গোটা জাতি এক ভয়ংকর অন্ধকার জঙ্গলে বাস করছে। যেখানে চারিদিকে ঘিরে আছে ভয় ও আতঙ্কের ব্যারিকেড। এ ভয় ও আতঙ্ক তৈরি করাই হয়েছে একদলীয় নির্বাচনকে সুসম্পন্ন করা, ভোটারবিহীন নির্বাচনকে নিশ্চিত করা। এ ব্যাপারে শেখ হাসিনা একেবারেই বেপরোয়া। উনি ভাবছেন রাশিয়া আছে, ভারত আছে আমার আবার ভয় কিসের? রাশিয়া ও ভারত আমাকে সমর্থন দিলে আমার কিসের ভোট সেন্টার লাগবে, কিসের ভোটার লাগবে, কিসের স্বচ্ছ নির্বাচন লাগবে?
রিজভী বলেন, তাদের (রাশিয়া ও ভারত) কর্তা ব্যক্তিরা মাঝে-মধ্যে স্টেটমেন্ট দিচ্ছেন। তা তারা দেবেনই। বাংলাদেশে গণতন্ত্র থাকুক বা না থাকুকৃ এতে তো ভারতের কোনো কিছু যায় আসে না, আর রাশিয়ার তো মোটেও যায় আসে না। নিজের দেশে গণতন্ত্রের বিশাল ঘাটতি একনায়তন্ত্রের শাসন। তাদের সমর্থনে শেখ হাসিনার আজকে পোয়া-বারো।
ক্ষমতা আঁকড়ে থাকতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মধ্যযুগীয় রাজা-বাদশার সমানও আইন মানেন না অভিযোগ করে রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, রাষ্ট্র চালাতে গেলে কিছু আইন প্রয়োজন, কিন্তু দেড় দশক ধরে শেখ হাসিনা তা কখনোই গুরুত্ব দেননি।
রিজভী বলেন, এক মানবতা ও গণবিরোধী সরকার রাষ্ট্রক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রেখেছে। তারা জনগণের দাবি-আকাঙ্ক্ষায় কর্ণপাত করে না। জোর করে ক্ষমতা ধরে আছে বলেই তারা জনগণের ওপর ক্ষমতার অপব্যবহার করছে।
তিনি বলেন, সরকার আবারও একতরফা নির্বাচনের পথে হাঁটছে। দেশ-বিদেশ থেকে অনেকে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আহ্বান জানালেও প্রধানমন্ত্রীসহ আওয়ামী লীগ নেতাদের মুখ থেকে সে কথা বের হয় না। তারা উন্নয়নের ফুলঝুরি ঝরালেও অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলে না। জনগণের নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা দিতে চায় না।
রিজভী বলেন, রাষ্ট্র চালাতে কিছু আইন আছে, কিন্তু শেখ হাসিনা সেটা কখনোই গুরুত্ব দেন না। দেড় দশক ধরে এটাকে তিনি পাত্তা দিচ্ছেন না। মধ্যযুগীয় রাজা-বাদশারা যতটুকু আইন মানতেন, তিনি তা-ও মানেন না। তার দরকার ক্ষমতা। তিনি নিজেই বলেছেন তার আরও ক্ষমতা দরকার। নির্বাচন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন সবাই তার ক্রীতদাস। সবাইকে ক্রীতদাস বানিয়ে জনগণের ওপর ছড়ি ঘোরাচ্ছেন। এমন বিপন্ন সময় এ দেশের মানুষ কখনো দেখেছে বলে আমার জানা নেই।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, গণমাধ্যমে খবর এসেছে যে নৌকায় যারা ভোট দেবে না তাদের এলাকায় থাকতে দেয়া হবে না। শেখ হাসিনার মনবাসনা পূরণের জন্য তিনি সবাইকে লেলিয়ে দিয়েছেন।
দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হামলা-মামলার বিবরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে বিএনপি ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের ২২৫ জনের বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেফতার এবং আটটি মামলায় ৭৯৫ জনের অধিক নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।